শুক্রবার ● ৩ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » আজ ৩ নভেম্বর হালুয়াঘাটের ‘ঐতিহাসিক তেলিখালী যুদ্ধ দিবস’
আজ ৩ নভেম্বর হালুয়াঘাটের ‘ঐতিহাসিক তেলিখালী যুদ্ধ দিবস’
ময়মনসিংহ অফিস :: (১৯ কার্তিক ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ বিকাল ৫.০৬মি.) আজ ৩ নভেম্বর ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ‘ঐতিহাসিক তেলিখালী যুদ্ধ দিবস’। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এ দিনটি এক গৌরবময় দিন হিসেবে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত হালুয়াঘাট উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই ‘তেলিখালী’ এলাকা ‘৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের এক ঐতিহাসিক রণাঙ্গণের নাম।
আজ থেকে ৪৬ বছর আগে ৩ নভেম্বরের এই দিনে ‘মা-মাটি ও অসহায় বাঙ্গালী জাতিকে মুক্ত করতে’ এদেশের দামাল ছেলেরা নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে শত্রুসেনা হানাদারদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তির প্রত্যাশায় এই ‘তেলিখালী রণাঙ্গণে।’ মুক্তি সেনাদের দৃঢ় সম্মুখ সমরে রক্তাক্ত প্রান্তর হয়ে উঠেছিল ‘তেলিখালী’ এলাকা। পবিত্র মাটিকে মুক্ত করার প্রত্যয়ে জীবন যুদ্ধের এ সম্মুখ সমরে লালে লাল রক্ত অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ‘তেলিখালী’ জয় করে বিজয়ের ‘লাল সবুজ পতাকা’ উড়িয়ে ছিল সেদিন।
বাংলার পবিত্র মাটিকে মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর ২৮ জন গর্বিত সন্তান সেদিন অকাতরে শহীদের খাতায় নাম লিখেছিলেন। তাঁদের পবিত্র বুকের তাজা রক্তের বন্যায় সেদিন পতন হয়েছিল হানাদার বাহিনীর একটি বিশাল শক্তিশালী ঘাঁটির। ‘৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের ‘ঐতিহাসিক তেলিখালী’র এই গর্বিত বিজয় বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের দেশমাতৃকাকে মুক্ত করার পথে নতুন করে সাহস যোগায়। সেইসাথে তরুণ তুর্কিদের দৃঢ় মনোবলে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়কে আরো সহজ করে দেয়। ‘তেলিখালীর বিজয়’ মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের মাটিকে মুক্ত করতে জীবনকে অকাতরে বিলিয়ে দেয়ার উৎসাহে বিজয়ের পথযাত্রা ত্বরান্বিত করায় দ্রুততম সময়েই উড়েছিল বাংলার মাটিতে ‘লাল সবুজ পতাকা’।
স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকেই ৩ নভেম্বর ‘ঐতিহাসিক তেলিখালী যুদ্ধ দিবসকে’ সামনে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। ৩ নভেম্বর সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনার পর সমাধিস্থলে পুস্পমাল্য অর্পণ, বীর শহীদদের কবর জিয়ারত, দোয়া মাহফিল, ঐতিহাসিক তেলিখালী দিবসের তাৎপর্য শীর্ষক স্মৃতিচারণ সভা,বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অতিথিবৃন্দের আপ্যায়ন, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন,সংগীতানুষ্ঠান,
প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখা হবে। পাশাপাশি শহীদদের স্বজন,আগত সুধীজন ও আগামি প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে তা জানতে উৎসাহিত করা হবে।