বুধবার ● ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » রাষ্ট্রপতির কাছে ফজল খানের খোলা চিঠি
রাষ্ট্রপতির কাছে ফজল খানের খোলা চিঠি
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (২৯ অগ্রহায়ন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১০.৫৭মি.) সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া এক কালের খড়স্রোতা ‘বাসিয়া নদী’ সঠিক সীমানা নির্ধারণ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ পূর্বক পুনঃখননের দাবিতে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ’র কাছে খোলা চিঠি প্রেরণ করেছেন বাঁচাও বাসিয়া ঐক্য পরিষদের আহবায়ক ফজল খান। সেই চিঠিটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
খোলা চিঠি
শ্রদ্ধেয় মাননীয় রাষ্ট্রপতি, পত্রের শুরুতে সালাম গ্রহণ করুন। আমি আপনার বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক সিলেট জেলা, বিশ্বনাথ উপজেলা, ৭নং দেওকলস ইউনিয়নের মৃত জবেদ আলী খানের ছোট ছেলে মো. ফজল খান। আমি আমার বিশ্বনাথ উপজেলা, সদর উপজেলা, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা, ওসমানীনগর উপজেলা ও জগন্নাথপুর উপজেলার মধ্যদিয়ে বয়ে বাসিয়া নদীর কিছু জরুরী সমস্যার কথা তুলে ধরতে চাই।
সুরমা নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে বাসিয়া নদী ৫টি উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে কুশিয়ারা নদীতে মিলিত হয়েছে। নদীটির প্রসস্থ ২০০ ফুট কম/বেশি এবং দৈর্ঘ্য ৪২ কিলোমিটার। এই নদীটি আমাদের একমাত্র অবলম্বন। পানির প্রয়োজন ধান চাষে, সবজি চাষে, মৎস্যজীবি মানুষের এবং টিউবওয়েলের পানি পান করা’সহ আমাদের শেষ সম্বল। কিন্তু বর্তমানে নদীটির প্রসস্থ ৫০/৬০ ফুটফুটে দাঁড়িয়েছে। এর কারণ অবৈধ দখল করে বড় বড় দোকান ঘর নির্মাণ ও ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য নদীটি এখন নালায় পরিনত হয়ে ড্রেন হয়ে পরে আছে। এখন বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। একটু বৃষ্টিতেই ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়। আবার শীতের মৌসুমে নদীতে পানি থাকে না। আমরা নদীটি পূর্ণ উদ্ধার করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল মুহিত, পানি সম্পদ মন্ত্রী, দুদক, বিভাগীয় কমিশনার, স্থানীয় এমপি, সাবেক এমপি, সিলেট জেলা প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)’কে দফায় দফায় লিখিত স্মারকলিপি দিয়েছি এবং বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন, মতবিনিময়, সভা, সংবাদ সম্মেলন করে আসছি। সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী মহোদয়ের উদ্যোগে ২০১৩-২০১৫ সালে ১৮ কিলোমিটার খনন করা হয়েছে। বর্তমানে ২০১৬-২০১৭ সালে সিলেট-২ আসনের এমপি মাননীয় ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়া মহোদয়ের উদ্যোগে ৭ কিলোমিটার খনন কাজ চলমান আছে। এর মধ্যে বিশ্বনাথ উপজেলো প্রশাসন ১৮৭ জনের ২১৭ টি অবৈধ দখল দোকান ঘরের তালিকা তৈরি করে একটি উচ্ছেদ মামলা (মামলা নং ৪/১৭) করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দখলদারা নোটিশ পেয়ে হাইকোর্টে রিট করে ৬ মাসের স্থগিত আদেশ করানো হয়েছে। হাইকোর্টে আমাদের প্রশাসনের কাছে জবাব চেয়েছেন। প্রশাসন হাইকোর্টের জবাব দিয়েছেন চলতি বছরের অক্টোবর মাসে।
এদিকে আমাকে এই আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করা হয়েছে। মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি বিশ্বনাথ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছি। ওরা প্রভাবশালী অবৈধ দখলবাজ থাকায় কেউ ভয়ে কথা বলছে না। ওদের কালো টাকার কাছে অনেকেই অন্ধ। তাই আমি জনস্বার্থে প্রাণ দিতে প্রস্তুত হয়ে এই দাবি তুলে ধরছি। আমার আকুল আবেদন রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী যেন সঠিক ভাবে আদালতে উপস্থাপন করেন এবং বিচার বিবেচনা করে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে আদালত আদেশ প্রদান করেন এটাই আমাদের কাম্য। যাহাতে টাকার কাছে আইনের কেউ বিক্রি না হন। পরিশেষে আপনার সু-স্বাস্থ্য কামনা করছি। ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
ইতি
মো. ফজল খান
আহবায়ক, বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদ।
বিশ্বনাথ, সিলেট।