শিরোনাম:
●   বেগম রোকেয়া এ্যাওয়ার্ড পেলেন সাংবাদিক সাব্বির ●   বারইয়ারহাট ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফারুক,সম্পাদক ইউসুফ ●   দীঘিনালায় গলায় ফাঁস দেয়া যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ●   ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মা নিহত, ছেলে আহত ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা বোর্ড ২য় সভা অনুষ্ঠিত ●   রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ●   মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন ●   মানিকছড়িতে ট্রাকের নীচে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু ●   আল ফালাহ ইসলামি একাডেমীর সবক প্রদান অনুষ্ঠান ●   ১১ দফা অবহিতকরণে আত্রাইয়ে আলোচনা সভা ●   পার্বতীপুর রেলওয়ে ইর্য়াডের আম গাছে যুবকের আত্মহত্যা ●   রংধনু ক্লাবের কার্যকরী পরিষদ গঠিত ●   কাউখালী তাহেরিয়া রশিদা সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার সভা ●   পাকুন্দিয়ায় ইয়ুথ পিস অ্যাম্বাসেডর গ্রুপ গঠিত ●   বৈরী আবহাওয়ায় ও শীতের তীব্রতায় বাড়ছে কৃষকের দুশ্চিন্তা ●   কোন হটকারিতায় গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট করা যাবেনা ●   তরফভাইখাঁ সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   মিরসরাইয়ে শীতার্তের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ●   ঈশ্বরগঞ্জে জিয়াউর রহমান স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন ●   লংগদু এস এস সি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরন ●   ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৫ এর মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন সম্ভব ●   হালদা থেকে বিপন্ন গাঙ্গেয় প্রজাতির মৃত ডলফিন উদ্ধার ●   খাগড়াছড়ির আলুটিলায় পর্যটকবাহী বাস উল্টে আহত-২০ ●   পানছড়িতে লোগাং জোন এর অনুদান সামগ্রী প্রদান ●   আত্রাইয়ে কুলি-বেদে সম্প্রদায়ের মাঝে জেলা প্রশাসকের কম্বল বিতরণ ●   চুয়েটে স্থাপত্য বিভাগের ১ম জাতীয় কনফারেন্স শুরু ●   বিজিবির অভিযানে খাগড়াছড়িতে ১২ অনুপ্রবেশকারী আটক ●   ঈশ্বরগঞ্জে জাতীয় প্রবাসী দিবস পালিত ●   কুষ্টিয়ায় বালুঘাট দখল নিতে তাণ্ডব চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ●   রাউজানে বিকাশ প্রতারকের ফাঁদে নারী উদ্যোক্তা তানিয়া
রাঙামাটি, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
মঙ্গলবার ● ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » পাহাড়ে পর্যটন শিল্প : একটি পর্যালোচনা
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » পাহাড়ে পর্যটন শিল্প : একটি পর্যালোচনা
মঙ্গলবার ● ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পাহাড়ে পর্যটন শিল্প : একটি পর্যালোচনা

---ফেবিয়ান বি. গোমেজ :: ক্রয় ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে দেশের মানুষজন সৌখিন হতে শুরু করেছে। ফলশ্রুতিতে ইদানীং পর্যটনের প্রতি মানুষের আগ্রহ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন উৎসবের ছুটি ছাড়াও এখন প্রতি সপ্তাহান্তে লোকজন হুমড়ি খেয়ে পড়ছে বাস ও ট্রেন স্টেশনে এমনকি বিমান বন্দরে। শহরের কোলাহল ছেড়ে যে যার মতো করে ছুটে যাচ্ছে তাদের পছন্দের জায়গাগুলোতে।

সোশ্যাল মিডিয়াসমূহে বিশেষভাবে ফেসবুকে যাদের অবাধ যাতায়াত, তারা অবশ্যই জানেন যে, এখানে পর্যটনকে সারাদেশে প্রমোট করার জন্য অসংখ্য গ্রুপ তৈরি হয়েছে এবং এই খাতে তারা যথেষ্ট ভূমিকাও রাখছে। আর তাই প্রায় প্রতিদিনই এসব গ্রুপগুলো থেকে ভ্রমণ বিষয়ক ইভেন্ট পোস্ট করা হচ্ছে, মানুষজন সাড়া দিচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে এর আশাব্যঞ্জক প্রভাব পড়ছে।

দেশের মানুষের পর্যটনের পছন্দের তালিকার শীর্ষে আছে তিন পার্বত্য জেলা- বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, এই জেলাগুলোতে বসবাসরত আদিবাসিদের সংস্কৃতির সাথে বিদ্যমান ধারার পর্যটন অনেকটাই সাংঘর্ষিক। এছাড়া পর্যবেক্ষণে আরো দেখা গেছে যে, এই ধারার পর্যটনকে আদিবাসিদের অনেকেই বাঁকা চোখে দেখে। তারা মনে করে এটা তাদের জন্য অবমাননাকর। অনেকে এই বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেন। এর কারণ স্বরূপ আমরা খাগড়াছড়ির সাজেক এবং বান্দরবানের নীলগিরির কথা উল্লেখ করতে পারি। সবাই জানেন, শত শত নীরিহ আদিবাসি পরিবারকে এই দুটো জায়গা থেকে উচ্ছেদ করে কিভাবে গড়ে তোলা হয়েছে তথাকথিত পর্যটন কমপ্লেক্স। বাস্তুচ্যুত বেশিরভাগেরই কপালে জোটেনি উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ বা পূনর্বাসন। উচ্ছেদ প্রক্রিয়া এখনো থেমে নেই। যার ফলে আদিবাসি সমাজে এর জের হিসেবে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপক ক্ষোভের জায়গা তৈরি হয়েছে। সমতল থেকে আসা পর্যটকেরা যখন এসব জায়গায় ঘুরে বেড়ায়, তখন আদিবাসিদের নীরব দর্শক হয়ে বসে থেকে দীর্ঘশাস ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা কারণ এই তথাকথিত পর্যটনের সাথে এদের কোন সংযোগ নেই। সবকিছু তাদেরকে বাদ দিয়েই করা হয়েছে।

এখানে পর্যটনের জন্য যারা আসেন তাদের বেশিরভাগ মানুষই ইমারতে গড়া অবকাঠামোগুলোতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না কারণ তারা চায় ইট-রড-সিমেন্টে গড়ে ওঠা শহরের ব্যস্ততা থেকে ছুটি নিয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্যে কয়েকটা দিন কাটিয়ে তাদের মনের অবসাদ দুর করতে। কিন্তু প্রকৃতির ছোঁয়া, নির্জনতা তাদের কাছে ধরা দেয় না। পাহাড়ে তারা নিশ্চয়ই ‘‘আমিরাবাদ হোটেল” টাইপের কোন হোটেলে থাকতে চাইবে না বা খেতে চাইবে না। তারা দেখতে চায় আদিবাসি বর্ণমালাখচিত দুর্বোধ্য সব নামের হোটেল, কটেজ বা মোটেল। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি- অধিকাংশ মানুষই চায় আদিবাসি খাবারের স্বাদ নিতে। এই তিন জেলার প্রকৃতিকে দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে যেভাবে পর্যটন কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হচ্ছে তাতে করে অদুর ভবিষ্যতে মানুষজন এসব এলাকায় না গিয়ে চলে যাবে নেপাল, ভূটান, ভারতে বা অন্য কোথাও।

আসলে পর্যটনের সাথে আদিবাসিদের কখনোই সম্পৃক্ত করা হয়নি। তাদেরকে উচ্ছেদ করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় কমপ্লেক্স গড়ে তুলে আদিবাসিদের এর অংশীদার করা হয়নি। সচেতনভাবেই উপেক্ষা করা হয়েছে সবকিছু থেকে। আর এসবের মালিকানা চলে গেছে বহিরাগত সেটেলারদের হাতে। মুষ্টিমেয় কয়েকজন আদিবাসি ছেলেকে আমি দেখেছি উল্লেখিত তিন জেলার উপজেলা সদরে অপেক্ষায় বসে থাকে- পর্যটকের আশায়। ব্যাগ টানা পর্যন্তই যাদের অংশীদারিত্ব। কিন্তু আমরা চাই, পাহাড়ের পর্যটনের এ টু জেড নিয়ন্ত্রণ করবে সেখানকার আদিবাসিরা। তারাই প্রধান নিয়ামক, নিয়ন্ত্রক ও মালিক। আমার বদ্ধমূল ধারণা, এটা সম্ভব হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন একটি শিল্পরূপ পরিগ্রহ করতে পারে।

আদিবাসিদের তাদের বাপ দাদার ভূমি থেকে অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ না করে সরকার কিছূ লজিস্টিক সাপোর্টের মাধ্যমে তাদের একেকজনকে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে পারে। সাপোর্টের মধ্যে থাকবে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ। পর্যটকদের আকর্ষণের যাবতীয় কলাকৌশল তাদেরকে শিখিয়ে পড়িয়ে নিতে হবে। তাদের থাকা-খাওয়া, নিরাপত্তা থেকে শুরু করে টোটাল ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে।
উল্লেখ্য যে, পর্যটকদের নিরাপত্তা ইস্যুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দায়িত্ব স্থানীয়ভাবে সমাজের যুব সম্প্রদায়কে নিশ্চিত করতে হবে। পর্যটকদের ঘোরাফেরার সীমানা পরিধি সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য সামাজিক আইগুলোকে প্রয়োজনে ঘষামাজা করে নিতে হবে। অভিজ্ঞতায় দেখেছি, অনেক পর্যটক বেড়াতে গিয়ে সেখানকার এন্টিকস, প্রত্নতাত্তিক সম্পদ, ভেষজগুণ সম্পন্ন বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-গাছালির চারা, বন্যপ্রাণী ইত্যাদি যে যার মতো করে নিয়ে আসে। এগুলোকে সামাজিকভাবে কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে প্রসাশনের সাহায্য নিতে হবে।

এরপর আসে ব্যাংক লোনের প্রসঙ্গ। পর্যটনকে প্রমোট করার জন্য সরকার আদিবাসি উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সহজ শর্তে অথবা বিনা সূদে লোন প্রদান করবেন কারণ তাদের বেশিরভাগই প্রান্তিক শ্রেণীর। লোনের টাকায় তারা গড়ে তুলবেন দৃষ্টিনন্দন সব কটেজ যাতে ফুটে উঠবে আদিবাসি সংস্কৃতির অপরূপ ব্যঞ্জনা। সবই হবে প্রাকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

এতে সরকারের সদিচ্ছা খুবই জরুরী। সরকারকে তিন পার্বত্য জেলার স্থানীয়দের মতামতের ভিত্তিতে আলাদা একটি পর্যটন নীতিমালা বা আইন তৈরি করে দিতে হবে।

পাহাড়ে পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা আছে তবে প্রস্তাবিত ফর্মুলায় এটাকে কাজে পরিণত করা না গেলে এর কোন ভবিষ্যত আমি দেখি না।
লেখক : ফেবিয়ান বি. গোমেজ
[email protected]





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)