বৃহস্পতিবার ● ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » প্রবাসীকে কুপিয়ে নদীতে নিক্ষেপের ৫ মাস পর কঙ্কাল উদ্ধার
প্রবাসীকে কুপিয়ে নদীতে নিক্ষেপের ৫ মাস পর কঙ্কাল উদ্ধার
ময়মনসিংহ অফিস :: (৩ ফাল্গুন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.১২মি.) ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের পাঁচবাগ ইউনিয়নের যাওয়াইল গ্রামের সবুজ মিয়া (২৫) নামের এক প্রবাসীকে কুপিয়ে নদীতে নিক্ষেপের ৫ মাস পর মাথা, হাত-পা বিহীন কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে তেতুলিয়া এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে মাথা ও হাত ছাড়া ক্ষতবিক্ষত লাশের অংশ বিশেষ কঙ্কাল উদ্ধার করে থানা পুলিশ।পরে নিহত সবুজের স্বজন ও পুলিশ লাশের গায়ের কাপড় থেকে উদ্ধার হওয়া জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে সনাক্ত করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,নিহত সবুজ একই গ্রামের আলী নেওয়াজের কাছে বিদেশে যাওয়ার জন্য ১০ লাখ টাকা দেন। দীর্ঘদিনেও তাকে বিদেশে না পাঠাতে পারায় টাকা ফেরত চান সবুজ। এর জের ধরে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে আলী নেওয়াজ ও তার ভাড়াটে লোকজন তেতুলিয়া মড়লবাড়ি এলাকায় ইজিবাইক থেকে নামিয়ে সবুজকে দা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে মৃত ভেবে ব্রহ্মপুত্র নদে ফেলে দেয়।
এ ঘটনার পর তাকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল ও পুলিশ ব্যাপক তল্লাশী চালিয়ে কোথাও খুঁজে না পেয়ে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করে। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা সবুজের খোঁজে প্রায় প্রতিদিনেই ব্রহ্মপুত্র নদ পাশে বসে আহাজারি করতে থাকে। অবশেষে এসব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলের এক কিলোমিটার ভাটি থেকে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসমান অবস্থায় ৪ মাস ২৬ দিন পর সবুজের মরদেহ স্থানীয় লোকজন দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর পাঠায়।
পরে পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা মরদেহের সাথে থাকা মানিব্যাগ থেকে একটি সৌদি আরবের আকামা (পরিচয়পত্র), ৪টি বেদেশী নোট, দুটি পাঁচশত টাকার নোটসহ ১৩টি নোট উদ্ধার করে লাশটি সবুজের বলে সনাক্ত করে পুলিশ । এ সময় সবুজের মা মিনারা খাতুনের আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।
মরদেহ নদীতে ভাসতে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এডিশনাল এসপি আবু বকর সিদ্দিক, গফরগাঁও সার্কেলের এডিশনাল এসপি রায়হানুল ইসলাম ও গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. আব্দুল আহাদ খান।
প্রসঙ্গত এ ঘটনায় গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর রাতেই নিহত সবুজের বাবা শহীদুল্লাহ বাদী হয়ে পাঁচবাগ ইউপি সদস্য ঝিতু মিয়া, পালের বাজার গ্রামের জহিরুল, জয়নাল, ঝাওয়াইল গ্রামের আদম বেপারী আলী নেওয়াজ, সন্ত্রাসী সেলিম ও চৌকা গ্রামের মাজেদুলসহ ৬জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৬/৭ জনকে আসামী করে গফরগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই মামলার আসামী আলী নেওয়াজ ও স্বপনকে গ্রেফতার করা হলেও অল্প দিনের মধ্যেই জামিনে বের হয়ে আসে।
এদিকে সবুজের বাবা শহীদুল্লাহ অভিযোগ করে সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন, আসামীরা জামিন নিয়ে এসে মামলা তুলে নিতে অব্যাহত চাপ দিয়ে আসছে।
গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ আব্দুল আহাদ খান সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি নিয়মিত মামলা ছিল। ওই মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হবে।