বৃহস্পতিবার ● ১ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গফরগাঁওয়ে অর্ধশতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পাওয়ায় তাদের অংশগ্রহন অনিশ্চিত
গফরগাঁওয়ে অর্ধশতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পাওয়ায় তাদের অংশগ্রহন অনিশ্চিত
ময়মনসিংহ অফিস :: (১৯ মাঘ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় দুপুর ১.৪৫মি.) ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী রাতভর অপেক্ষা করেও প্রবেশপত্র না পাওয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উপজেলার সাবেক জামায়াত নেতা ও রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফ আহমেদের ফাঁদে পড়ে শিক্ষার্থীদের কপালে পরীক্ষায় অংশগ্রহনের এ অনিশ্চিতার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার এক সপ্তাহ পূর্বে প্রবেশপত্র ও রেজিস্টেশনকার্ড পরীক্ষার্থীরা হাতে পাওয়ার কথা থাকলেও গফরগাঁও উপজেলার রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পেয়ে আগের দিন বুধবার রাতভর প্রবেশপত্র পাবার আশায় গফরগাঁও থানা ও বিদ্যালয়ে দৌড়ঝাঁপ করে। এ আতঙ্ক নিয়ে রাতভর দৌড়ঝাঁপ করায় পরীক্ষার কোন প্রস্তুতি নিতেও পারেনি। অনেকে দুঃচিন্তায় বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় অভিভাবকদেও সাথে নিয়ে রাত কাটায়। কিন্তু সর্বশেষ যতটুকু জানা গেছে (বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটি) এসব পরীক্ষার্থীরা অংশগ্রহনের সুযোগ পায়নি।
একটি সূত্র জানায়,গফরগাঁওয়ের রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফ আহমেদ নিজে উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৬ জনসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশতাধিক চলতি এসএসসি পরীক্ষার্থীর ফরম ফিলাপ করায় তার বিদ্যালয় থেকে। ফরম ফিলাপ বাবাদ প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নেন ২ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৬জন পরীক্ষার্থীসহ কোন পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র অজ্ঞাত কারণে আসেনি।
উথুরী গ্রামের শিক্ষার্থী মিম, জান্নাত, শামছুন্নাহার, স্বর্ণা, ধামাইল গ্রামের সজিব, হাজেরা ও ঝুমুর জানায়, উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াসমিন সুলতানা পপির মাধ্যমে রৌহা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করি। কিন্তু আমরা কেউ পরীক্ষার প্রবেশপত্র পাইনি। আমরা অনেক চেষ্টা করেও কোন শিক্ষককে খোঁজে পাচ্ছিনা। সকলেরই মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। আমরা নিরুপায় হয়ে ইউএনওর কাছে গেলে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।কিন্তু আমরা পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করতে পারলাম না। এ কথা বলে এসব পরীক্ষার্থীরা হাউ মাউ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এদিকে উথুরী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াসমিন সুলতানা পপির মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সেইসাথে রৌহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফ আহমেদের ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
গফরগাঁওয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, প্রতি বছরই ওই প্রধান শিক্ষক এই অপকর্মটা করে থাকেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. শামীম রহমান বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে পরীক্ষার আগের দিন রাতে প্রধান শিক্ষক মারুফ আহমেদ তার বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের হাতে লেখা প্রবেশপত্র ধরিয়ে দেন।২০১৭ সালে পরীক্ষার দুই ঘন্টা আগে প্রবেশপত্র হাতে পায় একই বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা। গত কয়েক বছর যাবত ওই প্রধান শিক্ষক এহেন অপকর্ম করে আসলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়ায় জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।