বৃহস্পতিবার ● ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটিতে ৩দিন ব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার উদ্বোধন
রাঙামাটিতে ৩দিন ব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার উদ্বোধন
ষ্টাফ রিপোর্টার :: (৩ ফাল্গুন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.০২মি.) রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে নানামুখী ই-সেবার সাথে পরিচিত করতে এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে ই-সেবা প্রদানে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন এর উদ্যোগে শহরের কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার থেকে ৩দিন ব্যাপী ‘ডিজিটাল উদ্ভাবনী ও জেলা ব্র্যাডিং মেলা-২০১৮’ আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার শুভ উদ্বোধন করেন রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে গত এক দশকে বাংলাদেশে অনেক উন্নতি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা হয়তো জানেন দোয়েল ল্যাপটপ, পিপিলিকা, বিজয় - এগুলো বাংলাদেশী উদ্ভাবকরা উদ্ভাবন করেছেন। মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে এবং অচিরেই এই সংখ্যা বাড়বে।”
তিনি আরো বলেন, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডিজিটাল বাংলাদেশের উপযোগিতা এবং উপকারিতা অনেকে সেগুলো এখন উপভোগ করতে পারছে এবং সেগুলোকে ব্যবহার করতে পারছি।
এছাড়াও ই-সেবার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদনপত্র ও অনলাইনের ফি জমা দিতে পারছে। সবচাইতে বড় ব্যাপার হচ্ছে, চাইলেই অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় তাদের প্রয়োজন মত টাকা পয়সা সংগ্রহ করতে পারেন। এটাই ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল।
উপাচার্য প্রফেসর ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা বলেন, “আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেল্সের নাম শুনেছি। অনেকে টিভিতে আমরা সোফিয়ার সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কথা বলতেও দেখেছি। এগুলো হচ্ছে এক একটা ডিজিটাল উদ্ভাবনী। আমাদের বাংলাদেশে যারা আছেন তারাও অনেক উদ্ভাবন করেছেন। ইতোমধ্যে আমার সবচাইতে আশার বিষয় হচ্ছে, আমার সামনে যারা বসে আছেন তাদের মধ্যে অনেক প্রতিভা আছে।”
উপাচার্য নতুন প্রজন্মকে তাদের সুপ্ত প্রতিভাগুলোকে বিকাশ করে নিজের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশেকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে যে প্রজন্মের সাথে আছি নতুন প্রজন্ম, তাদেরকে বলা হচ্ছে লাকি জেনারেশন। ভবিষ্যতে তারাই বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে সোনার বাংলায় উন্নত দেশে উন্নীত করার জন্য কাজ করে যাবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, তোমাদের মাঝে যে সুপ্ত প্রতিভা আছে সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমরা সোনার বাংলাকে গড়ে তুলবো।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যে প্রাথমিক স্টেজগুলো আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো আমাদেরকে মানসিকভাবে এবং প্রাত্যাহিক জীবনে ডিজিটাল হতে হবে।
তিনি বলেন, “প্রযুক্তির মাধ্যমে জনসেবা সুন্দরভাবে কম সময়ে, কম খরচে মানুষের মধ্যে পৌছে দিতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন উদ্ভাবন। এই সেবা সমূহকে সহজ করার জন্য যে উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা সেগুলোকে এনকারেজ করার জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় এই ফেব্রুয়ারী মাসে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা শুরু হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “একই সাথে আমরা আরেকটি উদ্ভাবনী রেখেছি জেলা ব্যান্ডিং। আমাদের জেলা ব্র্যান্ডিং হলো কাপ্তাই লেক। কাপ্তাই লেককে কেন্দ্র করে এই জেলার সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কৃষি, সবকিছুই চলে আসছে দীর্ঘকাল যাবৎ। কাপ্তাই লেককে যদি আমরা যথাযথভাবে ব্যবহার করতে না পারি এটাকে যদি সংরক্ষণ করতে না পারি দূষণমুক্ত রাখতে না পারি তাহলে রাঙামাটির অর্থনীতি, রাঙামাটির সৌন্দর্য্য, রাঙামাটির সকল কিছু বিলীন হয়ে যাবে, হারিয়ে যাবে।
তিনি কাপ্তাই লেককে একটি অন্যতম সুন্দর এলাকা এবং পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সকলের প্রচেষ্ঠা ও সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি একই সাথে এই ডিজিটাল মেলার মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের তরুণ উদ্ভাবক যারা আছে তাদের উদ্ভাবনী প্রয়াস আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এইচ. কে. এম জাহাঙ্গীর হোসেন,জোন কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) মেজর মঈনুল হোসেন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস. এম. শফি কামাল।
এই ‘ডিজিটাল উদ্ভাবনী ও জেলা ব্র্যাডিং মেলা-২০১৮’ উপলক্ষে আজ সকাল ১০ ঘটিকায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য র্যালী শুরু হয়ে জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।