মঙ্গলবার ● ৮ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » উখিয়ায় বৌদ্ধ শ্মশানে লাশ দাফনে বাঁধা : প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ১
উখিয়ায় বৌদ্ধ শ্মশানে লাশ দাফনে বাঁধা : প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ১
পলাশ বড়ুয়া::কক্সবাজারের উখিয়ায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শ্মশানে লাশ দাফনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুবৃত্তরা হামলা চালিয়েছে। তাদের হামলায় রন্টু বড়ুয়া (৩৫) নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়। মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখাঁ গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) হাবিবুর রহমান, ১৭ বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার বারেক, ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মিন্টু ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন জানান, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাঁপালং গ্রামের কেন্দ্রীয় প্রাচীন বৌদ্ধ মহাশ্মশানটি বৌদ্ধ সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে মৃতদেহ সমাধিস্থ করে আসছে। ইত্যবসরে তাদের প্রায় ৩ শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী শ্মশানটির উপর স্থানীয় ভুমি দস্যু জাফর মিয়ার পুত্র মাহমুদুল হকের লুলোপ দৃষ্টি পড়ে। এক পর্যায়ে শ্মশানের উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা নেওয়ার চেষ্টা করলে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন এতে বাঁধা প্রদান করেন। পরে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য স্থানীয় সাংসদ আব্দুর রহমান বদি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন সহ একাধিক বার বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা করেন এবং শ্মশানের চারদিকে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মানের পরামর্শ দেন। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন বৌদ্ধ মহাশ্মশানের পবিত্রতা রক্ষা করতে কোন মতেই শ্মশানের উপর দিয়ে যাতায়াতের রাস্তা যেতে দেবে না। তারপরও ভূমিদস্যু জালিয়াপালং ইউনিয়নের লম্বরী পাড়া গ্রামের মৃত মোখলেছ মিয়ার ছেলে জাফর আলম ও তার ছেলে মাহমুদুল হকের নেতৃত্বে মৃত আলী আহমদের ছেলে মোঃ খলিলুর রহমান, মোহাম্মদ আলমের ছেলে আজিজুল হক (২৫), দানু মিয়ার ছেলে মোঃ হেলাল (২৩) ও ইউছুপ আলী সহ ১০/১২ জনের একদল র্দুবৃত্ত গায়ের জোরে প্রভাব বিস্তার করে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শ্মশানের পবিত্রতা নষ্ট করে। এতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন উর্ধ্বতন প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা চালান। এত কিছুর পরও ভূমিদস্যুরা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শ্মশানের জায়গাটি জোর পূর্বক দখলে নিতে মরিয়া হয়ে গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় মৃত মেঘরাজ বড়–য়ার ছেলে শারদা বড়–য়ার মৃতদেহ সমাধিস্থ করতে গেলে উল্লেখিত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে মৃতদেহ দাফনে বাঁধা প্রদান করে।
এমনকি মৃতদেহ দাফনের যাবতীয় প্রস্তুতিও সম্পন্ন করার পরও মৃতদেহটি নিয়ে টাঁনা হেছড়া করে। এতে লাশটিকে অপমান করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ঘটনার পর পরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, ওসি তদন্ত হাবিবুর রহমান, বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার বারেক দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, কেউ অসৎ উদ্দেশ্যে সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিয়ে সম্প্রীতি নষ্টের পাঁয়তারা কিংবা ষড়যন্ত্র করা হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। উখিয়ার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে তুলতে চাইলে সকলের সহযোগিতায় তা প্রতিরোধ করা হবে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের মৃতদেহ সৎকারের স্থান এ শ্মশান। শ্মশানের পবিত্রতা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এটা নিয়ে কেউ বাড়াবাড়ি করলে তাকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।