মঙ্গলবার ● ২৪ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » আইনজীবীর বাসা থেকে কলেজ ছাত্রীর ৭ টুকরো লাশ উদ্ধার
আইনজীবীর বাসা থেকে কলেজ ছাত্রীর ৭ টুকরো লাশ উদ্ধার
বরগুনা প্রতিনিধি :: (৯ কার্তিক ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.২২মি.) বরগুনায় অ্যাডভোকেট মাইনুল আহসান বিপ্লব তালুকদার নামের এক আইনজীবীর বাসা থেকে মালা আকতার নামে ১ কলেজ ছাত্রীর ৭ টুকরো লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলার আমতলী পৌর শহরের হাসপাতাল সড়কের অ্যাডভোকেট মাইনুল আহসান বিপ্লব তালুকদারের বাসায় মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় পুলিশ ওই ছাত্রীর প্রেমিক আলমগীর হোসেন পলাশ (৫২) নামে ১ ব্যক্তিকে আটক করেছে। মালা আলমগীর হোসেনের সম্পর্কে মামাতো শ্যালিকা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, বরগুনা সদর উপজেলার গুদিঘাটা গ্রামের মো. মন্নান খানের মেয়ে মালা আকতারের সঙ্গে পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসোন্দা গ্রামের আবদুল লতিফ খানের ছেলে পলাশের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
দীর্ঘদিন ধরে চলছিল তাদের এ সম্পর্ক। মালা সম্পর্কে আলমগীর হোসেন পলাশের মামাতো শ্যালিকা। সপ্তম শ্রেণিতে লেখাপড়া অবস্থায় পলাশের সঙ্গে মালার সম্পর্ক হয়। মালা কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
গত রবিবার সন্ধ্যায় মালাকে নিয়ে পলাশ আমতলীতে তার আত্মীয় অ্যাডভোকেট মাইনুল আহসান বিপ্লবের বাসায় বেড়াতে আসে। ৩ দিন ধরে পলাশ এ বাড়িতে অবস্থান করে। মঙ্গলবার মালা পলাশকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু পলাশ এতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়।
এক পর্যায়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আলমগীর হোসেন পলাশ মালাকে ধারালো অস্ত্র (বঁটি) দিয়ে কুপিয়ে মাথা, দু’হাত, দু’পা ও গলার নিচ থেকে কোমর পর্যন্ত দুই টুকরোসহ মোট ৭ টুকরো করে হত্যা করে।
এ সময় ওই বাসায় কেউ ছিল না। পলাশ ওই ছাত্রীর লাশ সাত টুকরো করে ওই বাসার বাথরুমের মধ্যে ২টি ড্রামে ভরে রাখে।
খবর পেয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে আলমগীর হোসেন পলাশ ঘটনার সত্যতা পুলিশের কাছে স্বীকার করে জানান সপ্তম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় মালার সঙ্গে প্রেম করে আসছিলেন তিনি। মালার বাবা-মা ঢাকা থাকেন। মালার লেখাপড়ার খরচ চালান তিনি। গত রবিবার বিয়ে করার জন্য মালাকে নিয়ে আমতলী আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যান।
পুলিশকে পলাশ বলেন, মঙ্গলবার সকালে মালা আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। বিয়ে করব বলে মালাকে আশ্বস্ত করলেও তা মানতে রাজি না সে। এক পর্যায় আমি ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো অস্ত্র (বঁটি) দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করি।
এ সময় বাসায় কেউ ছিল না। মালার দেহ ৭ টুকরো করে ওই বাসার বাথরুমের মধ্যে থাকা ২টি ড্রামে ভরে রাখি।
পলাশ আরও বলেন, প্রথমে বঁটি দিয়ে গলা কেটে বিছিন্ন করি। তারপর এক এক করে ৭ টুকরো করে ফেলি।
অ্যাডভোকেট মাইনুল আহসান বিপ্লব সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, পলাশ আমার সম্পর্কে মামা শ্বশুর। গত রবিবার আমার বাড়িতে মালাকে নিয়ে তিনি বেড়াতে আসেন। এ সময় তিনি মালাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী বলে পরিচয় দেন। মঙ্গলবার সকালে আমি ও আমার স্ত্রী কর্মস্থলে চলে যাই। এ ফাঁকে পলাশ মালাকে হত্যা করেছে।
আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদ উল্লাহ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করেছি। পলাশকে আটক করেছি। পলাশ ঘটনার সব সত্যতা স্বীকার করেছে।