রবিবার ● ৪ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » পাহাড়ে সেনা বাহিনীকে বিতর্কিত করতে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী তৎপর
পাহাড়ে সেনা বাহিনীকে বিতর্কিত করতে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী তৎপর
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (২০ ফাল্গুন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৩২মি.) পাহাড়ে শান্তি স্থাপন করতে গিয়ে সেনাবাহিনীর কর্মফল ভুলে যাওয়ার নয়। যে কোন দূর্যোগ পূর্ণ আবহাওয়া পরিবেশে নিজেদের জিবণ বিপন্ন করে পাহাড়বাসীর সেবা দিয়ে যাচ্ছে বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশ সেনা বাহিনী। যে কোন পরিস্থিতিতে সর্বোত্তম সংযত অবস্থায় আইনের মধ্যে থেকে পাহাড়িদেও সেবা দিয়েছে এই সংস্থার লোকজন। সেবা প্রদান করতে গিয়ে জিবণ দিয়েছে সেনা বাহিনীর অনেক পদস্থ কর্মকর্তাসহ সেনা সদস্যরা। তারপরও নিষ্টার সাথে দীর্ঘ দিন যাবৎ পাহাড়িদের নিরাপত্তার পাশাপাশি চিকিৎসা, বই ও উপবৃত্তি প্রদান, ঢেউটিন, কাপড়, খেলার সামগ্রীসহ নানা প্রকার সাহায্য সহযোগীতা দিয়ে দু-হাতে।
১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ২০বছরে দেখা যায়, ৬ মে ১৯৭৭ সাঙ্গু নদীতে কর্তব্যরত অবস্থায় আবদুল কাদিরসহ পাঁচ সেনাসদস্যকে হত্যা। ২৫ অক্টোবর ১৯৭৭ বান্দরবানে নিহত হন নায়েক আবদুল গণি মিয়া, নায়েক আবদুস সাত্তার, নায়েক আরিফ, সিপাহী লুৎফর রহমান, সিপাহী আলী হোসেন এবং সিপাহী আবদুল খালেক মুন্সি। ২ ফেব্র“য়ারি ১৯৭৯ সাঙ্গু নদীতে অ্যামবুশ, এক সেনা সদস্যকে হত্যা এবং প্রচুর গোলাবারুদ লুট। ৫ জুলাই ১৯৭৯ কাপ্তাই নতুন বাজার থেকে ২জন আনসার সদস্যকে অপহরণ করে হত্যা। ১৮সেপ্টেম্বর ১৯৭৯দীঘিনালায় নায়েক এসএম রুহুল আমিনকে হত্যা। ১৪ অক্টোবর ১৯৭৯ : খাগড়াছড়িতে পাঁচ সেনা সদস্যকে হত্যা। ১৯ ডিসেম্বর ১৯৭৯ লংগদু একই রাঁতে একযোগে কয়েকটি গ্রামে হামলা ২০বাঙ্গালীকে হত্যা, আহত ৪০, ১০৪টি বাড়ি অগ্নিদগ্ধ। ২৩ জানুয়ারি ১৯৮০খাগড়াছড়িতে তিন সেনা সদস্য খুন, আহত ৫। ২১ এপ্রিল ১৯৮০ ফালাউংপাড়া নামের একটি স্থানে অ্যামবুশ করে ১১রাইফেল ব্যাটালিয়নের ২০জন জওয়ানকে হত্যা, অস্ত্রশস্ত্র লুট। ১ মার্চ ১৯৮০ ঘন্টিছড়া নামের একটি স্থানে অ্যামবুশ করে হত্যা করা হয় মেজর মহসিন আলমসহ ২২জন সেনাসদস্যকে। ২৫ মার্চ ১৯৮০ কাউখালী বাঙ্গালি বসতিতে হামলা, দুই পক্ষে নিহত ২৯ আহত ১১ জন। ১৯ জুলাই ১৯৮৬ খাগড়াছড়িতে এক সেনাসদস্য নিহত আহত ৭ জন। ৭ আগস্ট ১৯৮৬ ২জন আনসার সদস্যকে অপহরণ করে হত্যা। ২১ জুন ১৯৮৭ নাড়াইছড়ির অদূরে অ্যামবুশ এর মাধ্যমে গুলি করে সেনা সদস্য আবদুর রাজ্জাক, ইসমাঈল হোসেন ও মোহনলালকে হত্যা। ২৪ নভেম্বর ১৯৮৭ শিলছড়িতে দুই সেনাসদস্যকে গুলি করে হত্যা। ১৬ এপ্রিল ১৯৯০ নাইক্ষ্যংছড়ি ও বলিপাড়া এ বছরই থানচিতে ১১ জন সেনা জওয়ানকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। ২৯ জুন ১৯৯২ মহালছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কে পাহারা চৌকির ওপর হামলা, দুজন সেনা সদস্য নিহত।
তারপরও সেনাবাহিনী আছে বলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা বাহিনীকে বিতর্কিত করতে বরাবরই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী সমূহ তৎপর রয়েছে। দীর্ঘ ৩ যুগের কাছাকাছি সময় ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করে আসছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইউপিডিএফ, ইউপিডিএফ, জেএসএস, জেএসএস লারমা, ইউপিডিএফ গনন্ত্রিক। পাহাড়বাসীর উপর যখনই এই সন্ত্রাসী গোষ্টির নির্যাতন রোধ কল্পে যখনই সেনা বাহিনী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করে ঠিক তখনই ঠিক সেই সময় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে নানা প্রকার মিথ্যার অভিযোগ দেশ বিদেশে মিথ্যা অপপ্রচার চালায়। একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ রটিয়ে সেনাবাহিনীকে তাদের কার্যক্রম থেকে দুরে রাখে। সন্ত্রাসীদের সাপোর্ট করে দেশের একটি সুশীল সমাজ নামধারী জ্ঞানপাপী মহল। যাদের পরোক্ষ সহযোগিতায় সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে একের পর মিথ্যাচার করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।
অপর দিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বর্তমানে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেনা বাহিনী নিয়ে অভিযোগের সত্যতা জানতে রাজনৈতিক শ্রেণীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যক্তিদের সাথে কথা বললে তারা জানান, সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীদের থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান বৃদ্ধি করলেই সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার শুরু করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।