শনিবার ● ৬ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » জাতীয় » শীতে কাতর ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ : ২ জনের মৃত্যু
শীতে কাতর ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ : ২ জনের মৃত্যু
মো. আসাদুজ্জামান শামিম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :: (২৩ পৌষ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৫৭মি.) হিমালয়ের হিমেল ঠান্ডা বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বেড়ে গিয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে। গত ৩ দিন ধরে এখানে দিনের বেলায় সুর্য দেখা গেলেও বাতাস অনেক ঠান্ডা হওয়ার কারণে হাত, পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে মানুষের। এ কারণে শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ কাজে যেতে না পেরে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। শনিবার ঠান্ডাজনিত কারনে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
হিমালয়ের পাদদেশের জেলা ঠাকুরগাঁও। পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলা উত্তরের সর্বশেষ জেলা ও হিমালয়র অনেক কাছে হওয়ায় এখানে শীতের তীব্রতা প্রতি বছরই বেশি হয়। অন্যান্য বছর নভেম্বরের শেষে শীতের দাপট শুরু হলেও এ বছর জানুয়ারির শুরুতে শীতের দাপট শুরু হয়েছে। চলতি বছরের শীতের প্রথম আঘাত এটি। এদিকে গত মঙ্গলবার থেকে দিনের বেলায় সুর্যের মুখ দেখা গেলেও হিমেল বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। বুধবার থেকে বাতাসের আর্দ্রতা ২৪ থেকে ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ওঠানামা করেছে বলে জানায় জেলা কৃষি বিভাগ।
প্রচন্ড শীতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু পাখিও ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত চারদিক কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে। রাতে বৃষ্টির ন্যায় ঝিরঝির করে কুয়াশা ঝরছে। প্রচন্ড শীতে সাধারণ মানুষ কাজে যেতে পারছে না। শ্রমিক শ্রেণীর এসব মানুষ সন্তান পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে। দিনের বেলাতেও মাঝে মধ্যো হেড লাইট জ্বালিয়ে বিভিন্ন যানবাহনকে চলাফেরা করতে হচ্ছে। ঠাকুরগাঁওয়ে ঠান্ডাজনিত কারনে আজ শনিবার পুরাতন ঠাকরগাঁও মৃত মোবারক আলীর স্ত্রী জহুরা (৭০) ও শহরের গেয়ালপাড়া মহল্লার মৃত দবিরুলের স্ত্রী সখিনা (৯০) এর মৃত্যু হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানাযায়, শীতের হাত থেকে শীতার্তদের বাঁচাতে জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে ৩৫ হাজার কম্বল পেয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৪ হাজার ১৭৭ পিস কম্বল পেয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রাপ্ত কম্বল জেলার ৫ উপজেলা ও ৩ পৌর এলাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনো কোন ইউনিয়নের গ্রাম পর্যায়ে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়নি। সাধারণ মানুষ অভিযোগ করে বলেন, শীত পালাইলে কি হামাক কম্বল দিবে সরকার। এদিকে শীতে বোরোর বীজতলা রক্ষার্থে ইতোমধ্যে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান কৃষি বিভাগ।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রতিনিধিকে জানান, জেলার শীতার্ত মানুষের শীত নিবারনের জন্য ইতোমধ্যে ৫০ হাজার পিস কম্বল চেয়ে মন্ত্রনালয়ে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্ত কিছু কম্বল ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ি কম্বল পাওয়া গেলে হয়তো কিছু মানুষকে শীতের কবল থেকে রক্ষা করতে পারবো। বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আরো কম্বল বিতরণ করা হবে। তিনি জেলার বিত্তবান ব্যক্তিদের শীতার্তদের পাশে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।