সোমবার ● ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক এবং কলাপাড়া ইউএনও’র বিরুদ্ধে মামলা
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক এবং কলাপাড়া ইউএনও’র বিরুদ্ধে মামলা
পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: (১০আশ্বিন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.০৪মি.) পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এবার জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), ইউএনও, এসি ল্যান্ড ও ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কলাপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দীন সোহাগ ও জনৈক রবিন্দ্র নাথ হাওলাদার বাদী হয়ে সম্প্রতি কলাপাড়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত ১০ দিনের মধ্যে বিবাদী গণকে কারন দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন। জানা যায়, পরিবেশ বাদী সংগঠন বেলা’র প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট রিজওয়ানা হাসান গত ২৮ নভেম্বর ২০১৬ চিংগড়িয়া খালের বাঁধ অপসারণ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও খাল হিসাবে চিহ্নিত ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে নাল জমি দেখিয়ে অবৈধ ভাবে বন্দোবস্ত নেয়ার বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৪ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক সহ ১৩ জনকে আইনী নোটিশ প্রদান করার পর অবৈধ দখল উচ্ছেদে কার্যক্রম শুরু করে ভূমি প্রশাসন।
প্রাথমিক পর্যায়ে চিংগড়িয়া খালের এতিমখানা-রহমতপুর অংশের ৩৭ জন অবৈধ দখলদারের তালিকা তৈরী করে ১৭ জনকে উচ্ছেদ নোটিশ প্রদান করে ভূমি প্রশাসন এবং নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে তাদেরকে সরকারী ভূমির অবৈধ দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য বলা হয়। এতে সংক্ষুব্দ হয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ’র সাধারণ সম্পাদক মো.নাসির উদ্দীন সোহাগ এবং চিংগড়িয়া এলাকার জনৈক রবিন্দ্র নাথ হাওলাদার বাদী হয়ে কলাপাড়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে উচ্ছেদ নোটিশ বাতিল পূর্বক বিবাদীগণের প্রতি স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনায় (দে:মো:-১৪৮/২০১৭) মামলা দায়ের করেন। মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০১৭।
এর আগে রবিন্দ্রনাথ হাওলাদার জেএল ৬ নং খেপুপাড়া মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের ৮৪২ নং দাগের ভূমিতে ভূমিহীন সেজে ভূমি অফিসের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ১.৫৫ একর ভূমি, ৭৭৭কে/১৯৮৬-৮৭ নং বন্দোবস্ত কেস মূলে, বন্দোবস্ত লাভ করে চর্চা ম্যাপ, রেন্টল প্রস্তুত করত বিগত ২৩ এপ্রিল ১৯৮৭ তারিখ ৩৪১২ নং কবুলিয়ত রেজিষ্ট্রী লাভ করেন। প্রোক্ত ভূমির বন্দোবস্ত কেস সহ কতেক বন্দোবস্ত কেস বিগত ১৮ অক্টোবর ১৯৯৩ তারিখে এক আদেশ দারা বাতিল করার পর বাদী পক্ষ সহকারী জজ আদালত থেকে ডিক্রী প্রাপ্ত হন। এরপর নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষ আপীল মোকদ্দমা দায়ের করলেও নিম্ন আদালতের ডিক্রী বলবৎ থাকে। প্রভাবশালী রবীন্দ্র নাথ হাওলাদার এরপর প্রোক্ত ভূমি থেকে ৪৪ শতাংশ ভূমি বিগত ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে ৫০৪২ নং পাওয়ার অব এ্যাটর্নী’র মাধ্যমে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দীন সোহাগের নামে ক্ষমতাপত্র প্রদান করেন।
এদিকে পৌরশহরের অভ্যন্তরে প্রবাহিত এতিমখানা, রহমতপুর, অফিস মহল্লা, কুমার পট্টি, নাচনাপাড়া ও চিংগড়িয়া খালের দু’পাড় দখল করে প্রভাবশালীরা শতাধিক স্থাপনা তুলে বহাল তবিয়তে থাকলেও উচ্ছেদ তালিকায় তাদের নাম নেই। পৌরশহরের নতুন বাজারের দু’টি বহুতল ভবনের মধ্যেও সরকারী ১নং খাস খতিয়ানের ভূমি রয়েছে। কিন্তু তারা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না ভূমি প্রশাসন-এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
বেলা’র বরিশাল বিভাগের সমন্বয়কারী মি. লিংকন বায়েন জানান, চিংগড়িয়া খালের উপর বাঁধ দিয়ে এবং ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে বন্দোবস্ত নেয়া হয়েছে। জনস্বার্থে এ বিষয়টি নিয়ে আমরা শীঘ্রই উচ্চ আদালতে যাবো।
এ বিষয়ে সদ্য বিদায়ী কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, পৌরশহরের সকল খালই পর্যায়ক্রমে অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করা হবে। প্রথম পর্যায়ে চিংগড়িয়া খালের অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরী করে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহোদয়ের ১৩/০৮/২০১৭ স্বাক্ষরিত উচ্ছেদ নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। মামলার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান তিনি।