সোমবার ● ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » অপু’র প্রতারণা কত প্রকার ও কি কি !
অপু’র প্রতারণা কত প্রকার ও কি কি !
উখিয়া প্রতিনিধি :: ২১ সেপ্টেম্বর : বহুল আলোচিত নারী লোভী ও ভুঁয়া শিক্ষক সুদর্শন বড়ুয়া ওরফে অপূর্ব আহমেদ অপু’র প্রতারণামূলক নানা কর্মকান্ড নিয়ে একাধিক অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের পরও থেমে নেই প্রতারণার নতুন মাত্রা ৷
অনুসন্ধানে জানা যায়, অপূর্ব আহমেদ অপু ওরফে পূর্ণেন্দু বড়ুয়া’র সত্যিকার পরিচয় হচ্ছে পার্বত্য বান্দরবান জেলা বালাঘাটার স্থায়ী বাসিন্দা ও ফরেষ্ট ডিপার্টমেন্টের কর্মচারী স্বপন বড়ুয়া পুত্র সুদর্শন বড়ুয়া৷ তারা ৩ ভাই ১ বোনের মধ্যে প্রথম পুত্র সুদর্শন বড়ুয়া (বর্তমানে অপূর্ব আহমেদ অপু), দ্বিতীয় পুত্র নিদর্শন বড়ুয়া, তৃতীয় পুত্র রুবেল বড়ুয়া ও বোন পূর্ণিমা বড়ুয়া ৷
২০০১সালে বান্দরবান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশকৃত পূর্ণেন্দু বড়ুয়া (রোল নং- ১১৯২৬৭, শাখা- বিজ্ঞান), পিতা- অরুণ বড়ুয়া, মাতা- বিশাখা বড়ুয়া নামে অপর এক ব্যক্তির সনদ জালিয়াতি করে নিজেকে পূর্ণেন্দু বড়ুয়া পরিচয়ে প্রতারক অপু জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ বৈধ করার জন্য সম্প্রতি এফিডেভিটমূলে ধর্মান্তরিত হওয়ার নামে পূর্ণেন্দু বড়ুয়ার নাম পরিবর্তন করে অপূর্ব আহমদে অপু, পিতা- অরুণ বড়ুয়া, মাতা- বিশাখা বড়ুয়া হিসেবে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে পশ্চিম ডিগলিয়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা পরিচয়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ ও জাতীয়তা সনদ ইস্যু করে ৷ যার জন্ম নিবন্ধন নং- ১৯৮৬২২১৯৪৪৭০৪৯০৪৩, ইস্যুর তারিখ- ০৯/০৮/২০১৫, বহি নং- ২৮ ৷
অপরদিকে ইতিপূর্বেও উক্ত নারী লোভী, প্রতারক ও সনদ জালিয়াতকারী জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভুঁয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যু করে ৷ যার নিবন্ধন তারিখ- ২১/১১/২০১৩ইং, বহি নং-২২, পরিচিতি নং- ১৯৮৬২২১৯৪৩১১৪৭৮৬২, নাম- মোহাম্মদ অপু, পিতা- দিদার হোসেন, মাতা- খদিজা বেগম, সাং- সোনারপাড়া, জালিয়াপালং, উপজেলা-উখিয়া, জেলা- কঙ্বাজার ৷
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, প্রতারক অপু তত্কালীন জালিয়াপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে (খন্ডকালীন) চাকুরীকালীন সহকারী শিক্ষিকা কুররাতুল আইন লাকীর শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জালিয়াতি করে তার সর্বশেষ কর্মস্থল টাইপালং হামিদিয়া দারুসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা সুপার মাও: আব্দুর রহিম, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাফর আলম ভুলু ও অপরাপর সদস্যদের ম্যানেজ করে স্থায়ী নিয়োগের জন্য গত ১৭/০৫/২০১৫ইং তারিখ, রবিবার, সকাল ১১টার সময় কঙ্বাজার জেলা শিক্ষা অফিসে যথারীতি পরীক্ষা শেষে এমপিও ভুক্তির ফাইল প্রেরণ করে ৷ এতে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও শিক্ষক নিবন্ধন সনদ সহ একাধিক অমিল থাকায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাইল আটকে রাখে এবং পরবর্তীতে রহস্যজনক কারণে এমপিও ভুক্তির জন্য ভুঁয়া বি.এস.সি শিক্ষক অপুর ফাইল প্রেরণ করে ৷ যা পরবর্তীতে একাধিক তথ্যের অমিল থাকায় ১৬/০৮/২০১৫ইং তারিখ উক্ত ফাইল ফেরত আসে ৷
তবে নিয়োগে অনিয়ম, সনদ জালিয়াতি ও এমপিও ভুক্তির জন্য মাউশি তে ফাইল প্রেরণের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান উখিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রায়হানুল ইসলাম মিয়া ৷
তার এসব প্রতারণা ও সনদ জালিয়াতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে তিনি মাদ্রাসা উপস্থিত হয়নি তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তার ফাইল জব্দ করেছে বলে জানান মাদ্রাসা সুপার মাওঃ আব্দুর রহিম৷
জীবনে এসব প্রতারণা, নারী কেলেঙ্কারী ও সনদ জালিয়াতি সহ ইতিপূর্বে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় তিনি দেশে থাকা স্বত্ত্বেও কেন ভোটার হয়নি কেন ০১৮৭৬৯৭৫৫৮০ ফোন করে জানতে চাওয়া হলে অপু এ প্রতিবেদকের সাথে অশালীন আচরণ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় ৷
এদিকে একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহলের অপতত্পরতায় চলতি ভোটার তালিকা হালনাগাদে ছবি তোলার জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ এব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কোন ইতিপূর্বে অভিযোগ পাওয়া যায়নি তবে কেউ প্রতারণার আশ্রয় নিলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে ৷
এলাকায় অবস্থান করেও কেন ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত হয়নি এবং অন্যের সনদ নিজের নামে বৈধ করার জন্য ভুঁয়া কাগজ পত্র তৈরী, পিতা-মাতা নাম সহ একাধিক তথ্য জালিয়াতি করে প্রতারক সুদর্শন বড়ুয়া সুযোগ বুঝে ভিন্ন নামে (মোহাম্মদ অপু, অপূর্ব আহমেদ অপু, পূর্ণেন্দু বড়ুয়া) নামে তথ্য বিভ্রাট করে প্রতারণা করে আসছে ৷
তার এহেন নারী কেলেঙ্কারী, জালিয়াতি ও প্রতারণাকারী অপূর্ব আহমেদ অপুর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানান সচেতনমহল ৷