শনিবার ● ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » ধর্ম » ময়মনসিংহে ৭৩০টি পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পীরা: পুলিশের আ্যাকশন কমিটি
ময়মনসিংহে ৭৩০টি পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পীরা: পুলিশের আ্যাকশন কমিটি
ময়মনসিংহ অফিস :: (১ আশ্বিন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.১৪মি.) ময়মনসিংহের ১৩টি উপজেলায় ও একটি থানায় ৭৩০টি পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা। প্রতিটি মন্ডপে প্রতিমা নির্মাণের পাশাপাশি চলছে সর্বজনীন স্থায়ী মন্দিরগুলোতে সাজসজ্জা এবং অস্থায়ী মন্ডপগুলোতে চলছে সুদৃশ্য বিশাল প্যান্ডেল, তোরণ এবং বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জার কাজ। পূজা উদযাপনকে নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে আ্যাকশন কমিটি।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে দেবীর আগমন ঘিরে দিন রাত পরিশ্রম করে মৃৎ শিল্পীরা তাদের নিপুন হাতের ছোঁয়ায় তৈরি করছেন একেকটি অসাধারণ সুন্দর প্রতিমা।
ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন মন্দির প্রাঙ্গনে নানা আকার আর নানা ঢংয়ের দুর্গা দেবীর মূর্তি বানানো হচ্ছে। এই উৎসবকে সামনে রেখে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতিও পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
মৃৎ শিল্পের কারিগর এসব প্রতিমা শিল্পীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাঁদামাটি, খড়, কাঠ, বাঁশ আর সুতলি দিয়ে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। প্রতিমা শিল্পীরা জানান,মাটির কাজ শেষ হলেই শুরু হবে রং তুলির আঁচড়। দেবী দুর্গাসহ প্রতিমাগুলোকে মনোমুগ্ধকর অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে ও নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছেন ওই শিল্পীরা।
ময়মনসিংহ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী শংকর সাহা সিএইচটি মিডিয়াকে জানিয়েছেন, এ বছর জেলার ১৩টি উপজেলায় ও একটি থানায় সর্বমোট ৭৩০টি পূজা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নগরীতে ৫৪টি ও বিভিন্ন স্থানে ৬৭৬টি পূজা বাকী ১৩টি উপজেলা, একটি থানা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের মন্ডপগুলোতে পূজা উদযাপন করা হবে।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় মৃৎ শিল্পী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কারিগররা ময়মমসিংহে এসে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। দুর্গা ছাড়াও লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, পেঁচা, হাঁস ও সর্পসহ প্রায় ১২টি মূর্তি তৈরি হচ্ছে নিপুন হাতে। প্রতিমা শিল্পীরা ছাড়াও বর্তমানে সকল পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে তিনি জানান।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে বেলতলায় ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হবে মুল দেবী বন্দনা। এ অনুষ্ঠান ৫ দিনব্যাপী চলবে। ৩০ সেপ্টেম্বর মহাদশমীর মধ্যদিয়ে প্রতিমা বিসর্জন শেষ হবে।
দূর্গা পূজা সার্বজনীনভাবে প্রতি বছর উদযাপিত হয়। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে এ মিলনমেলায় সকলেই সহযোগিতাও করেন। এবারও প্রশাসনের সহায়তায় দুর্গাপূজাও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হবে বলে মনে করেন শংকর সাহা।
ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম এ ব্যাপারে সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন , পূজামন্ডপে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজা নিরাপদ ও নির্বিঘেœ উদযাপনের লক্ষ্যে জেলাব্যাপী ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশের পক্ষ থেকে আ্যাকশন টিম গঠন করা হয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তার কারণে পূজামন্ডপে বিপুল সংখ্যক পূজারির সমাগম ঘটবে বলে আশা করছি। সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে তারা যাতে পূজা উদযাপন করতে পারে সেজন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পূজা উদযাপন কমিটি এবং প্রতিটি থানায় চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রতিমা তৈরিকালীন সময়ে যাতে প্রতিমার কোন ক্ষতি না হয় সেজন্য আয়োজক কমিটিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।