সোমবার ● ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » গাজিপুর » দেশের জাতীয় নির্বাচন আরো সমৃদ্ধশালী হোক : প্রধানমন্ত্রী
দেশের জাতীয় নির্বাচন আরো সমৃদ্ধশালী হোক : প্রধানমন্ত্রী
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (৭ ফাল্গুন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.১৮মি.) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের সর্ব বৃহৎ শৃংখলা বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে। কাজেই আমাদের বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথেও এ বাহিনী সম্পৃক্ত রয়েছে। আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আপনাদের প্রতিটি সদস্যকে সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে। ভোটের অধিকার জনগণের মৌলিক অধিকার, সেটা যেন তারা যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পারেন, আমরা চাই আমাদের দেশের জাতীয় নির্বাচন আরো সমৃদ্ধশালী হোক, জনগণ তার সাংবিধানিক অধিকারটা যেন তারা প্রয়োগ করতে পারে সেই বিষয়টা যথাযথভাবে আপনাদের দৃষ্টি দিতে হবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা নেতৃত্বে এদেশে মানুষ যখন মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে তখন এ আনসার বাহিনীর ৪০ হাজার থ্রি নট থ্রি রাইফেল ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম অস্ত্র। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ বাহিনীর যে সকল শহীদ আত্মাহুতি দিয়ে গেছেন এবং তাঁদের যে অবদান সে অবদান জাতি চির দিন স্মরণ করবে।
তিনি ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৮তম জাতীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আনসার ও ভিডিপি একাডেমির ইয়াদ আলী প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন এবং আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন তাঁকে স্বাগত জানান। জাতীয় সংগীতের পর প্রধানমন্ত্রী একটি সবুজ রঙের খোলা জীপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শেখ পাশা হাবিব উদ্দিন এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন। সমবেত আনসারদের কুচকাওয়াজে সালাম ও অভিবাদন গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী সাহসিকতা ও সেবামূলক কাজে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের পদক পরিয়ে দেন। এরপর তিনি কেক কাটেন এবং আনসার সদস্যদের অংশগ্রহণে সচেতনতামূলক নাটিকা দেখেন ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে রচিত গান শোনেন। প্রধানমন্ত্রী আনসার সদস্যদের নির্মিত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের স্টলও পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সামসুল হক টুকু, জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, পুলিশের আইজিপি ডঃ মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারউজ্জামান, জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী আনসার ভিডিপির সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যখন বিএনপি জামায়াত জোট আগুন দিয়ে রেললাইন পুড়াচ্ছিল, রাস্তায় যাত্রীবাহী বাস পুড়িয়ে দিয়ে মানুষকে হত্যা করছিল তখন আপনারা বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিলেন, সেজন্য আপনাদের জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। তিনি বলেন, আপনারা একটি শৃংখলা বাহিনীর সদস্য, কাজেই যে কোন মূল্যে দেশের শান্তি শৃংখলা আপনাদের রক্ষা করতে হবে, তা আপনাদের পবিত্র দায়িত্ব। আর সেই সাথে সাথে আপনারা সঠিকভাবে চেইন অব কমান্ড মেনে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সব সময় সচেষ্ট থাকবেন সেটাই আমরা চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতিসম্প্রতি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সার্কেল এডজুটেন্ট, কোম্পানী কমান্ডার, বিভিন্ন পদবীর ব্যাটালিয়ন আনসার, কোয়াটার মাষ্টার এবং অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সর্বনিন্ম ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত আমরা ঝুঁকি ভাতা চালু করেছি। উপজেলা আনসার কোম্পানী কমান্ডার ও ইউনিয়ন আনসার কোম্পানী কমান্ডাদের যথাযথ ভাতা প্রদানের বিষয়টিও সরকার বিবেচনায় রেখেছে।
এ ছাড়া আনসার-ভিডিপি সদস্যদের কুটিরশিল্প পরিদর্শন ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ব্যাটালিয়ন সদরের অবকাঠামো প্রকল্প উদ্বোধন করেন।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও জাতীয় সমাবেশ উপলক্ষে গাজীপুরের সফিপুর আনসার-ভিডিপি একাডেমিকে সাজানো হয় বর্নিল সাজে।