মঙ্গলবার ● ৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » পানছড়িতে বিদ্যুৎ বিভাগের তিন কর্মচারী অপহরণ : ৪ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার
পানছড়িতে বিদ্যুৎ বিভাগের তিন কর্মচারী অপহরণ : ৪ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (২৪ মাঘ ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৫০মি.) পাহাড়ের উপজাতীয় সশস্ত্র সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর চাঁদার দাবিতে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে চরম স্থবিতরতা। নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত ১১জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। ফলে সোমবার ৫ই ফেব্রুয়ারী বিকেলে পানছড়ি ইউপিডিএফ’র চাঁদা সংগ্রহকারী একজনের মোবাইল নাম্বার ০১৮৩৭-৯২৭০২৪ উল্লেখ করে থানায় সাধারন ডায়েরি (জিডি) করেছে উপজেলা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবির। জিডি নং-১৯৫ তাং-০৫/০২/২০১৮ ইং।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পানছড়ি উপজেলায় বেশ কিছুদিন যাবত পাহাড়ের সশস্ত্র আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ’র পানছড়ির চাঁদা কালেক্টররা বিদ্যুৎ অফিস হতে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দেয়ায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার অক্ষয় মেম্বারপাড়া হতে বিদ্যুতের ফিডার বিগ্রেড পদে কর্মরত মো. ইমাম হোসেনসহ অপর দুই কর্মচারী মো. সুরুজ মিয়া ও হুমায়ুন কবির‘কে অপহরণ করে ইউপিডিএফ’র সশস্ত্র চাঁদাবাজরা। পরে গোয়েন্দা খবরের ভিত্তিতে পানছড়ির ৩বিজির’র টহলদল অভিযান চালিয়ে অপহরণের ৪ ঘন্টার মধ্যে অপহৃত কর্মচারিদের উদ্ধার করে।
সূত্র মতে আরো জানায়, অভিযানকালে বিজিবি টহলদলের উপস্থিতির টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়। পরে নায়েব সুবেদার মো. তবিবুর রহমান ৩ বিজিবি’র পানছড়ি জোন উদ্ধারকৃত কর্মচারীদের থানা পুলিশ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে আবাসিক প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবিরের নিকট অপহরণের শিকার তিন কর্মচারীকে হস্তান্তর করে।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পানছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর জানান, ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পানছড়ির অক্ষয় পাড়াস্থ রাজা চাকমার দোকানে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন বিচ্যুত করতে গেলে সশস্ত্র উপজাতীয় ইউপিডিএফের সদস্যরা ৩ কর্মচারীকে অপহরণ করে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে। পরে বিজির’র টহলদলের সহযোগিতায় কর্মচারীরা মুক্তি পায়। তবে এখনো সশস্ত্র ইউপিডিএফ’র চাঁদাবাজরা চাঁদার দাবিতে নানা ধরনের হুমকি প্রদান করে আসছে। যার ফলে পুরো উপজেলার দুর্গম এলাকায় অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, লাইনের ত্রুটি নির্ণয় ও মেরামত কার্যক্রমসহ স্বাভাবিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। সাধারন গ্রাহকরা ও পড়েছে চরম বিপাকে। কর্মচারীরা দুর্গম এলাকায় গিয়ে কাজ করার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনসহ জেলা বিদ্যুৎ প্রকৌশলীকে মৌখিকভাবে অবগত করা হয়েছে। তিনিও নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।
খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এম. এ জাফর বলেন, ‘ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন যাবত পানছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ হতে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করার বিষয়টি আমি অবগত। কিন্তু আমাদের পক্ষে চাঁদা দেয়া অসম্ভব! বর্তমানে কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে থানায় সাধারন ডায়েরি (জিডি) করার জন্য মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে’।
পানছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বিদ্যুৎ বিতরন বিভাগের তিনজন কর্মচারীকে অপহরণ ও উদ্ধার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম কমাতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।