বুধবার ● ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » আসছে রোহিঙ্গা: বাড়ছে বস্তির আয়তন
আসছে রোহিঙ্গা: বাড়ছে বস্তির আয়তন
উখিয়া প্রতিনিধি :: (২২ ভাদ্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.২৯মি.) সীমান্ত পেরিয়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা দখল করে নিচ্ছে বাংলাদেশের শত শত একর সরকারী রিজার্ভ বনভুমি ও সামাজিক বনায়ন। স্থানীয় দালালের সহায়তায় গিলে খাচ্ছে এসব বনভুমি। কেটে সাবাড় করছে সৃজিত সামাজিক বনায়ন। দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এসব রোহিঙ্গা বস্তির আয়তন। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধির প্রত্যক্ষ মদদে গড়ে তোলা হচ্ছে একের পর এক এসব বস্তি।
বিশেষ করে উখিয়ার বালুখালী, ঢালার মুখ, থাইনখালী হাকিম পাড়া, তেলখোলা, টিভি টাওয়ারের পাশে সহ এলাকায় গড়ে ঊঠছে এসব বস্তি। এ বিষয়ে নিরব ভূমিকা পালন করছে বনবিটের কর্মীরা।
রোহিঙ্গাদের দখলে শুধু সামাজিক বনায়ন নয় বসতভিটার গাছপালাও রাতের আধাঁরে কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগেরও শেষ নেই। সরকারের জায়গা হলেও জমিদারী করছে পাবলিকরা। এসব বস্তিতে দালাল ও প্রভাবশালী মহল নতুন রোহিঙ্গা বস্তির প্রতি গৃহের পরিবারভিত্তিক এককালীন অফেরৎযোগ্য ২/৩ হাজার টাকা আদায় সহ পরবর্তীতে মাসোহারা আদায়ের কথা বলছে। এ সিন্ডিকেটে রয়েছে ৪০জন করে গ্রামবাসী ও ১৫০জন রোহিঙ্গা রয়েছে বলে জানা যায়।
জাতিসংঘের হিসাব মতে, মিয়ানমারের নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নিয়েছে ৯০ হাজার রোহিঙ্গা। স্থানীয়দের মতে যা ৩ লাখ ছাড়িয়েছে।
এরপরও প্রতিদিন শতশত রোহিঙ্গা টেকনাফের লেদা, নয়াপাড়া, শামলাপুর ও উখিয়ার কুতুপালং ছাড়াও নতুন করে বালুখালী, মাইন্যার ঘোনা, হাকিম পাড়া, তাজিনামার খোলা এলাকার বনভূমি দখল করে বসতি স্থাপন করছে।
উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য সম্ভব হয়নি। সহকারী বনসংরক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলে ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেয়।
রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, বনভুমি দখলের কথা স্বীকার করে তিনি সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, সরকার মানবিক দিক বিবেচনা করে বর্ডার শিথীল করায় রোহিঙ্গা এসেছে। আশ্রীত রোহিঙ্গাদের সরকার নিয়ন্ত্রণের সুবিধার্থে ৫০ একর জায়গা নির্ধারণ করেছে। রাজনৈতিক নেতা, ইউপি সদস্য রোহিঙ্গা বসতি গড়ে উঠায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তিনি বলেন, এরা মূলত: দালাল। যেহেতু তারা দেশের স্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত। তাদের কোন পরিচয় নেই। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে রোহিঙ্গাদের এক জায়গায় রাখা সহ বনভুমি, পাহাড় ধ্বংসে সহায়তাকারী দালালদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানান তিনি।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ.কে.এম জাহাঙ্গীর সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে সার্বিক পরিস্থিতি ভারী হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে ঠিকমত এলাকার ছেলে-মেয়ে স্কুল কলেজে যেতে পারছে না। তিনি আরো বলেন ১৯৭৮, ১৯৯০, ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা সমস্যা দেখেছি। ওরা এদেশে আসলে আর যেতে চায় না। ফলে সামাজিক অবক্ষয় দিনদিন চরম আকার ধারণ করেছে । তাঁর মতে, ঘুমধুম সীমান্তে ৩৬ মাইল বর্ডার জুড়ে ৫০ হাজার এবং পুরমা নদীর পার্শ্ববর্তী আরো ২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসার জন্য অবস্থান করছে বলে জানান তিনি।