শুক্রবার ● ২৬ জানুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » মির্জাগঞ্জে ফেসবুক স্টাটাসকে কেন্দ্র ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষে আহত-১০
মির্জাগঞ্জে ফেসবুক স্টাটাসকে কেন্দ্র ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষে আহত-১০
পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: (১৩ মাঘ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৫৬মি.) পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে অছাত্র, বিবাহীত এমনকি সাবেক ছাত্রদল নেতাকে সভাপতি করে ইউনিয়ন কমিটি অনুমোদন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর জের ধরে গতকাল ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার উপজেলা ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের দু’গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেয়ায় এলাকায় থমথমে অবস্থা রয়েছে। এর আগে কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। স্টাটাসকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় পায়রাকুঞ্জ ফেরীঘাট এলাকায় উপজেলা ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ১০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছে।
আহতদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. মেহেদী হাসান রাতুল মৃধা, মনির হোসেন ও মো. আল আমিন ফকিরকে মির্জাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে এবং দীন মোহাম্মদ ও আনোয়ার হোসেনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মির্জাগঞ্জ উপজেলা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একাধীক নেতা-কমীরা জানায়, ১৪ জানুয়ারি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম জুয়েল ও সাধারন সম্পাদক মো. রাকিব মৃধা ৬ ইউনিয়নে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করে। প্রতি ইউনিয়নে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে কমিটিতে অছাত্র, বিবাহীতসহ সাবেক ছাত্রদলের নেতার নাম অর্ন্তভূক্ত করার অভিযোগ ওঠে। এমন অভিযোগ তুলে স্ট্যাটাস দেয়া হয় ফেসবুকে। স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কর্মী মো. আনোয়ার হোসেনের সাথে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিব মৃধার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ হয়। এতে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রাতুল, মনির হোসেন, মো. আনোয়ার হোসেন, দীন মোহাম্মদ ও আল আমিন আহত হয়। এ ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক গ্রুপ ৫০/৬০টি মোটরসাইকেল মহরা দিয়ে পায়রাকুঞ্জু ফেরিঘাট এলাকায় পৌছলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আহত মো. মেহেদী হাসান রাতুল জানান, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক মিলে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদনের নামে অছাত্র, বিবাহিত ও ছাত্রদল নেতার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। ৫নং কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়েন ছাত্রদলের সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. হেলাল সিকদারকে সভাপতি করা হয়েছে। এ ছাড়া ২নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নে অছাত্র মো. আল আমিনকে এবং ৩ নং আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নে এক সন্তানের জনক মো. জাহিদ হোসেনকে সভাপতি করা হয়েছে। এতে ছাত্রলীগের আদর্শ ধারনকারী ত্যাগী নেতা-কর্মীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম জুয়েল জানান, বিবাহিত, অছাত্র ও টাকার বিনিময় কমিটি দেয়ার অভিযোগ সত্য নয়। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান সিকদার ভাইয়ের সাথে মৌখিক আলোচনা করে অনুমতি স্বাপেক্ষে কমিটি দেয়া হয়েছে। পদ বঞ্চিত একটি মহলের ইন্দনে এমন অপবাদ দেয়া হচ্ছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ওমর ফারুক ভূইঞা বলেন, ইউনিয়ন কমিটি গঠনে সংগঠন পরিপন্থি কাজ করায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদকের সাথে আলাপ করে উপজেলা ছাত্রলীগের জড়িত নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়াও এ অগঠনতান্ত্রিক কর্মকান্ড ধামাচাপা দিতে সংঘর্ষে আহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম জুয়েলের মৌখিক আলোচনার বিষয়টি অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. হাসান সিকদার বলেন, ছাত্রদলের নেতা অন্তর্ভূক্তিসহ বিবাহিত, অছাত্র ও টাকার বিনিময় কমিটি দেয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনুমতি না নিয়েই তারা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে।