শনিবার ● ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » ঢাকা » “৩২ ধারা” বাতিলের দাবীতে বনপা একাংশের মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত
“৩২ ধারা” বাতিলের দাবীতে বনপা একাংশের মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত
ঢাকা প্রতিনিধি :: (২১ মাঘ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪.২৪মি.) “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮” খসড়ার কালো “৩২ ধারা” বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এ্যাসোসিয়েশন (বনপা) এর একাংশের সভাপতি সুভাষ সাহা ও মহাসচিব এ এইচ এম তারেক চৌধুরী নেতৃত্বে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
আজ ৩রা ফেব্রুয়ারী শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বনপা’র কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বনপা’র সভাপতি সুভাষ সাহা বলেন, আমরা বলতে চাই, আমরা গুপ্তচর নই, আমরা সাংবাদিক। দেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বিকল্প নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে বর্তমান সরকারের সহযোদ্ধা। তাই আমাদের জোর দাবী প্রস্তাবিত “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮” কালো ধারা ৩২ সহ ২৫, ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারা অবিলম্বে বাতিল করে এই আইন পাশ করা হোক। না হলে ডিজিটাল তথা অনলাইন সাংবাদিকতার অধিকার খর্ব হবে এবং স্বাধীন ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্থ হবে। এই ধারাগুলো সাংবাদিকতা বিরোধী ও গণবিরোধী বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এই আইন সংসদে পাস করা হলে সাংবাদিকরাই হবেন এর বড় শিকার। প্রভাবশালী, দুর্নীতিবাজ এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং পরিবেশন করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর ফলে সাংবাদিকতা, মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং জানার অধিকার ব্যাহত হবে। অবিলম্বে এই ধারাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে।
মানববন্ধনে বনপা’র একাংশের মহাসচিব এ এইচ এম তারেক চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার গত ২৯ জানুয়ারী ২০১৮ তারিখ মন্ত্রী পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮” খসড়ার চুড়ান্ত অনুমোদন দেয়। আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই। প্রস্তাবিত আইনের “৩২ ধারায়” বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে কোনো ধরনের গোপনীয় বা অতিগোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক অন্য কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে গোপনে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন তাহলে তা গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ বলে গণ্য হবে। এর জন্য ১৪ বছরের জেল ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়াও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়ার ২৫, ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় বিলুপ্তি ঘোষনাকৃত আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার অনুরূপ বক্তব্য যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। এই যুগে আমরাও ডিজিটাল আইন চাই। ডিজিটাল সাংবাদিকতার কন্ঠ রোধ করে এমন আইন চাই না। আমরা বনপা’র পক্ষ থেকে জোর দাবী জানাচ্ছি “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮” কালো ধারা ৩২ সহ ২৫, ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারা অবিলম্বে বাতিল করে এই আইন পাশ করা হোক। নাহলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার অধিকার হরন হবে। আমাদের দাবী বর্তমান সরকার অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য জাতীয় অনলাইন নীতিমালার খসড়া চুড়ান্ত করেছে, অবিলম্বে এই নীতিমালা জাতীয় সংসদে পাশ করা হোক এবং অনলাইন গণমাধ্যমের নিবন্ধন দেওয়া হোক। না হলে সারা দেশব্যাপী আরো কঠোর আন্দোলন করা হবে।
বক্তব্যে বলেন, আপনারা জানেন বহু আন্দোলন সংগ্রামের পরে বর্তমান সরকার জাতীয় অনলাইন নীতিমালা ২০১৭ চুড়ান্ত করেছে। অবিলম্বে নীতিমালাটি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে পাশ করা হোক এবং অবিলম্বে অনলাইন গণমাধ্যমগুলো বিনামূল্যে নিবন্ধন সহ সরকারী-বেসরকারী সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হোক। না হলে বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এ্যাসোসিয়েশন (বনপা) এর পক্ষ থেকে সারা দেশব্যাপী আরো কঠোর আন্দোলন করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এ্যাসোসিয়েশন (বনপা)’র একাংশের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ ফয়েজ আহমেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট বি এইচ বেলাল, কোষাধক্ষ্য মো. কবির হোসেন, যুগ্ন মহাসচিব এ কে এম মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম মাহমুদ রিয়াজ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জোহুরা পারভিন জয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কবির আহমেদ লিঞ্জু, আবদুল ওয়াহেদ, মো. মুরাদ, মো. মোস্তফা খান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, আবদুল মান্নান সাগর, তারিক হোসেন জনি ও মো. জিয়াউর রহমান শরিফ প্রমুখ।