শনিবার ● ২০ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ১৫টি পরিবার গৃহহারা : দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রী
সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে ১৫টি পরিবার গৃহহারা : দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রী
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (৭ মাঘ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৪৩মি.) বিশ্বনাথে সুরম নদী অব্যাহত ভাঙ্গনে গত দু’সপ্তাহে নতুন করে ১৩টি পরিবার গৃহহারা হয়েছে। নদী ভাঙ্গনে মাথা গোজাঁর ঠাঁই হারিয়ে গৃহহারা হয়েছেন লামাকাজী ইউনিয়নের মাহতাবপুর ও শাহপুর গ্রামের এপর্যন্ত প্রায় শতাধিক পরিবার। ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের দূর্ভোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাহতাবপুর গ্রামের মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে প্রায় শতাধিক পরিবারের বসতঘর। যেকোন সময় এসব ঘরগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এছাড়া ধীরে ধীরে পুরো গ্রামই নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে।
এদিকে, আজ শনিবার পানি সম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট আসছেন এমন সংবাদ পেলে মাহতাবপুর এলাকার কয়েক শতাধিক মানুষ বিকেল ২টা থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে মন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত ৭টায় মন্ত্রী মাহতাবুর পৌঁছলে লোকজন মন্ত্রীকে স্বাগত জানান এবং নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ করলে মন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে পড়েন এবং উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দ্রুত প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস প্রদান করেন। এসময় মন্ত্রীকে অভিনন্দন ও মাহতাবপুর এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের আহবান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া। এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসুদ্দোহা পিপিএম, উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক এ কে এম দুলাল, ইউপি সদস্য কাঞ্চন কুমার চক্রবর্তী, হেলাল আহমদ ও সাবেক মেম্বার গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ।
গতকাল শনিবার সরেজমিন মাহতাবপুর এলাকায় গেলে ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, ২০০০ সাল থেকে এপর্যন্ত প্রায় শতাধিক বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। গৃহহারা পরিবারগুলো অন্যত্র বাড়িঘর তৈরী করলেও নদীর ভাঙ্গন থেকে তারা রক্ষা পাচ্ছেন না। ধীরে ধীরে সেই সব বাড়ি-ঘর ও বিলীন হয়ে যাচ্ছেন। ফলে গৃহহারা হয়ে পড়েছেন অনেক পরিবার। আতংকে রয়েছেন পুরো গ্রামবাসী। কয়েক বছর পূর্বে মাহতাবপুর গ্রামের পশ্চিম দিকে নদী ভাঙ্গন রোধে ব্লক বসানো হয়। এরপর পূর্ব দিকে ভাঙ্গন বাড়তে থাকে। ২০০৯ সালের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে মাহতাবপুর, শাহপুর, কবরস্থান, একটি মাজার, মসজিদ, গোলচন্দ বাজার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। গত দ্ইু সপ্তাহে গ্রামের জিয়াউল হক, আমজাদুল হক, সমছুল হক, রুশন আলী, আছকর আলী, মুসা মিয়া, জামাল উদ্দিন, আব্দুল ওয়াহিদ, আবুল লেইছ, আব্দুল গফ্ফার, লাজিদ মিয়া, মোহাম্মদ আলী ও আব্দুস শহিদ পরিবার নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ফলে পুরো গ্রামের লোকজনের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো নিয়ে গৃহকর্তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। এসব পরিবারের কথা চিন্তা করে জরুরী ভিত্তিতে নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
নদী ভাঙনে খবর পেয়ে আজ শনিবার বিকেলে এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসুদ্দোহা পিপিএম, স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল মিয়া প্রমুখ।