বৃহস্পতিবার ● ৭ ডিসেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » গাজিপুর » ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা শিশুর সন্তান প্রসব
ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা শিশুর সন্তান প্রসব
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (২৩ অগ্রহায়ন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩০মি.) গাজীপুরের শ্রীপুরে সাইটালিয়া গ্রামে মামার ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা এক শিশু (১২) ৬ ডিসেম্বর বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেছেন। বর্তমানে মা ও নবজাতক উভয়ই সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা জানান, বুধবার দুপুরে তার মেয়ের পেটে ব্যাথা শুরু হয়। রাতে পেটের ব্যাথা বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা আকতারকে জানানো হলে তিনি দ্রুত মেয়েটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে বলেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা যোগে মেয়েটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়।
শ্রীপুর উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা মঈনুল হক খান জানান, হাসপাতালে আনার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে জরুরি বিভাগের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। রাতে হাসপাতালে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. হাবীবা সুলতানা ও সিনিয়র স্টাফ নার্স অঞ্জনার তত্ত্বাবধানে মেয়েটি স্বাভাবিকভাবে (নরমাল ডেলিভারি) একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে। নবজাতকের ওজন ২.৫ কেজি। নবজাতকসহ মা এখন সুস্থ আছেন। আশা করা যাচ্ছে শুক্রবার অথবা শনিবার নবজাতকসহ মেয়েটি বাড়ি ফিরতে পারবেন।
মেয়েটির বাবা আরও জানান, হাসপাতালে আনার পর থেকে ইউএনও সার্বক্ষণিক নবজাতক ও মেয়ের খোঁজ খবর রাখছেন। এর মধ্যে নবজাতককে নতুন জামা কাপড়ও কিনে দিয়েছেন ইউএনও।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা আকতার জানান, ১২ বছরের মেয়ে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের নির্দেশে মেয়েটির চিকিৎসা, আইনি সহায়তা, শিক্ষা ও ভরণপোষণসহ সব ধরনের দায়িত্ব নেন জেলা প্রশাসন। খবর পেয়ে বুধবার রাতে হাসপাতালে গিয়ে তাকে ভর্তিসহ যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শ্রীপুর থানার এসআই মো. এখলাছ উদ্দিন জানান, ১২ বছর বয়সী এই মাদ্রাসাছাত্রী মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার পথে তার আপন মামা হুমায়ুন (৩০) ও হুমায়ুনের খালাত ভাই আমান উল্ল্যাহ (২৬) ভয়ভীতি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ভয়ে এ ঘটনা সে কাউকে বলেনি। পরে শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন দেখে স্বজনরা ঘটনা উদঘাটন করেন।
মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই এখলাছ উদ্দিন বলেন, হুমায়ুনকে ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর আমান উল্ল্যাহকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর ধর্ষণে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে আমান উল্ল্যাহকে (২৬) আসামি করে মেয়েটির মা শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলা তদন্তে ঘটনার সঙ্গে মেয়েটির আপন মামা হুমায়ুন কবিরের (৩০) সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত আমান উল্ল্যাহকে গ্রেফতার করতে না পারলেও উপজেলার সাইটালিয়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে হুমায়ুন কবিরকে গত ১৯ নভেম্বর রাতে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে শ্রীপুর থানা পুলিশ।