

শনিবার ● ১০ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » সুবিধা নয় প্রিপেইড মিটারে অসুবিধার উন্নতি হয়েছে
সুবিধা নয় প্রিপেইড মিটারে অসুবিধার উন্নতি হয়েছে
সিলেট প্রতিনিধি :: (২৬ ফাল্গুন ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৪৯ মি.) সুবিধা নয় প্রিপেইড মিটারে অসুবিধার উন্নয়ন হয়েছে, বেড়েছে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ভোগান্তি। অথচ বিদ্যুৎ বিল নিয়ে হয়রানি আর নানা অনিয়ম দূর করতে দেশে প্রিপেইড মিটার বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। আর সেই উদ্যোগই এখন সিলেটের গ্রাহকদের ভোগান্তির অন্যতম কারন হয়ে দেখা দিয়েছে।
সুবিধার কথা মাথায় রেখে সিলেটে এই প্রিপেইড মিটার নিয়ে চলছে নানা অব্যবস্থাপনা। একদিকে মানহীন প্রিপেইড মিটার বসানো হচ্ছে, অন্যদিকে লোড বাড়াতে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গ্রাহকদের কাছ থেকে নিচ্ছে বাড়তি টাকা। এ নিয়ে সিলেটে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনাও। তাই বলা যায় সুবিধা নয় প্রিপেইড মিটারে অসুবিধার উন্নয়ন হয়েছে
জানা যায়, সম্প্রতি সিলেট মহানগরীর বাসা, বাড়ি ও বিভিন্ন মার্কেটে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার বসানোর কাজ শুরু হয়। পূর্বের পোস্টপেইড মিটার সরিয়ে নতুন প্রিপেইড মিটার বসাতে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের নেয়া হয়। কিন্তু মানহীন প্রিপেইড মিটার বসানোর ফলে শুরু থেকেই ভোগান্তি পোহাচ্ছেন গ্রাহকরা।
নগরীর কয়েকজন ভুক্তভোগী বিদ্যুৎ গ্রাহক জানান, তাদের বাসা-বাড়িতে প্রিপেইড মিটার বসানোর পর থেকেই যখন-তখন বন্ধ হয়ে যায় মিটার। বিদ্যুতের পর্যাপ্ত ইউনিট থাকলেও হুট করে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সংযোগ। এ সমস্যা নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হলে লোড বাড়ানোর কথা বলা হয়। কিন্তু লোড বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোন ফি ধার্য না থাকলেও বিদ্যুৎ বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন।
গ্রাহকদের অভিযোগ, টাকা দিয়ে লোড বাড়ানোর পরও প্রিপেইড মিটারের হুটহাট বন্ধ হয়ে যাওয়া থামছে না। লোড চার কিলোওয়াট বাড়ালে মিটারে দেখাচ্ছে দুই কিলোওয়াট। প্রিপেইড বিলে ‘বিবিধ’ নামে একটি শ্রেণিতে গ্রাহকদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া পর্যাপ্ত রিচার্জ সেন্টার না থাকায় গ্রাহকদেরকে মিটার রিচার্জ করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা গত বুধবার দুপুরে সিলেট নগরীর ১৬নং ওয়ার্ডে এক বিদ্যুৎ কর্মচারীকে আটকে রাখেন কাউন্সিলর কার্যালয়ে। খবর পেয়ে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এই নির্বাহী প্রকৌশলী পারভেজ আহমদ ঘটনাস্থলে যান।
এসময় গ্রাহকরা তার কাছে নানা অভিযোগ জানান। নির্বাহী প্রকৌশলী তাৎক্ষণিকভাবে কিছু গ্রাহকের সমস্যার সমাধান এবং বাকি সমস্যাগুলো পরবর্তীতে সমাধানের আশ্বাস দেন।
ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন বিদ্যুৎ গ্রাহক জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের শিপলু, দেলওয়ার, জুনেদ, প্রদীপ, নবাব নামের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রিপেইড মিটার বসাতে এবং লোড বাড়াতে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। এছাড়া কোন গ্রাহকের কতটুকু লোড প্রয়োজন, এটা জিজ্ঞেস না করেই কর্মচারীরা মিটার বসিয়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মুহিত জাবেদ বলেন, ‘প্রিপেইড মিটার বসানোর ক্ষেত্রে যদি জনপ্রতিনিধিদের সাহায্য নেয়া হত, তবে ঝামেলা হত না। গ্রাহকরা অভিযোগ নিয়ে আমাদের কাছে আসছেন, আমরা বিদ্যুৎ অফিসকে জানাচ্ছি। তারা যদি সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে গ্রাহকরা যেকোনভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারেন।’
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এই নির্বাহী প্রকৌশলী পারভেজ আহমদ বলেন, ‘লোড বাড়াতে টাকা নেয়ার কথা না। কেউ টাকা দাবি করলে গ্রাহক যেন না দেন। কারো মিটার বন্ধ হলে যতটুকু লোড প্রয়োজন আমরা দেব। বিদ্যুৎ বিভাগের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।