বুধবার ● ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » সম্পদ নিয়ে বিরোধেই খুন হন শিক্ষিকা নার্গিস
সম্পদ নিয়ে বিরোধেই খুন হন শিক্ষিকা নার্গিস
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (২২ ভাদ্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৪৭মি) সম্পদের ভাগবাটোয়ার নিয়ে বিরোধের জেরেই খুন হন নরসিংদীর ঘোড়াদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নার্গিস বেগম (৫৪)।
তার পরিবারের অভিযোগ, স্বামী আনসার উল্লাহর সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার জন্যই দুই ছেলে ও এক মেয়ের মা নার্গিসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
৩ সেপ্টেম্বর রবিবার রাতে শিক্ষিকার ভাই আহমদ হোসেন ওরফে মানিক জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন। তার অভিযোগ, আগের স্ত্রী টিংকু বেগম (৫৭) তার মেয়ে ও মেয়ের জামাতা আলোর সঙ্গে আনসার উল্লাহর ফ্ল্যাট, বাড়ি, জায়গা-সম্পত্তি এবং তার অবসরকালীন ভাতা নিয়ে নিহত স্ত্রী নার্গিস বেগমের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে ঢাকার নাখালপাড়ার বাসায় বহুবার বিচার সালিশও হয়। এমনকি এর আগে নার্গিস বেগমকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছিল।
মামলার বাদী থানায় অভিযোগে উল্লেখ করে বলেছেন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টিলিজেন্স (এনএসআই) এর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনসার উল্লাহ আগে যে বিয়ে করেছিলেন তা তারা জানতেন না। আগের ঘরে আনসার নার্গিস বেগমকে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছিল।
মামলার বাদী থানায় অভিযোগে উল্লেখ করে বলেছেন, এনএসআইর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনসার উল্লাহ আগে যে বিয়ে করেছিলেন তা তারা জানতেন না। আগের ঘরে আনসার উল্লাহর আসমা নুসরাত বাবলী (৩২) ও মান্নী (৭) নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। নার্গিস বেগম ও তার সন্তানদের সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার জন্যই পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে আসছিল। বহুবার প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হয় তাকে।
জানতে চাইলে নিহতের ভাই মানিক জানান, তার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গুম করতেই লাশ ড্রামে ভরে গাজীপুরে ফেলে দিয়ে আসে। তিনি এ ঘটনায় নার্গিসের স্বামী আনসার উল্লাহ প্রথম স্ত্রী টিংকু বেগম, তার মেয়ে বাবলী ও মেয়ের স্বামীকে দায়ী করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জয়দেবপুর থানার এসআই মন্তোষ চন্দ্র দাস জানান, কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা যায়নি। গোটা বিষয়টি তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। এখনই এ নিয়ে বলার মতো কিছু পাইনি।
উল্লেখ্য, ৩১ আগস্ট বৃহস্পতিবার ভোরে আত্মীয়ের বাসায় যাওয়ার কথা বলে ঢাকার বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন নরসিংদীর ঘোড়াদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা নার্গিস বেগম (৫৪)। স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে তার কোন সন্ধান পায় নি।
নিখোঁজের দুইদিন পর ঈদের দিন ২ সেপ্টেম্বর শনিবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভোগড়া পেয়ারা বাগানের কাছ থেকে ঢাকা-বাইপাস সড়কের পাশে কাঁচা তরকারীর কাওরান বাজার আড়তের গেইটের সামনে ঢাকনা দিয়ে আটকানো প্লাস্টিকের একটি ড্রাম পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসি। ওই ড্রাম থেকে পঁচা দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং ড্রামের ভিতর থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে। লাশটিতে পঁচন ধরেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অন্ততঃ ২/৩ দিন আগে তাকে হত্যার পর লাশ ড্রামে ভরে সেখানে ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা। নিহতের বুকে ও পেটে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে স্বজনরা নিহতের লাশ সনাক্ত করেন।
এঘটনায় রবিবার রাতে নিহতের ভাই গাজীপুরের জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।