শুক্রবার ● ২৪ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » ১ বছর আগেই স্কুল ডায়রিতে ৭ই মার্চের ভাষণ যুক্ত করেছেন : কংজরী চৌধুরী
১ বছর আগেই স্কুল ডায়রিতে ৭ই মার্চের ভাষণ যুক্ত করেছেন : কংজরী চৌধুরী
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (১০ অগ্রহায়ন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.১৮মি.) এক বছর আগেই খাগড়াছড়ির সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে ‘শিক্ষার্থী ডায়েরি’ পাঠ্যক্রমে অর্ন্তভূক্ত করে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয় বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ।
এ কারনে পার্বত্য খাগড়াছড়িবাসী সমতলের ৬৩ জেলার তুলনায় একটু বাড়তি উচ্ছ্বসিত ও গর্বিত। চলতি বছরের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকতি দিয়েছে জাতি সংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো। যে খবরে উচ্ছাসিত পুরো বাঙালি জাতি। উচ্ছাসিত পুরো দেশ। তবে পুরো দেশের উচ্ছাসের চেয়ে একটু বেশি উচ্ছাসিত নানা ভাবে ঐতিহাসিক পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি।
কেন গর্বিত খাগড়াছড়ি :
খাগড়াছড়ি জেলার একাধিক শিক্ষাবিদ ও শিক্ষানুরাগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্য দলিল হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পর একাধিক আলোচনায় ৭ইমার্চের ভাষণ পাঠ্যপুস্তকে অর্ন্তভুক্তের দাবী তোলা হয়। অথচ তা এক বছর আগেই খাগড়াছড়ির স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করে দিয়েছেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে মুদ্রিত বিনামূল্যে জেলা সদরের সবকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী ডায়েরি বিতরণ করে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ। গত ৯ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) আনুষ্ঠানিক ভাবে জেলা সদরের মহালছড়া ও ঠাকুরছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্বলিত শিক্ষার্থী ডায়েরি বিতরনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী। যা পাহাড়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় এনেছে নতুনত্ব ও বৈষম্যহীনতার প্রতিফলন এবং জীবন গড়ার জ্ঞান অন্বেষণে বঙ্গবন্ধুর সাথে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পরিচিতকরণ। এমন অনন্য দৃষ্টান্তমূলক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহের ইয়াছমিন, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিউটি রানী ত্রিপুরা, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ৩নং গোলাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান জ্ঞানরঞ্জন ত্রিপুরা, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বেলা রানী দাশ।
জানা যায়, পাজেপ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর সৃজনশীল এমন উদ্যোগ বাস্তবায়নে গত বছর ডায়েরির প্রচ্ছদটি তৈরি করেন পাহাড়ের অন্যতম কবি ও সাহিত্যিক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা ও যাবতীয় মুদ্রণে সহযোগিতায় ছিলেন গবেষক চিংলামং চৌধুরী।
এদিকে, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ইউনেস্কো স্বীকৃতি উদ্যাপনে দুইদিন ব্যাপী কর্মসূচি পালন করার প্রস্তুতি নিয়েছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। শুক্রবার সকালে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭মার্চের ওপর রচনা, কুইজ ও সাধারন জ্ঞান প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। শনিবার সারাদেশের ন্যায় খাগড়াছড়িতে আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে শহরে মাইকিং করে জেলা প্রশাসন। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে জেলার বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দফতর ও সর্বস্তরের জনগনের অংশগ্রহণ শোভাযাত্রা বের হয়ে টাউনহলে গিয়ে আলোচনা সভায় মিলিত হবে। সেখানেই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করা হবে।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ সম্বলিত আলোচিত শিক্ষার্থী ডায়েরির প্রস্তুতকরণের বৈশিষ্ট্য নিয়ে পাজেপ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আমি পুরস্কারের জন্য কোন কাজ করি না। মহান স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস রক্ষা ও শিক্ষা জীবনের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষনের তাৎপর্য ধারন, লালন ও আদর্শে যেন শিশুকাল থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে চেতনা বিকশিত হয় সেই লক্ষ্যে এই ভাষন গত বছর হতে সর্বপ্রথম খাগড়াছড়ির সবকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। সরকারের নানামূখী কাজ করতে গিয়ে সৃজনশীল এ কাজের জন্য চেয়ারম্যান হিসেবে আমি গর্বিত, খাগড়াছড়িবাসীও গর্বিত’’।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে ৩০ অক্টোবর প্যারিসে ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয়ে মহাপরিচালক ইরিনা বোকাভো মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অর্ন্তভূক্ত হয়। যা গত ১৩ নভেম্বর (মঙ্গলবার) জাতীয় সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। যা সর্বসম্মৃতিক্রমে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ ও রাজনীতির মহাকাব্য উল্লেখ করার পাশাপাশি দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণারও দাবী জানিয়েছেন।