বুধবার ● ১০ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » সিলেট নগরী যেন হকার রাজ্য
সিলেট নগরী যেন হকার রাজ্য
সিলেট প্রতিনিধি :: (২৭ পৌষ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৩৬মি.) হকার উচ্ছেদে পুরো বছর চেষ্টা করেও পুরোপুরি সফল হতে পারেননি সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। হকার আর আরিফ চৌধুরীর মাঝে চলছে চোর পুলিশের খেলা, দিনে সিসিক মেয়র আরিফের একশ্যন আর রাতে হকারদের প্রদর্শনী।
এভাবেই কেটেছে পুরো বছর, স্থায়ীভাবে সমাধান হয়নি ফুটপাত দখল সমস্যার সমাধান। নিয়ন্ত্রন করা যায়নি হকারদের, বরং আরো বেপরোয়া হয়েছে হকারদের ফুটপাত দখলের দৌরাত্ব। আদালতের নির্দেশ আর বছর জুড়ে সিসিক মেয়র আরিফের উচ্ছেদ অভিযান এত কিছুর পরও কি দখল মুক্ত হলো সিলেটের ফুটপাত?
সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, দিনে ফুটপাত কিছুটা দখলমুক্ত থাকলেও রাতে হকাররা নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো দখল করে নেয়। ফলে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ।
সময় তথা রাতের সাতে পাল্লা দিয়েই বাড়ে হকারদের ফুটপাত ও রাস্তা দখল আর এভাবেই সিলেট নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ফুটপাত দখল করে নিচ্ছে হকাররা। দেখলে মনে হয় সিলেট যেন হকার রাজ্য, হকাররা জুড়ে থাকে সিলেটের গুরুত্বপুর্ণ ফুটপাত এমনকি রাস্তাও আর পথচারী ও যানবাহন চলছে তার গ্যাপ দিয়ে।
ফলে বাড়ছে জনজীবনে ভোগান্তি, সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। একাধিক পথচারীর অভিযোগ, যেখান দিয়ে সাধারণ জনগণ চলাচলের কথা সেই রাস্তা হকাররা বিভিন্ন দোকান বসিয়ে দখলে নিয়েছে। ফলে জনগণ ফুটপাত ব্যবহার না করে মেইন সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতে জনগনকে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে যানজট লেগে রয়েছে তার অন্যতম কারন হকারকর্তৃক ফুটপাত দখল।
করিমউল্লাহ থেকে মার্কেট-কুদরত উল্ল্যা মার্কেট এদিকে পুরান পুল থেকে কোট পয়েন্ট, হাসান মার্কেট- মধুবন সুপার মার্কেট, মার্কেট গুলোর সামন যেন হকার রাজ্য, এছাড়াও রাস্তার অনেক অংশে ফেরিওয়ালারা বিভিন্ন দ্রব্যমূল্য বিক্রি করছে।
সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সিটি কপোরেশনের ভয়ে হকার ও ভ্রাম্যমান ফেলিওয়ালা কম দেখা গেলেও সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে দখলদারিত্ব বেড়ে যায় হকার ও ভ্রাম্যমান ফেলিওয়াদের। ফলে ফুটপাত দিয়ে যাওয়াতো দুরের কথা রাস্তা সাইট দিয়ে হাটা যাওনা। ফলে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে হয় রাস্তার মাঝ দিয়ে জান হাতে নিয়ে, যার কারনেই সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।
সন্ধ্যা ও রাতে সিলেট নগরীকে দেখে মনে হয় হকারদের দখলকৃত রাজ্য। এমন চিত্র দেখে স্বভাবত মনে প্রশ্ন জাগে আদালতের আদেশ ও সিসিক মেয়র আরিফের উচ্ছেদ অভিযানকে বৃদ্ধাগুলি দেখানো হকারদের খুটির জোর কোথায়, আর এই নেপথ্য খুটির জোর কি এতই বেশী শক্তিশালী যে তাদের কাছে সবই আসহায়।
হকারদের এই কর্মকান্ডে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। নগরীর এমন কোনো স্থান নেই যে স্থানে হকাররা বসে না, রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে অসুবিধা, যানজট সৃষ্টি করা থেকে সব কিছুতেই এগিয়ে হকাররা।
অথচ সিসিক এর পক্ষ থেকে দেওয়ালে লাগানো হয়েছে পোষ্টার যেখানে লেখা রয়েছে “হকারদের বসা নিষেধ” সেখানেও হকাররা বসে ব্যবসা করছে। কোথাও কোথাও এসব পোষ্টার ছিড়ে ফেলা হয়েছে।
গত বছর অলোচনার শীর্ষে ছিল নগরীর ফুতপাত দখল ও উচ্ছেদ অভিযান, বছরজুড়েই সিলেটবাসী ভোগান্তিতে ছিলো ফুটপাত নিয়ে। ফুটপাত নিয়ে নগরবাসীর ভোগান্তি আর আরিফের ‘ব্যর্থতা’য় শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালতের নির্দেশে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে মেয়র আরিফ এবং কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গৌছুল হোসেনকে নিয়ে কমিটিও গঠন করা হয়।
বিগত বছরজুড়ে পুরো নগরীর ফুটপাতগুলো ছিলো হকারদের দখলে। কিছু কিছু জায়গায় ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তার দখল ছিলো হকারদের। মেয়র আরিফ হকারদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিলেও উচ্ছেদ করতে পারেননি হকারদের।
একদিকে মেয়রের তাড়া খেয়ে, কিছুক্ষণ পর তারা আবার ফুটপাত দখল করে নেয়। এটাকে মেয়রের ‘ব্যর্থতা’ হিসেবে দেখেছেন সিলেটবাসী।
ফুটপাতকে দখলমুক্ত করার দাবীতে কয়েকটি সামাজিক সংগঠন সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেছে এবং জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন। মেয়র আরিফও ফুটপাতকে দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের পাশাপাশি নগরবাসীর সহায়তা চেয়েছিলেন। কিন্তু সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। আর এ ব্যর্থতা নির্ধারনের জন্য কোন প্রমানের প্রয়োজন নেই। সন্ধ্যার পর সিলেটের ফুটপাত পরিদর্শনে গেলেই বুঝা যায়।