রবিবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » থামছেনা রোহিঙ্গা শরণার্থীর স্রোত
থামছেনা রোহিঙ্গা শরণার্থীর স্রোত
উখিয়া থেকে ফিরে নয়ন বড়ুয়া :: (২ আশ্বিন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৪৩মি.) থামছেনা রোহিঙ্গা শরণার্থীর স্রোত। প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে এসে ভিড় করছে উখিয়াতে ।
সরকার উখিয়ার কুতুপালং পর্যন্ত থাকার জন্য সীমানা নির্ধারন করে দিলেও কিছু কিছু রোহিঙ্গা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে দেশের আনাচে কানাচে। মাঝে মাঝে কিছু আটক হলেও বেশির ভাগ রোহিঙ্গা শরণার্থী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে, যা বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলার জন্য চরম হুমকি স্বরূপ। সরকারী এবং বেসরকারী ভাবে ৪ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী অনুপ্রবেশের কথা বলা হলেও সরেজমিনে ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় ৬ লাখ এর অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।
এখনও প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে আর প্রতিদিন গড়ে উঠছে নতুন নতুন বসতি, যা অল্পদিনের মধ্যে ৮ লাখ অতিক্রম করবে বলে ধারনা করছে। প্রশাসন থেকে রাস্তার দু’পাশে বসতি না করার নির্দেশ দিলেও ত্রাণের গাড়ি আসলে দ্রুত যাওয়ার জন্য সেই নির্দেশ মানছেনা অনেকে।
সরকারি ও বেসরকারীভাবে এমনকি ব্যাক্তিগত উদ্যেগেও ত্রাণ বিতরণ হচ্ছে তারপরও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
এরই মধ্যে বিরুপ প্রভার পড়েছে পরিবেশ ভারসাম্যে।
উখিয়া কুতুপালং সহ বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় কেটে ছোট ছোট খুপড়ি বানিয়ে থাকার জন্য ঘর বানানো হলেও মলমূত্র ত্যাগ করার জন্য কোন বাথরুম নেই যার ফলে খোলা জায়গায় এতগুলো মানুষ মলমূত্র ত্যাগ করার কারণে চারিদেকে শুধু ময়লা আর দূগন্ধ, মুক্তভাবে শ্বাস নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মাঝে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ দেখা গেলেও নেই তেমন কোন যুবক। শক্তি সামর্থ্য যাদের আছে তারা রয়ে গেছে মিয়ানমারে। এখানে আসা রোহিঙ্গারা কেউ কেউ মারা যাওয়ার কথা বললেও আবার অনেকে বলছেন মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার জন্য রয়ে গেছেন এরা।
হঠাৎ করে এতোগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থী আসার কারনে বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গায় এখনও প্রভাব না পড়লেও কক্সবাজার জেলায় এর বিরুপ প্রভাব পড়েছে। বাজারে নিত্য পণ্য দাম বেড়েছে বহুগুন। রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসার সময় গৃহ পালিত পশু গরু, ছাগল ও মহিষ সাথে করে নিয়ে আসায় এগুলো অনেক কম দামে পাওয়া যায় এখানে। যার জন্য অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ীর আবির্ভাব হয়েছে এই এলাকায়। রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্থের মানুষের মধ্যে শুধু আবেগ সহানুভূতি থাকলেও কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দাদের সহানুভূতির সাথে সাথে আছে আতংকও।
স্থানীয়দের অভিযোগ রোহিঙ্গারা দেখতে বাংলাদেশিদের মতো এবং ভাষা চট্টগ্রামের ভাষার সাথে মিল থাকলেও এদের স্বভাব চরিত্র খুব উগ্র। ইয়াবা ব্যবসা থেকে শুরু করে যত রকমের খারাপ কাজ আছে সবগুলোর সাথে রোহিঙ্গারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।
যে হারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে তাতে স্থানীয় বাংলাদেশীরা হয়ে পড়েছে সংখ্যালঘু। উখিয়ায় স্থানীয় বাংলাদেশীর সংখ্যা দেড় লাখের মতো আর মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা ৬ লাখের ও বেশি, এদের যদি ভবিষ্যতে ফেরত পাঠানো সম্ভব না হয় তাহলে উখিয়ায় স্থানীয়দের থাকা মুশকিল হয়ে পড়বে।