শনিবার ● ১৮ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » টার্কি,তিতির ও কবুতর পালন করে ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে নাজমুলের
টার্কি,তিতির ও কবুতর পালন করে ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে নাজমুলের
শামসুল আলম স্বপন, কুষ্টিয়া :: (৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৪ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ১২.৫৪মি.) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামের মো. কফিল উদ্দিনের ছেলে নাজমুল আরেফিন। লেখা পড়া শিখেও ছিলেন বেকার । চাকরি নয় ব্যবসা করার অদম্য ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু কি ব্যবসা করবেন? যে কোন ব্যবসা ভালো ভাবে করতে হলে প্রয়োজন অনেক টাকার। স্থির করতে পারছিলেন না তিনি। ২০০৭ সাল। সিরাজগঞ্জে যান আত্মীয় বাড়িতে । সেখানে যেয়ে টার্কি মুরগী, তিতির ও কবুতরের খামার দেখে তাঁর সখ হয় খামার করার। বাড়ি ফিরে তাঁর স্ত্রী শিউলি আক্তারের সাথে আলাপ আলোচনা তিনি মাত্র ১২ হাজার টাকা দিয়ে সখের বশবর্তী হয়ে শুরু করেন পাখির খামার। এরপর তাঁকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। খামারের আয় থেকে তিনি কুষ্টিয়া ঢাকা রোডের পাশে ১৩ কাঠা জমি কিনে তৈরী করেছেন খামার বাড়ি। কাটাই খানা মোড়ে নিয়েছেন বিদেশী পাখি বিক্রির দোকান। তাঁর খামারে রয়েছে টার্কি মুরগী,তিতির পাখি, বাজরিগার, লাভবার্ড, ককাটেল, জাভা, প্রিন্স, বিদেশী ঘুঘু, বোমবাই কবুতর, লোটন, গোলা, গিরিবাজ, লক্ষ্যাসহ বিভিন্ন জাতের কবুতর । এ গুলো প্রতিপালন করতে তাঁর মাসে ব্যয় হয় ১০/১২ হাজার টাকার মত।
নাজমুল জানান তাঁর খামার থেকে এ পর্যন্ত ২০ থেকে ২২ লক্ষ টাকা আয় করেছেন । এই টাকা দিয়ে তিনি তৈরী করেছেন এল প্যাটানের বাড়ি। বর্তমান তাঁর জমিসহ খামারের মূল্য প্রায় এক কোটি টাকার উপরে। খামারে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির হাউব্রিড ফলজ গাছ । এর মধ্যে আম, জাম, লিচু, কদবেল, বেদনা, ডালিম, সবেদা, পেয়ারা, মাল্টা, লেবু, জামরুল, মেওয়া, কাগজিলেবু, বিভিন্নজাতের বরই, কেরেলা নারকেল, পেপে, কুল, জলপাই, অগ্নিসাগর কলা ইত্যাদি। তিনি আরো জানান, তাঁর স্ত্রী শিউলি আক্তার খামার পরিচালানায় তাঁকে সব সময় সাহায্য করেন। ছেলে নাফিজ আরেফিন (১৪) এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী ,মেয়ে নাজমুন নাহার নাফিজা (৭) দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্রী এদের নিয়ে অত্যন্ত সুখে আছেন নাজমুল আরেফিন। তিনি বলেন,পাখির খামার মুলত লাভজনক একটি ব্যবসা । অল্প পুঁজিতে বেশী লাভ । তিনি জানান একটি টার্কি মুরগী পরিনত বয়সে ১৫/১৬ কেজি মাংশ হয়। বলা যেতে পারে একটি ছাগলের সমান ওজন । যার দাম প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। তিনি আগামীতে বড় ধরণের খামার করার চিন্তা-ভাবনা করছেন । এর সাথে গরু ,ছাগল ভেড়া, গাড়ল,চিনা হাঁস পালনের কথা ভাবছেন। নাজমুল আরো জানান সরকার যদি সহজ শর্তে পাখি খামারের উপর ঋণ দেন তাহলে দেশে অনেক খামার গড়ে উঠবে । তাতে মাংশের চাহিদা পুরন করা সম্ভব হবে।