শুক্রবার ● ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » রাজশাহী বিভাগ » বেলকুচির পৌর মেয়রের মিথ্যাচার : কাউন্সিলদের সংবাদ সম্মেলন
বেলকুচির পৌর মেয়রের মিথ্যাচার : কাউন্সিলদের সংবাদ সম্মেলন
বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :: (১ পৌষ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.১০মি.) সিরাজগঞ্জের বেলকুচি পৌরসভায় কথিত অফিস ভাংচুর ও মেয়রকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় মামলা দায়ের পৌর মেয়রের মিথ্যাচার বলে দাবী করে সংবাদ সম্মেললে করেছেন পৌর প্যানেল মেয়র ইকবাল রানা সহ ৮ কাউন্সিলর। পৌর মেয়রের অফিস কক্ষ ভাংচুর ও চাঁদাবাজীর মামলাটি পরিকল্পিত মিথ্যা ও বানোয়াট। নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই মূল সত্য বেড়িয়ে আসবে বলেও তারা দাবী করে। তবে মেয়র জানালেন তাকে উদ্দেশ্য করে গুলির ঘটনা না ঘটলেও পৌর ক্যম্পাসের বাইরে সন্ত্রাসীরা ২ রাউন্ড ফাকা গুলি করেছে বলে তিনি শুনেছেন। আর এর পরেই পৌরসভার মেয়রের কক্ষ ভাংচুর করে সন্ত্রাসীরা এমন দাবী করেন মেয়র।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌরসভার কাউন্সিলরদের কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন চলাকালে কাউন্সিলররা আরো বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর বেলকুচি ডিগ্রী কলেজে কলেজের কথিত ভিপি মিঠু বিশ্বাস ও রেদোয়ান বিশ্বাস একই কলেজের শিক্ষার্থী ভাঙ্গাবাড়ী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন প্রমানিকের ছেলে শাকিলকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে কলেজ থেকে বের করে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে তার সহপাঠি সহ অন্যান্যরা মিঠু বিশ্বাসের কাছে গেলে তিনি এ সময় পালানোর চেষ্টা করেন। পরে তিনি ধাওয়া খেলে পৌরসভা চত্বরে ঢুকে পড়েন। ধাওয়াকারীরাও তার পিছু নিয়ে পৌরসভার মধ্যে ঢুকে পড়ে। এ সময় ধাওয়াকারীরা উত্তেজিত হয়ে পড়লে বেলকুচি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান বিষয়টি সমঝোতা করে ধাওয়াকারীদের ফেরত পাঠিয়ে দেয়। তবে এ সময় কোন ভাংচুরের বা গুলির কোন ঘটনা এখানে ঘটেনি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে পৌর মেয়র তার কাছে চাঁদাবাজি ও তাকে লাঞ্ছিত করার দাবী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তদন্ত করলে আসল সত্য বেড়িয়ে আসবে। এ সময় কাউন্সিলরা আরো বলেন, পৌরসভার কোন কাজেই কাউন্সিলদের মূল্যায়ন করা হয়না। মেয়র স্বৈর শাসনের মাধ্যমে যা খুশী তাই করেন।
সংবাদ সম্মেলন চলাকালে পৌর মেয়র আশানূর বিশ্বাস পৌর ভবনের কাউন্সিলরদের কক্ষে এসে উপস্থিত সাংবাদিক সহ কাউন্সিলদের সাথে অশালীন আচরন করেন। পরে তিনি তার বক্তব্যও সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন।
পৌর মেয়র আশানূর বিশ্বাস জানান, ঘটনার সুত্রপাত তার পারিবারিক কারনে। মূল অভিযুক্ত উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা তার মেয়ের জামাই সাজেদুলের ছোটভাই। পৌরসভায় রেজার স্ত্রী’র চাকরী দেয়া ও রেজাকে বিভিন্ন সময়ে পৌরসভার ঠিকাদারী কাজ না দেয়াকে কেন্দ্র করেই রেজা তার উপর ক্ষিপ্ত। সে কারনেই গত ১২ তারিখে রেজা ও তার সহযোগীরা পৌরসভায় ঢুকে ভাংচুর ও তার উপর আক্রমন করতে তার কক্ষের দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। কিন্তু দরজা ভাঙ্গতে না পারায় তিনি প্রানে বেঁচে যান। তবে পৌরসভায় কোন গুলির ঘটনা ঘটেছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পৌরসভার বাইরে তিনি গুলির শব্দের কথা শুনেছেন। তবে পৌর ক্যাম্পাসের মধ্যে কোন গুলির ঘটনা ঘটেনি। গুলির ঘটনা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কেন তিনি তার প্রতিবাদ করেননি সে প্রশ্নের কোন জবাব দেননি তিনি।
পৌর ভবন ভাংচুরের ঘটনায় পৌরসভার কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীও কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, দু’পক্ষের বিবাদের কারনে তারা ভীত সন্ত্রস্ত্র। তবে স্থানীয়রা জানায়, বিগত সময় থেকেই পৌর মেয়র তার পরিবারের লোকজনদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত করতে নানা কুট কৌশলের আশ্রয় নেন। এর আগেও মেয়রের সাথে পৌর কাউন্সিলদের বিরোধের সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় তার নিষ্পত্তি হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, মামলা দুটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।