রবিবার ● ১০ ডিসেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » ১০৭ রোহিঙ্গা এইচআইভি শনাক্ত: ৮ জনের মৃত্যু
১০৭ রোহিঙ্গা এইচআইভি শনাক্ত: ৮ জনের মৃত্যু
উখিয়া প্রতিনিধি :: (২৬ অগ্রহায়ন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৪৭মি.) কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রীত রোহিঙ্গাদের মাঝে এইচআইভি’র পর এবার নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ডিপথেরিয়া রোগ। এ পর্যন্ত ডিপথেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৪শ জনের অধিক রোহিঙ্গা শিশু। ১০ ডিসেম্বর রবিবার পর্যন্ত এদের মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে জানা গেছে । সংক্রামক এই ব্যাধি থেকে রক্ষা করতে রোহিঙ্গাসহ স্থানীয়দের মাঝে প্রতিষেধক টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. আবদুস সালাম।
সিভিল সার্জন বলেন, রোহিঙ্গাদের মাঝে আজ পর্যন্ত ৪০৮ জন ডিপথেরিয়া রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তাদেরকে এমএসএফ হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সংক্রামক ব্যাধি ডিপথেরিয়া আক্রান্তের হাঁচি, কাশির মাধ্যমে খুব দ্রুত অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির গলার পেছন দিকে সরু পর্দা তৈরি হয়। এতে শ্বাসকষ্ট, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, পক্ষাঘাতসহ এমনকি মৃত্যু ঘটে।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজবাহ উদ্দিন বলেন, ডিপথেরিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া যে বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন করে তা শ্বাসতন্ত্রের বিশেষ করে নাক ও গলার টিস্যুকে নষ্ট করে দেয়। ডিপথেরিয়ার লক্ষণগুলো দেখা যায় ইনফেকশন হওয়ার দুই থেকে সাত দিন পরে। ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১০০. ৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার জ্বর থাকে। ক্লান্তি ও শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। গলা ব্যাথা হয়। গলার গ্রন্থি ফুলে যায়। ঢোক গিলতে সমস্যা ও ব্যাথা হয়। অনেক বেশি কাশি হয়। শিশুরাই মূলত: এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
এই রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রথমে অ্যান্টিটক্সিন ইনজেকশন দিয়ে ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে হয়। এছাড়াও ইরাথ্রোমাইসিন ও পেনিসিলিনের মত এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয় ইনফেকশন দূর করার জন্য। যেহেতু এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ তাই ডিপথেরিয়া আক্রান্ত রোগীদের আলাদা রাখা হয়।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. আবদুস সালাম বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার উখিয়ার ৪৮টি ও টেকনাফের ১২টি ভ্রাম্যমাণ ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের মাঝে ডিপথেরিয়ো রোগের প্রতিষেধক টিকা দেওয়া হবে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা: শাহীন আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ১০৭জনের এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে। আশার আলো’র তত্ত্বাবধানে এদের চিকিৎসা সেবা চলছে। এ পর্যন্ত এইচআইভি আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও তিনি জানান।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী রবিন বলেন, এ পর্যন্ত ডিপথেরিয়া রোগে ৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ রোগে আক্রান্ত সকল রোগীদের বালুখালী-১ ক্যাম্পে এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সেই সাথে রোগটি যাতে কোন ভাবে আমাদের দেশের মানুষের মাঝে ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে ক্যাম্পে কর্মরত সকলের সচেতনতাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।