শুক্রবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » চাটমোহরে কোচিং ব্যাণিজ্যর নামে শিশু নির্যাতন
চাটমোহরে কোচিং ব্যাণিজ্যর নামে শিশু নির্যাতন
চাটমোহর প্রতিনিধি:: পাবনার চাটমোহর উপজেলার প্যারামাউন্ট কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা মধ্যযুগীয় কায়দায় আলী ইমাম মিঠু (১২) নামের এক শিশু শিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে মারধর শারীরিক নির্যাতন করার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েও সুষ্ট তদন্ত ও সুনির্দিষ্ট বিচার না পাওয়ায় মিথ্যাচার করায় ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক সংবাদ সম্মেলন করেছে ৷ ৪ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকাল ৪টায় উপজেলার রেলবাজার ওই অভিভাবকের বাসায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷
সংবাদ সম্মেলনে অভিভাবক ঠিকাদার মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, প্যারামাউন্ট কোচিং সেন্টার একটি ভালো কোচিং সেন্টার, এই প্রতিষ্ঠানে ভালো কোচিং হয়, এমন প্রচারে প্রায় তিন মাস পূর্বে আবাসিক ভাবে আমার ছেলে আলী ইমাম মিঠুকে ভর্তি করি৷ মিটু নিয়োমিত ভাবেই লেখাপড়া করছিল৷ কিন্তু গত ২৮ নভেম্বর ইংরেজী ক্লাস চলাকালিন সময়ে মিঠু বেঞ্চের পাশ দিয়ে পা টান করা নিয়ে ইংরেজী শিক্ষক সৃজন এলাহী বেত দ্বারা অসংখ্য আঘাত করে এবং সন্ধাকালীন সাধারণজ্ঞান ক্লাসে গাইড বই হারানোকে কেন্দ্র করে মিঠুকে প্যারামাউন্ট কোচিং-এর পরিচালক হাসান মোহাম্মদ শাহরিয়ার ২য় দফা বেত দ্বারা অসংখ্য আঘাত করে মারাত্নক ভাবে থেতলা যখম করে, এসময় সে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে৷ বিষয়টি জানার পর আমি সেখানে গেলে প্রতিষ্ঠানের আরেক পরিচালক হাসান মোহাম্মদ শাহরিয়ারের স্ত্রী শীলা আমার সাথে চরম দুর্ব্যবহার করেন৷ আমি আমার ছেলেকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিত্সা করাই৷ কিন্তু কোচিং কর্তৃৃপক্ষ এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেন নাই৷ এতে আমি মিঠুর বাবা আব্দুল মান্নান চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেগম শেহলী লায়লান নিকট লিখিত অভিযোগ প্রদান করি এবং তাকে মিঠুর শরীরের আঘাতের চিহৃ দেখানো হয়৷ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয়কে দায়িত্ব দেন৷ শুনেছি এক সাংবাদিককে সাথে নিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) গত ১-১২-২০১৫ ইং সন্ধায় প্যারামাউন্ট কোচিং এ গিয়ে তদন্ত করেছেন৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আমাকে অবগত করানো হয়নি৷ সহকারী কমিশনার (ভূমি)র সাথে যাওয়া সাংবাদিকের সম্পাদনায় চাটমোহর থেকে প্রকাশিত দৈনিক চলনবিল পত্রিকায় প্রকাশিত সাংবাদের প্রতিবাদের নামে প্যারামাউন্ট ক্যাডেট একাডেমীর পরিচালক নামধারী শারমীন জাহান শীলা ব্যাপক মিথ্যাচার করেছেন৷ প্রতিবাদের নামে আমার মানহানী করা ছাড়াও আমার ছেলের আঘাতের চিহ্ন নাকি দাউদের চিহ্ন ৷ আমার ছেলে নাকি দুষ্টু ও অমনোযগী৷ অথচ কথিত পরিচালক আমাকে এব্যাপারে কিছুই জানাননি৷ শিক্ষা বাণিজ্যর এই হোতারা মিথ্যে, চমকপ্রদক বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ অভিভাবকদের প্রলূব্ধ করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন৷ প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় ও মাষ্টান পুষে এই পরিচালক অভিভাবকদের কবজা করছে৷ পরিচালক শারমীন জাহান শীলা আমার অভিযোগ মিথ্যে বলে হাস্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন৷ এছাড়া গতকাল শুক্রবার প্যারামাউন্ট কোচিং সেন্টারের আবাসিক রুম থেকে আমার ছেলে মিঠুনের বেডিংপত্র আনতে গেলে ওই কোচিং-এর শিক্ষক পরিচালক মিঠুর আম্মুর সাথে খারাপ আচারণ করে৷ রুম থেকে মিঠুর বেডিংপত্র নিচে ফেলে দেয় এবং বিভিন্ন হুমকি ও ভয়ভিতি দেখায়৷ এব্যাপারে আমি সুষ্ট তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি৷ এই সাথে কথিত কোচিং সেনটারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গহণের দাবি জানান৷ উক্ত সংবাদ সম্মেলনে প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল জলিল, মূলগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেব আলী মাষ্টার, সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা শরিফুল্লাহ সাচ্চু, মাহমুদুর রহমান মাহমুদ এবং আলী ইমাম মিটু ও তার মা উপস্থিত ছিলেন৷