রবিবার ● ১৪ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » ঠাকুরগাঁওয়ে শীত নিবারনে আগুন পোহাতে গিয়ে পুড়ে আহত-২০
ঠাকুরগাঁওয়ে শীত নিবারনে আগুন পোহাতে গিয়ে পুড়ে আহত-২০
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :: (১ মাঘ ১৪২৪ বাঙলা : বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৫৭মি.) ঠাকুরগাঁওয়ের ৫/৬ দিনের কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় শীতের দাপটে সাধারণ মানুষ কাতর। আর এই ঠান্ডা থেকে রক্ষার জন্য আগুন পোহাতে গিয়ে পুরে গিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও শহরের প্রায় ২০ জন ইতিমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ, হাত, কেউ পা, কেউবা আবার শরীরের বিভিন্ন অংশ আগুনে পুড়িয়ে ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। এদের মধ্যে রয়েছে বৃদ্ধ, শিশু ও দিনমজুর।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে ঠাকুরগাঁওয়ে তাপমাত্রা ৩ থেকে ১৫ ডিগ্রীতে উঠানামা করছে। আর হিমেল হাওয়ার কারনে শীতের তীব্রতাটাও বেশি। এই শীতে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। নিন্ম ও খেটো খাওয়া মানুষরা অন্নহারে-অনাহারে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছে। সেই সাথে ঠান্ডার প্রকৌপে বৃদ্ধ-শিশুরাও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। শিশুদের ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে।
শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে আগুন পোহাতে গিয়ে গত কয়েকদিনে প্রায় ২০ জনকে আগুনে পুরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখা যায়। এদের মধ্যে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ছিট চিলারং গ্রামের শরিফা খাতুন (৮০), বগুড়া পাড়ার হাবিবা (২০ মাস), গোয়ালপাড়া মহল্লার আব্দুল মান্নান (৫০), মহেষপুর গ্রামের ইজার উদ্দিন (৬৫), কিসমত কেশুরবাড়ী গ্রামের আখি (২১), বিশ্বাসপুর গ্রামের আরজিনা (৪), শহরের আশ্রমপাড়া মহল্লার মফিজুল (৪৮), বালিয়াডাঙ্গীর জবা (৫), পাশ্ববর্তী পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার আমিনা (২০), দেবীপুর উপজেলার আজিজুল হক (৬৫), দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গার আরজিনা (২৮), ঠাকরগাঁও সদর উপজেলার বিহারীপাড়ার শরিফা (৯ মাস), দৌলতপুরের বানু বেগম (৩৮), বালিয়াডাঙ্গীর ভানোর গ্রামের নয়ন (২৮ ও পাশ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ মাহানপুরের দেবী (৪) সহ প্রায় ২০জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তবে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে পুরে যাওয়া রোগীর জন্য আলাদা কোন বার্ন ইউনিট না থাকায় প্রয়োজনমত চিকিৎসা না পেয়ে এদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে রেফার্ড নিয়ে রংপুর ম্যাডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে গেছেন।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আর.এম.ও) সুব্রত কুমার সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রতিনিধিকে জানান, ঠান্ডাজনিত কারনে গত কয়েকদিন শিশুদের সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যথা, এ্যকোনিউমোনিয়া, ফ্যারেনজাইটিস, অ্যালাজি, ইত্যাদি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তবে সাথে রয়েছে শীতের তীব্রতা থেকে বাচতে আগুন পোহাতে গিয়ে পুরে যাওয়া রোগীরাও। কয়েকদিনে কমপক্ষে ২০ জন আগুনে পুরে যাওয়া রোগী ভর্তি হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম এর প্রতিনিধিকে জানান, শীত নিবারনে আগুন পোহানোর ব্যাপারে জেলার সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারফত চেয়ারম্যানদের সতর্কবানী প্রদান করা হবে বলে জানান। এছাড়াও তিনি জানান, জেলার শীতার্ত মানুষের শীত নিবারনের জন্য ইতোমধ্যে ৫০ হাজার পিস কম্বল চেয়ে মন্ত্রনালয়ে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৩৫ হাজার পিস কম্বল বিতরন করা হয়েছে। বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আরো কম্বল বিতরণ করা হবে। তিনি জেলার বিত্তবান ব্যক্তিদের শীতার্তদের পাশে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।