বৃহস্পতিবার ● ১৬ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » চরাঞ্চলবাসির উন্নয়নের চাকা থমকে দিয়েছে
চরাঞ্চলবাসির উন্নয়নের চাকা থমকে দিয়েছে
সোহেল রানা,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:: (২ অগ্রহায়ণ ১৪২৪ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.১৭মি.) যমুনার বার বার ভাঙনের শিকার সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বহু সমৃদ্ধ জনপদ। এক কালের সমৃদ্ধ জনপদ আজ অথৈ জলরাশিতে ভরপুর। ভাঙন অধ্যুষিত ইউনিয়নগুলোর প্রায় লক্ষাধিক মানুষের তাই প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে যাতায়াত। এমনকি জরুরি প্রয়োজনেও মানুষ অসহায়ের মতো পড়ে থাকে। চলাচলের নেই তেমন কোন রাস্তা-ঘাট।
ফলে পুরো শুষ্ক মৌসুম জুড়ে এ অঞ্চলের মানুষের চরম দুর্ভোগ-দুর্দশা পোহাতে হয়। বছরের প্রায় ৮ মাস তাদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মাইলের পর মাইল বালুচর ভেঙ্গে তাদের হাট-ঘাটসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হয়।
বর্ষার শেষের দিকে এ দুর্ভোগের শুরু। কোথাও হাঁটুপানি, কোথাওবা কোমর পানি পার হয়ে গ্রামে গ্রামে যাতায়াত করতে হয়। মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে বিশেষ করে কৃষি পণ্য চর থেকে শহরে আনতে গিয়ে কৃষকগণ চোখের পানি ফেলেন। কৃষি পণ্য বিক্রির পর লভাংশের বেশিরভাগই পরিবহন খাতে ব্যয় হয়। চরাঞ্চলের পরিবহন বলতে এখনও প্রাচীন আমলের ঘোড়ার গাড়িই মালামাল ও যাত্রী পরিবহনের একমাত্র বাহন।চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও চরের বাসিন্দাদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাধীনতার পরবর্তীতে চরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে জন মানুষের বসতি গড়ে ওঠে।
যমুনার চরাঞ্চলের বালি মিশ্রিত মাটিতে মরিচ, বাদাম, কালাই, আখ, ভুট্রাসহ বিভিন্ন মসলার ও সবজির ব্যাপকভাবে আবাদ হয়ে থাকে। নগর জীবনের আধুনিক সভ্যতার অনেক কিছুই চরাঞ্চলবাসীর ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। অধিক ফসল চাষ করে শহরে এনে তারা বিক্রি করে জীবন যাপনের অতি প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা মেটায়। কিন্তু তারা পায়না আধুনিক ন্যুনতম সুবিধাদি। বিদ্যুৎ তাদের কাছে স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। সোলার সিস্টেমে অনেকে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে নিলেও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় চরাঞ্চলবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বছরের পর বছর।
এ অঞ্চলের মনসুর নগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মাষ্টার ও এম কামরুল হাসান মাষ্টার সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় নানা ফসল উৎপাদিত হচ্ছে। বিশেষ করে মরিচ ও সবজির আবাদ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে পণ্য আনা-নেয়া এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপজেলা পরিষদে প্রকল্প দেয়া হলেও তা আংশিক বাস্তবায়ন হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও সহযোগিতা পাওয়া যায় না। অথচ শুস্ক মৌসুম জুড়েই জনগণের দাবি রাস্তা ও বাঁধ নির্মাণের।
এ ব্যাপারে নাটুয়ারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আব্দুল মান্নান চাঁন সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, যদি চরাঞ্চলের যাতায়াতের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করা যেত তাহলে এখানকার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে কাজিপুরবাসী তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে সক্ষম হতো।