

রবিবার ● ২৭ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » কৃষি » লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট : জোড়াতালি দিয়ে চলছে পাঠদান
লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট : জোড়াতালি দিয়ে চলছে পাঠদান
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: (১২ ভাদ্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৪০মি.) বান্দরবানের লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। প্রতিষ্ঠানে ২৭জন শিক্ষকের পদ থাকলেও শিক্ষক রয়েছে মাত্র ৮জন। এই ৮জন শিক্ষক দিয়ে ৬ থেকে ৭শত শিক্ষার্থীকে পাঠদান দিতে হচ্ছে। শিক্ষক সংকট নিয়ে এলাকাবাসি অসংখ্যবার মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করলেও কোন প্রতিকার না পেয়ে হতাশ অভিভাবক মহল ও শিার্থীরা।
লামায় মাধ্যমিক পর্যায়ের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শুধু শিক্ষক সংকটের কারণে হারাতে বসেছে তার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস।
জানা গেছে, লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৭জন শিকের পদ থাকলেও কর্মরত আছে মাত্র ৮জন। শূন্য পদ রয়েছে ১৯টি। এই স্কুলে বর্তমানে ১জন প্রধান শিক্ষক সহ গণিত বিভাগ, ভৌতবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞানে ২জন করে, বাংলায় ৩জন, ইংরেজির ৪ জন, ব্যবসায়ী শিক্ষায় ১, সামাজিক বিজ্ঞান, ভূগোল, কৃষি ও চারুকলা বিভাগে ১জন করে মোট ১৯জন শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে।
বিদ্যালয়টিতে কোনমতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে পাঠদান।
স্থানীয় অভিভাবকরা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট থাকায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নামেই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কিন্তু লেখাপড়ার গুনগত মানের দিক দিয়ে বেসরকারি বিদ্যালয়ের চেয়েও অনেক পিছিয়ে। বিদ্যালয়ের কর্মরত কয়েকজন শিক্ষক সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, শিক্ষক সংকটের কারণে বিদ্যালয়ে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। প্রতিদিন একজন শিক্ষকের পর পর একাধিক ক্লাস নিতে হয়। শিক্ষক তাহার নির্ধারিত হোম ওয়ার্ক গুলো যথাযথ ভাবে পুরন করতে না পারার কারনে শ্রেণীকক্ষে এসে ঠিকমত পাঠদান করতে পারেন না, এতে শিক্ষার মান স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়। যার প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের উপর। যেভাবেই হোক দ্রুত শূন্য শিকদের পদগুলো পূর্ণ করার জন্য জেলা পরিষদ সহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি দাবী জানান তারা। লামা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস শিক্ষক সংকটের কথা স্বীকার করে নিয়ে সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা পরিষদের সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত এই সংকট নিরসন করা হবে।
এদিকে ২০১৪ সালের ২৬ মে সরকারের সাথে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চুক্তি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যক্রম হস্তান্তরিত হয়। তখনও লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট জনিত কারণে শিক্ষা কার্যক্রমের নাজুক পরিস্থিতি দেখা মেলে।
অপরদিকে যখন তখন শিক্ষক বদলির কারণে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন লামার সচেতন মহল। বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সোমা রাণী বড়ুয়া শিক্ষক সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণের বিষয়টি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও আঞ্চলিক উপ-পরিচালক মহোদয় অবগত আছেন। তবে বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের অন্তত তিন বছর বাধ্যতামূলক একই কর্মস্থলে রাখা গেলে এ সংকট কাটিয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উপ-পরিচালক গাজী গোলাম মাওলা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, ‘শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় স্বাভাবিকভাবে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া স্বাভাবিক। আমরা বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন মহলের সাথে কথা বলেছি। ইতিমধ্যে লামার কোন বিদ্যালয়ে কত পদ শূন্য রয়েছে সেই তালিকাও পাঠানো হয়েছে।
এদিকে অভিভাবক ও সচেতন মহল তাহাদের ছেলে মেয়েদের স্বাভাবিক শিক্ষা ব্যাবস্থা নিয়ে সংকিত হয়ে পড়েছেন। তাহারা সরকারের কাছে বিনীত আরজ জানাচ্ছেন, অতি তারাতারি লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে স্বভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা হোক।