মঙ্গলবার ● ১ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » গাজীপুরে যুবলীগ নেতা জালাল হত্যা মামলায় ১১ জনের ফাঁসি
গাজীপুরে যুবলীগ নেতা জালাল হত্যা মামলায় ১১ জনের ফাঁসি
গাজীপুর প্রতিনিধি::গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জালাল সরকারকে হত্যার দায়ে ১১ জনকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত৷ এছাড়াও প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে৷
৩০ নভেম্বর সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. ফজলে এলাহী ভূঁইয়া জনাকীর্ন আদালতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন৷
২০০৩ সালের ১৭ আগস্ট গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার পাবুর বলখেলা বাজারের উত্তর পাশের জালাল সরকারকে হত্যার ১২বছর পর এ রায় ঘোষনা করা হলো৷
রায়ে বলা হয়, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী একই উদ্দেশ্যে আসামীগণ প্রকাশ্য দিবালোকে দাড়ালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে যুবলীগ নেতা জালাল সরকারকে হত্যা করেছে৷ রায়ে আরো বলা হয়, রাষ্ট্রপক্ষ আসামীদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হত্যার অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হওয়ায় আদালত তাদের কিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় ১১জনকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির রায় প্রদান করলেন৷
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন- আসামি যুবদল সভাপতি আ. আলীম, বেলায়েত হোসেন বেল্টু, ফরহাদ হোসেন, ফারুক হোসেন, আতাউর রহমান ও জয়নাল আবেদীন৷ এছাড়া এ মামলার অন্য আসামি উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আ. হালিম, জজ মিয়া, আল আমিন, মাহবুবুর রহমান রিপন, জুয়েল পলাতক রয়েছেন৷ ঘটনার পর থেকেই রিপন পলাতক৷ অন্য চারজন আলামিন, জজ মিয়া, জুয়েল, হালিম কিছুদিন কারা ভোগের পর জামিনে ছাড়া পেয়ে পলাতক রয়েছে৷ আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া যুক্তিসংঘত বলে রায়ে উল্লেখ করেন৷
আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়৷ পলাতক আসামীর আত্মসমর্পণ বা গ্রেফতারের তারিখ থেকে এ রায় কার্যকর হবে৷ রায় ঘোষণার সময় আসামীরা কাঠগড়ায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন৷
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় জালাল সরকারের বাবা আমজাদ হোসেন, বাদী ভাই মিলন সরকার ও আত্মীয় স্বজনরা সন্তোষ প্রকাশ করেন৷ জালালের মৃত্যুকালে রেখে যাওয়া দেড় বছরের একমাত্র মেয়ে শাহরিয়ার জালাল বিথী বাবার কথা মনে করতে পারছেনা৷ তবে সে পিতার হত্যাকারীরা সাজা পাওয়ায় খুশি৷
নিহতের বড় ভাই মিলন সরকার প্রতিনিধিকে জানান, ২০০৩ সালের ১৭ আগস্ট কাপাসিয়া উপজেলার বলখেলা বাজার সংলগ্ন মাঠে কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জালালসহ তার বন্ধুরা গল্প করছিলেন৷ এ সময় আসামিরা প্রকাশ্যে তাকে কুপিয়ে জখম করে৷ এতে তার মৃত্যু হয়৷
গাজীপুর আদালত পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম প্রতিনিধিকে জানান, দণ্ডিতরা সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন৷
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১৭ আগস্ট তত্কালীন ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা (আসামীরা) কাপাসিয়া উপজেলার পাবুর গ্রামের বলখেলা বাজারের পাশে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জালালকে হত্যা করে৷ একদিন পর জালালের ভাই মিলন সরকার বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় ১০জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম আব্দুল লতিফ আদালতে ১১জন আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন৷ আদালতে স্বাক্ষী দেয়ার কিছুদিন পর তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফের মৃত্যু হয়৷