মঙ্গলবার ● ১ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » উখিয়ায় শতবর্ষীয় বৌদ্ধ শ্মশানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
উখিয়ায় শতবর্ষীয় বৌদ্ধ শ্মশানের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
পলাশ বড়ুয়া,উখিয়া প্রতিনিধি :: উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাঁ পশ্চিম বড়ুয়া পাড়ার শত বছরের পুরোনো বৌদ্ধ শ্মশানের পবিত্রতা রক্ষার্থে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে জালিয়াপালং ইউনিয়নের পূর্ব লম্বরীপাড়া গ্রামের ভুমি দস্যু জাফর মিয়ার পুত্র মাহমুদুল হক অবৈধ বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷
জানা যায়, ১ ডিসেম্বর সকাল ১১টার দিকে হলদিয়াপালং ইউনিয়নে পশ্চিম বড়ুয়াপাড়াস্থ শত বত্সরের পুরোনো বৌদ্ধ শ্মশানের পবিত্রতা রক্ষার্থে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে পাশ্ববর্তী জালিয়াপালং ইউনিয়নের জাফর মিয়ার পুত্র মাহমুদুল হকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি)র নেতৃত্বে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার মৌখিক আদেশ দেন ৷ এ সময় নির্মাণ কাজ বাঁধা দানকারী জাফর মিয়া বলেন, উক্ত শ্মশান তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ছিল ৷ দীর্ঘদিন আগে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির হস্তক্ষেপে বেদখলে চলে যায় এবং তখন থেকে বৌদ্ধ শ্মশান হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷
সরেজমিন, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের, রুমখা পশ্চিম বড়ুয়াপাড়া, রুমখাঁ মহাজন পাড়া, পশ্চিম মরিচ্য, রুমখাঁ গোরাচাঁন মাতবরপাড়া সহ ৪টি বৌদ্ধ গ্রামের একমাত্র শ্মশান ভুমিটি অন্তত: শত বত্সরের পুরোনো বৌদ্ধ শ্মশান বলে জানা যায় ৷ একই সাথে হিন্দু শ্মশান সহ একটি নব প্রতিষ্ঠিত পূর্ব লম্বরীপাড়া জামে মসজিদ নামে ৩টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সহাবস্থানে থাকলেও সম্প্রতি পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন জালিয়াপালংয়ের স্থায়ী বাসিন্দা মাহমুদুল হক অনধিকার চর্চা করে বৌদ্ধ শ্মশানটি অবৈধ দখলের চেষ্টা করে ৷ যার ফলে পূর্বের সীমানা পিলারের চিহ্নিত মতে শ্মশান রক্ষা তথা পবিত্রতার স্বার্থে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করে ৷ এদিকে উপজেলা প্রশাসনের এ ধরণের হস্তক্ষেপে বৌদ্ধ জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে ৷
হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মিন্টু বলেন, এটি একটি ২/৩শত বত্সরের পুরোনো বৌদ্ধ শ্মশান৷ শ্মশানের পবিত্রতা রক্ষার কাজে যারা বাঁধা দিচ্ছে তারা সম্পূর্ণ বেআইনী ভাবে করছে ৷ নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়ার বিষয়টি আমি পরে অবগত হয়েছি এবং খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান ৷ একই অভিমত ব্যক্ত করে স্থানীয় ইউ.পি সদস্য স্বপন শর্মা রনি বলেন, এটা জাফর মিয়ার পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, এটা সরকারী সম্পত্তি তথা শত বত্সরের পুরোনো বৌদ্ধ শ্মশান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে ৷
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) বলেন, তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন ৷
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে শ্মশানের পবিত্রতা রক্ষার্থে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে বাধা দেওয়ায় কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন শ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি ভুলু বড়ুয়া মাঝি, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বড়ুয়া, প্রবীণ ব্যক্তিত্ব ধীরেন্দ্র বড়ুয়া, পুরাতন রুমখাঁ বৌদ্ধ সমাজ সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির সকল সদস্য সহ বৌদ্ধ গ্রামের সকল উপাসক-উপাসিকা বৃন্দ ৷
আপলোড: ১ ডিসেম্বর ২০১৫: বাংলাদেশ : সময় : রাত ১০.৩০ মিঃ