মঙ্গলবার ● ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » তথ্যপ্রযুক্তি » তথ্য প্রযুক্তির দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে ডাকবক্স
তথ্য প্রযুক্তির দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে ডাকবক্স
মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (২৮ ভাদ্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৪৩মি.) সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির দাপটে প্রতিক্ষণে প্রতিমুহুর্তে হারিয়ে যাচ্ছে সেই পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ডাকঘরের “ডাকবক্স”। এখন আর আগের মতো ডাক অফিসে লোকজনের আনাগোনা দেখা যায় না।
জানা যায়, ফেলে আসা দিন গুলোতে বার্তা প্রেরক ও মনের ভাব আদান প্রদান ক্ষেত্রে ডাক বিভাগের বিষয়টি অতি গুরুত্বের সাথে উচ্চারিত হয়েছিল। আশির দশক পর্যন্ত যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি এবং জরুরী বার্তার জন্য টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন। একমাত্র জেলা শহর ব্যতিত গ্রামীন জনপদে টেলিফোনের ব্যবহার অত্যন্ত সীমিত। পরিবার কিংবা প্রিয়জনের একটির জন্য অপেক্ষা হয়ে থাকতেন এলাকার প্রবাসীরা। এখন আর সেই দিন নেই। নানা তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নে দিন বদলের ন্যায় পাল্টে গেছে সবকিছু। এখন এক নিমিশেষে খবরা খবর পৌছে যাচ্ছে ঘরে বসে থেকে বিশ্বের যেকোন প্রান্তে। প্রতি সেকেন্ডে সেকেন্ডে আলাপ চলছে অত্যাধুনিক মোবাইলে। চোখের পলকে খবর পৌছে যাচ্ছে কম্পিউটারাইজম সিস্টেম তথ্য প্রযুক্তির আরেক যাত্রা ই-মেইলে। ডিজিটাল যুগের একদাপ পরিবর্তনের ফলে অচল হয়ে গেছে ডাকে চিঠি প্রেরণ ও টেলিগ্রাফের যুগ। তাই ডাক বিভাগের ধরণ আর কাজের পরিধির মধ্যে এসেছে নানা পরিবর্তন। কালের বিবর্তনে হয়তো পরিবর্তন এসে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির আদল ধারণ করবে। তখন হয়তো ডাকঘরের আভিধানিক অর্থ এবং কাজের ধরণ ও পাল্টে যাবে। প্রযুক্তির গ্যাড়াকলে পড়ে নানা কারনে এই দিবস অচিরেই হারিয়ে যাচ্ছে উপজেলার কাছ থেকে।
১৮৬৩ সালে আমেরিকায় ডাক বিভাগের প্রবর্তন ঘটলেও ১৮৭৪ সাল থেকে এসে গঠিত হয় জেনারেল পোষ্টাল ইউনিয়ন। ইউনির্ভাসেল পোষ্টাল ইউনিয়ন গড়ে তোলার লক্ষে বিশ্ব ডাক দিবস পালিত হলেও বাংলাদেশে ডাক বিভাগের চিত্র এখন আর পুর্বের মত নেই।
আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি কারনে এবং বিভিন্ন কুরিয়ার সাভির্সের দাপটে ডাক বিভাগের আগের ব্যস্ততা আর নেই। দেশ বিদেশ থেকে চিঠি পত্রের আদান প্রদান এবং টাকা প্রেরনের সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম ছিল ডাক বিভাগ। সে সময়ে ডাক বিভাগের কদর ছিল অন্য রকম। এখন কালের আবর্তে অন্যতম তথ্য প্রযুক্তির ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে সেই পুরোনো ডাক যোগাযোগ। দূরত্ব আর এলাকার ধরণের উপর নির্ভর করত ডাক যোগে কোন জিনিস কয় দিনে পৌঁছবে। এখন সে অপেক্ষা আর করতে হয়না। অনায়াসে পৌঁছে যায় প্রিয়জন কিংবা শুভাখাংক্ষিদের কাছে খবরাখবর বা অন্যান্য জিনিস পত্র। কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য যে, উপজেলার উপ ডাকঘরসহ ইউনিয়ন ভিত্তিক ডাকঘরে অতীতে যে ভাবে ডাক বক্সে চিঠি পত্র আদান প্রদান করা হত, এখন সে তা তথ্য প্রযুক্তির প্রবাহে প্রতিক্ষণে প্রতি মুহুর্তে হারিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমান সময়ে হরেক রকমের মোবাইল সহ অত্যাধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ফলে এলাকা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের সহজ-সরল নারী পুরুষেরা সেই চিঠি পত্র আদান প্রদান করতে ডাক বিভাগে আসতে দেখা যায়না। যার ফলে ডাকঘরের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির পরিবর্তে কমতে দেখা যাচ্ছে বলেও ধারনা করেন কৌতহলী লোকজন। চিরচেনা ঐতিহ্যবাহী ডাকঘরের “ডাক বক্স” দিন বদলের সনদ বাস্তবায়নের কালে ডিজিটাল যুগে অনায়াসে হারিয়ে যাচ্ছে সভ্য সমাজের কাছ থেকে।