বুধবার ● ৬ ডিসেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » আজ নবীগঞ্জ মুক্ত দিবস
আজ নবীগঞ্জ মুক্ত দিবস
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি :: (২২অগ্রহায়ন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১২.১৮মি.) আজ ৬ই ডিসেম্বর নবীগঞ্জ মুক্ত দিবস।১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব গাথা দিনগুলোর মধ্যে একটি দিন হল নবীগঞ্জ মুক্ত দিবস। সেদিন পূর্বাকাশের সুর্যোদয়ের সাথে সাথেই মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিন দের হটিয়ে দিয়ে মুক্ত করেছিল নবীগঞ্জ শহরকে।
৩দিনের সন্মুখ যুদ্ধের পর সেদিন সুর্যোদয়ের কিছুক্ষন আগে নবীগঞ্জ থানা সদর হতে পাক হানাদার বাহিণীকে সম্পূর্ণরূপে বিতাড়িত করে মুহমুর্হ গুলি ও জয় বাংলা শ্লোগানের মধ্যে বীরদর্পে এগিয়ে আসে কয়েক হাজার মুক্তিকামী জনতা। এ সময় মাহবুবুর রব সাদীর নেতৃত্বে থানা ভবনে উত্তোলন করা হয় বাংলাদেশের পতাকা। পরে স্থানীয় নবীগঞ্জ ডাকবাংলো সন্মুেখ হাজার হাজার জনতার আনন্দে উদ্বেলিত ভালবাসায় সিক্ত মাহবুবুর রব সাদী আবেগজড়িত কন্ঠে স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য বর্ননা করেন এবং ঐদিন বিকালে বাহিনীসহ সিলেট রওয়ানা দেন।
৬ ই ডিসেম্বর নবীগঞ্জ মুক্ত হওয়ার পূর্ব থেকেই মুক্তিযুদ্ধারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। বিভিন্ন সময় পাক বাহিনীর উপর গেরিলা হামলা চালিয়ে তাদের ভীত সন্ত্রস্থ করে রাখে মুক্তি সেনারা। কৌশলগত কারনে নবীগঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধারা নবীগঞ্জ থানা দখলের সিদ্ধান্ত নেয়। নবীগঞ্জে পাক বাহিনীর অন্যতম ক্যাম্প নবীগঞ্জ থানাকে লক্ষ্য করে তিনদিকে মুক্তিযুদ্ধারা অবস্থান নেয়। ৩ রা ডিসেম্বর রাত থেকে ক্ষনে ক্ষনে গুলি বিনিময় চলে উভয়ের মধ্যে। মুক্তিযোদ্ধারা কৌশলগত কারনে ও আত্মরক্ষার্থে কখনোও পিছু হটা,আবার কখনোও আক্রমন চালিয়ে পাক বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করতে থাকে।সারাদেশে পাক বাহিনীর অবস্থান খারাপ হওয়ায় নবীগঞ্জেও তাদের খাদ্য এবং রসদ সরবরাহ কমে যায়।
অন্যদিকে মুক্তিবাহিনী একেক সময়ে একেক দিক দিয়ে আক্রমন চালিয়ে যায়। ৪ ঠা ডিসেম্বর রাতে থানা ভবনের উত্তর দিকে রাজনগর গ্রামের নিকট থেকে মুক্তিযোদ্ধা রশিদ বাহিনী পাক বাহিনীর উপর প্রচন্ড আক্রমন চালায়। এ যুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর কিশোর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা ধ্রুব ৪ঠা ডিসেম্বর শহীদ হন এবং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। পরদিন ৫ ডিসেম্বর রাতে নবীগঞ্জ থানায় অবস্থিত পাক বাহিনী ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা চরগাঁও ও রাজাবাদ গ্রামের মধ্যবর্তী শাখা বরাক নদীর দক্ষিণ পাড়ে অবস্থান নেয়। প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপী প্রচন্ড যুদ্ধের পর শক্র বাহিনী পালিয়ে যায়। পরদিন ৬ ই ডিসেম্বর ভোর রাতে পাক বাহিনীর নিকট থেকে কোন বাধা না আসায় মুক্তিবাহিনী বীরদর্পে জয়বাংলা শ্লোগানের মধ্য দিয়ে থানা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে এবং বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে নবীগঞ্জ উপজেলাকে মুক্ত ঘোষণা করেন।