মঙ্গলবার ● ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » রাজনীতি » সিলেট-১ আসনে আ’লীগে একাধিক, বিএনপি’র একক প্রার্থী
সিলেট-১ আসনে আ’লীগে একাধিক, বিএনপি’র একক প্রার্থী
হাফিজুল ইসলাম লস্কর,সিলেট প্রতিনিধি :: (৪ আশ্বিন ১৪২৪ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৫৯মি.) বাংলাদেশের সংসদীয় রাজনীতিতে সবচেয় মর্যাদাপূর্ণ আসন হিসেবে পরিচিত সিলেট-১ (সিটি করপোরেশন-সদর)। সংসদীয় নির্বাচনে ম্যাজিক আসন খ্যাত এ আসনে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হন, সে দলই নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করে।
এজন্য এ আসনটিতে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ থাকে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর। এ আসনে জনগনের নিকট জনপ্রিয়, যোগ্য ও শক্তিশালী একক প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা থাকে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলোচিত এই আসন আওয়ামী লীগ থেকে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিপরীতে এখন পর্যন্ত একক প্রার্থী নিয়ে ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে বিএনপি। এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে স্থানীয় কেউ এ আসনে মনোয়ন পাওয়ার দৌঁড়ে কেউ না থাকলেও জাতীয় পার্টি চেয়্যারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ’র নির্বাচনের কিছুটা গুঞ্জন রয়েছে।
সিলেট-১ আসনের মধ্যে থাকা হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরান (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ ব্যক্তিরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।
রাজনীতিতে তাই এ আসনটি সর্বাধিক গুরুত্ব বহন করে। মর্যাদাপূর্ণ এই আসনের বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা মুহিত বিগত সময়ে একাধিকবার বলেছেন, তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। তবে সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট-১ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচন করল আমিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো। এছাড়া অতিসম্প্রতি সিলেটে একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবারও নির্বাচন করা আশাবাদ ব্যক্ত করেন অর্থমন্ত্রী।
এদিকে, সিলেট-১ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. একে মোমেন। নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করার চেষ্টায় তিনি যোগাযোগ রাখছেন স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে। নিয়মি অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে।
এছাড়া এ আসনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। ইতিমধ্যে কয়েকবার তিনি এ আসনে নির্বাচন করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগীয় তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে তিনি এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন। এ তিন জন ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর হবিগঞ্জের ড. ফরাসউদ্দিন ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার সিলেটের কাজীটুলার বাসিন্দা ছহুল হোসাইনও সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন শেষমুহুর্তে এ দুজনের যে কাউকে প্রার্থী করে ‘চমক’ দেখাতে পারে আওয়ামী লীগ।
সিলেট-১ আসনে এখনও পর্যন্ত বিএনপি থেকে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির প্রার্থী হিসেবে আলোচিত। সিলেট-১ আসনের প্রাক্তন সাংসদ খন্দকার আবদু মালিকের ছেলে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বর্তমানে নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অবশ্য এ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবীনেরও নামও আলোচনায় ছিল। তবে তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ায় তাকে নিয়ে বর্তমানে তেমন একটা আলোচনা নেই।
খন্দকার মুক্তাদির দীর্ঘদিন ধরে দলকে চাঙা ও ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া তার সামাজিক কর্মকান্ডও সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে।
এদিকে, জাতীয় পার্টির স্থানীয় পর্যায়ের কোনো নেতা সিলেট-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার দৌড়ে নেই। তবে দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ একাধিকবার সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। এমনকি সিলেটকে ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ উল্লেখ করে এখানে নির্বাচন করার প্রত্যাশা তাঁর মুখে শোনা গেছে। এজন্য জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন, এরশাদই সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হতে পারেন। এরশাদ প্রার্থী না হলে সিলেট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ও এরশাদের সাবেক উপদেষ্টা বাবরুল হোসেন বাবুল এ আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন বলে কিছুটা গুঞ্জন রয়েছে।