শুক্রবার ● ২৩ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » ফেরত যাচ্ছে আলীকদম ইউপি ভবন নির্মানের ৭৪ লক্ষ টাকা
ফেরত যাচ্ছে আলীকদম ইউপি ভবন নির্মানের ৭৪ লক্ষ টাকা
আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: (৯ চৈত্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৪১মি.) বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মানের ৭৪ লক্ষ টাকা ফেরত যাচ্ছে। পরিষদের নিজস্ব জমি রয়েছে চেয়ারম্যানের ভাইয়ের দখলেও ভবন নির্মানের জমি না থাকার অজুহাতে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার বিভাগের বরাদ্ধ দেওয়া এই ৭৪ লক্ষ টাকা কাজ না করেই ফেরত দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী শান্তনু ঘোষ সাগর। তিনি সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন, জমি পাওয়া না গেলে নিয়মানুযায়ী আগামী জুন নাগাদ এসব টাকা ফেরত যাবে। তবে এখনো জমি পাওয়া গেলে কাজ শুরু করা যেতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে আলীকদম উপজেলায় একই সাথে ১নং আলীকদম ইউনিয়ন পরিষদের আধুনিক মানের ভবন নির্মানের জন্য ৭৪ লক্ষ টাকা এবং ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের জন্য আরো ৭৪ লক্ষ টাকা করে বরাদ্ধ দেওয়া হয়। গত ১৫/০২/২০১৭ ইং তারিখ মেসার্স নজরুল কন্সট্রাকশনকে ভবন দুটি নির্মানের জন্য ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়। কিন্তু ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের নির্মান কাজ যথাসময়ে শুরু হলেও ১নং আলীকদম ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের নির্মান কাজ অদ্যবধি শুরু করা হয়নি এবং আগামী জুনে বরাদ্ধকৃত টাকা ফেরত যাবে। আগামী জুন মাসে ফাইলবন্দি হবে এসব টাকা। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে গত ২০১৭ সালের ৩রা মার্চ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং ভবন দুটির ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন। সেই সময় জন বিচ্ছিন্ন এলাকায় হওয়ায় প্রতিমন্ত্রী ভবনটি নির্মানের জন্য সহজ ও জনগনের সুবিধা হয় এমন জায়গা দেখে ভবনটির কাজ শুরু করতে বলেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন জমি না পাওয়ার অজুহাতে ভবন নির্মানের বিষয়টি চাপা দিয়ে রাখেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ২০১০ সালের ২৪ মার্চ রাতে আলীকদম বাজারে ভয়াবহ এক অগ্নিকান্ড সংগঠিত হয়। এতে আলীকদম বাজারের সিংহভাগ পুড়ে যায়। সেই সাথে আলীকদম বাজার সংলগ্ন ইউনিয়ন পরিষদের জমিতে স্থিত আলীকদমের তৎকালীন একমাত্র পাবলিক হলটিও পুড়ে যায়। পরবর্তী পাবলিক হল ও সংলগ্ন দোকান পাঠ সংস্কার করে ভাড়ায় দিয়ে আসছে সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জামাল উদ্দিন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের কোন জমি আমি ভাড়ায় দিই নাই। আমার পূর্ববর্তী চেয়ারম্যান দীর্ঘমেয়াদের চুক্তিতে এসব প্লটগুলো ভাড়ায় দিয়েছে। এছাড়া ভবন নির্মানের জন্য বিকল্প কোন জায়গা পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অংশেথোয়াই মার্মা সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব জায়গা থাকা সত্যেও পরিষদ ভবন নির্মান না হওয়া আমাদের জন্য লজ্জাজনক। চেয়ারম্যান হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য পরিষদের জায়গা ব্যবহার করে যাচ্ছে। আমরা চাই অত্র দ্রুত আলীকদম বাজার সংলগ্ন পরিষদের জায়গাটি উদ্ধার করে ভবনটি নির্মান করা হোক।
জানতে চাইলে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমিরুল কইসার সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন, যেহেতু আলীকদমে আমার কর্মকাল খুবই কম, সেহেতু এবিষয়ে আমার জানা নেই। তবে আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখবো এবং ভবনটি যেন অবশ্যই নির্মান হয় সেই চেষ্টা করব।