মঙ্গলবার ● ৭ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » স্ত্রী হত্যাকারী ইমাম মোফাচ্ছেল গ্রেফতারে পর আদালতে স্বীকারোক্তি
স্ত্রী হত্যাকারী ইমাম মোফাচ্ছেল গ্রেফতারে পর আদালতে স্বীকারোক্তি
ময়মনসিংহ অফিস :: (২৩ কার্তিক ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১২.১১মি.) ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার পর আত্বহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হলো মসজিদের ইমাম ঘাতক স্বামী মোফাচ্ছেল খানের। ঘটনার ৬৯ দিন পর গত ৪ নভেম্বর পুলিশের হাতে ধরা পড়ে হত্যাকান্ডের দায় এবং ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জনা যায়, হালুয়াঘাট উপজেলার ওটী গ্রামের স্থানীয় মসজিদের ইমাম আব্দুল আলী খানের ছেলে অন্য এক মসজিদের ইমাম মোফাচ্ছেল খান প্রায় দশ বছর আগে প্রতিবেশি চাচাত বোন আসমা খাতুনকে বিয়ে করে। দাম্পত্য জীবনে দু’টি ছেলে সন্তানের জন্ম হলেও অর্থনৈতিক অসচ্ছলতায় সাংসারিক বিষয় নিয়ে তাদের মাঝে মাঝে ঝগড়া বিবাদ হলেও ভালবাসার কমতি ছিল না।
এদিকে গত ২৪ আগষ্ট রাতে স্টার জলসার পাখি ড্রেস নতুন কাপড়ের জন্য জেদ ধরে স্ত্রী আসমা। এ নিয়ে উভয়ের মাঝে কথা কাটাকাটি হলে আবার রাতেই মীমাংসা হয়। রাত তিনটার দিকে আবারো পুরাতন কাসুন্দী নিয়ে কথা কাটাকাটির পরও স্ত্রী ফরজ গোসল করতে গেলে স্বামী ইমাম মোফাচ্ছেল খান তার পিছু পিছু যায়। সেখানেও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ইমাম মোফাচ্ছল রাগে ক্ষোভে স্ত্রী আমসাকে গলা চেপে ধরে। এতে স্ত্রী আসমা কোন সাড়া-শব্দ না করলে তাকে ধাক্কা দিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে চলে যায় স্বামী মোফাচ্ছেল।
সকালে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে আসমাকে না পেয়ে তার স্বামীকে সংবাদ দেয়। স্বামী ইমাম মোফাচ্ছেল খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পুকুর থেকে স্ত্রী আসমার লাশ উত্তোলন করে এবং পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেছে বলে প্রচার করে।
অপরদিকে হালুয়াঘাট থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে মৃতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। আর আসমার বাবা হালুয়াঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু দীর্ঘ আড়াই মাস আসামীরা পলাতক থাকায় এবং পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে না পারায় মামলার তদন্তভার ডিবি পুলিশের উপর ন্যাস্ত করে জেলা পুলিশ। ডিবি পুলিশের এলআইসি বিভাগের এসআই পরিমল দাস তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আড়াই মাস পর হত্যাকান্ডের অন্যতম হোতা ইমাম মোফাচ্ছেল খানকে গ্রেফতার করে।
ডিবির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশিকুর রহমান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, গত ৪ নভেম্বর তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং রাতে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সে পুলিশের কাছে হত্যাকান্ডের কারণ ও ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি আরো জানান, আসামী ইমাম মোফাচ্ছেল খানকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতেও স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।