শনিবার ● ২৪ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » বিশ্বনাথের হাট-বাজারে পানের দাম আকাশচুম্বী
বিশ্বনাথের হাট-বাজারে পানের দাম আকাশচুম্বী
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (১০ চৈত্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.০০মি.) সিলেটের বিশ্বনাথ গ্রামাঞ্চলে ঘরে ঘরে ভাত কিংবা চা পানের পর পান-সুপারি খাওয়া দীর্ঘ দিনের সংস্কৃতি। সেই ঐতিহ্যকে লালন করে চলছে বিশ্বনাথে অঞ্চলের মানুষ। উপজেলা সদর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলে যে কোন বাড়িতে অতিথি আপ্যায়নে পান সুপারি অতি আবশ্যক উপকরণ। কিন্তু এই পানের মাত্রাতিরিক্ত দামের কারণে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা সাধারণ। পানের বাজারে আগুন হিমশিম খাচ্ছেন তারা। বর্তমানে পানের দাম এমন আকাশচুম্বী। কিছুদিন আগে যে পানের বিড়া ছিল ৬০-৭০ টাকা বর্তমানে সেই বিড়ার দাম ২০০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পান খেয়ে অভ্যস্ত, কিন্ত সস্প্রতি অতিরিক্ত দাম হওয়ায় অনেকেই কম খাচ্ছেন পান। অনাবৃষ্টিতে পানের উৎপাদন হ্রাস হওয়ায় ও সরবরাহ কমে যাওয়ায় উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে পানের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নিম্মে আয়ের লোকজনকে পান ক্রয় করে খাওয়ায় তাদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে উপজেলা সদরের পুরান বাজার ও নতুন বাজার ঘুরে জানাযায়, শ্রীমঙ্গল নিরালা পঞ্জি, লাউয়াচড়া থেকে উপজেলার সদরের বাজারগুলোতে পান সরবরাহ করা হয়। সপ্তাহে তিনদিন ৩০ বান্ডিল করে (প্রতি বান্ডিলে ২০০০ থেকে ২৫০০ বিড়া পান) সরবরাহ করা হত। উপজেলা সদর থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের হাট-বাজারগুলোতে খুচরা বিক্রেতারা পান কিনে নিতেন। গত কয়েকদিন ধরে পান হাট-বাজারগুলোতে সরবরাহ কমে হওয়ায় উপজেলায় পানের দাম অস্বাভাবিকভাবে মূল্য বৃদ্ধি বেড়ে গেছে। প্রতিদিন পান বিক্রেতা-ক্রেতাদের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে তাদের মধ্যে চলছে বাগবিতন্ডা। অনেকই বাজারে পানের দাম মূল্য বৃদ্ধি পেলে তা ক্রয় করছেন, আবার অনেকেই পান ক্রয় না করে চলে যেতে দেখা যায়। তবে সব চেয়ে হতদরিদ্র পরিবারগুলো পান ক্রয় করতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
উপজেলা সদরের নতুন বাজার পান ব্যবসায়ী নূর মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অনাবৃষ্টি কারণে পানের বরজে উৎপাদন অনেক কমে গেছে। ফলে পান চাষিরা বাজারগুলোতে চাহিদার চেয়ে অর্ধেক পান সরবরাহ দিচ্ছেন। তাও আবার চড়া দামে। যার ফলে উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে পানের দাম মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
পান ক্রয় করতে আসা দিনমজুর কালাম মিয়া বলেন, যে হারে পানের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে পান খাওয়ায় আমাদের মত লোকজন পক্ষে কষ্টকর হবে।
মুদি ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া বলেন, আগে যেখানে এক বিড়া পান ৬০ টাকা ক্রয় করেছি, এখনও তা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পান ক্রয় করতে এসে অনেকই হিমশিম খাচ্ছেন।
অটোরিকশা চালক নুরুল ইসলাম বলেন, সিলেটের লোকজন বেশি পান-সুপারির খেয়ে থাকেন। যার ফলে অন্যান্য জেলা থেকে আমাদের জেলা পানের সরবরাহ হয়ে থাকা বেশি। কিন্তু বর্তমানে যে হারে পানের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে পান খাওয়া বাদ দেয়ায় ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
থানার সামনে পান-সুপারির-সিগারেট বিক্রেতা আখতার আহমদ বলেন, পানের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে এখন ৭টাকা করে একটি পান বিক্রি করতে হচ্ছে।