শুক্রবার ● ৬ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » বুদ্ধাংকুর বিহারে দানোত্তম কঠিন চীবর দান উদযাপিত
বুদ্ধাংকুর বিহারে দানোত্তম কঠিন চীবর দান উদযাপিত
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (২১ আশ্বিন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.০৩মি.) পঞ্চশীল প্রার্থনা, ধর্মীয় সঙ্গীত ও ধর্মীয় নানা আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রাঙামাটির আসামবস্তী বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করা হয়েছে।
আজ ৬অক্টোবর শুক্রবার বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার ও রাঙামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ স্ংস্থার উদ্যোগে ১৮তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মসভায় প্রধান ধর্মদেশক হিসেবে দেশনা দেন সংঘরাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ধর্মকৃতি মহাথের।
ধর্মীয়সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী।
বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার ও রাঙামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়ার পরিচালনায় ও বিহারের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রনজিৎ কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ধর্মীয় সভায় বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারের করুনাময় ভিক্ষু, রাঙ্গাপানি মিলন পুর বিহারের আবাসিক ভিক্ষু প্রজ্ঞাদীপ্তি ভিক্ষু ধর্মীয় বক্তব্য রাখেন।
ধর্মীয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পৌর মেয়র বলেন, পার্বত্য রাঙামাটিতে বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সর্বদা কাজ করে যাবো। সকল সম্প্রদায় যাতে যার যার ধর্ম সঠিকভাবে পালন করতে পারে সে লক্ষ্যে পৌরসভার পক্ষে যতটুকু সম্ভব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহায়তা করে যাবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মানব কল্যানে বিশ্বাসী। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে দাড়িয়ে বিশ্বে আবারও প্রমান করেছে এই সরকার মানব কল্যানে বিশ্বাসী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এ অঞ্চলের মানুষের সম্প্রীতি অটুট রাখতে আমাকে পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীক দিয়ে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছেন এবং আমাকে যোগ্য মনে করে সকল ধর্ম-বর্নের মানুষ ভোট দিয়ে জয়ী করেছেন। সকল সম্প্রদায় যাতে যার যার ধর্ম উৎসব সঠিকভাবে পালন করতে পারে সে লক্ষ্যে সবাই সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।
ধর্মালোচনা সভায় ধর্মীয় ভিক্ষুরা বলেন, পঞ্চশীল গ্রহণ করে বুদ্ধের বাণীগুলো যথাযথ ভাবে অনুসরণ ও সংঘাত পরিহার করে মৈত্রী ভাবনা চর্চা করলে সৎ পথে এগোনো সম্ভব। ধর্মীয় ভিক্ষুরা বলেন, গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা ও আদর্শের প্রতি সকলকে আদর্শবান হয়ে মিথ্যাকে পরিহার করে পৃথিবীর সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যেতে হবে। তা হলেই বিশ্বে উন্নয়ন ও শান্তি ফিরে আসবে।
ভোরে প্রার্থনা ও সূত্র পাঠের মাধ্যমে উৎসবের কর্মসূচি শুভরাম্ভ হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল ভোর ৪টায় পরিত্রাণ পাঠ, সকালে পুষ্পপূজা ও ভিক্ষু সংঘের প্রাতঃরাশ, জাতীয় পতাকা ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধপূজা, শীল গ্রহণ, সংঘদান ও ভিক্ষু সংঘের ধর্মদেশনা, অনুত্তর পুন্যক্ষেত্র ভিক্ষুসংঘকে পিন্ডদান, দ্বিতীয় পর্বে ছিল বিকেল
উদ্ধোধনী সঙ্গীত, “বুদ্ধাংকুর স্মরণিকা” নামক সংকলনের মোড়ক উন্মোচন, ধর্মীয় আলোচনা ও কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া সন্ধ্যায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও বৌদ্ধ কীর্তনানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।