শুক্রবার ● ৩০ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » নওগাঁর স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে সন্তান প্রসবের হার : বৃদ্ধি পাচ্ছে সেবার মান
নওগাঁর স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে সন্তান প্রসবের হার : বৃদ্ধি পাচ্ছে সেবার মান
নওগাঁ প্রতিনিধি :: (১৬ চৈত্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৪৮মি.) গত কয়েক বছরের তুলনায় নওগাঁর সেবাকেন্দ্রগুলোতে বেড়েছে প্রসবের হার। ক্রমান্বয়ে সেবার মান ও স্বচেতনতা বৃদ্ধির কারণেই এই হার বাড়ছে বলে অনেকের ধারণা। বাড়িতে প্রসবের ঝুঁকির বিষয়টি গ্রামীণ জনপদের মানুষ বুঝতে পারায় তারা এখন সেবাকেন্দ্র মুখি হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে গত তিন বছরের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে এই সব সেবাকেন্দ্রে প্রসবের হার।
সূত্রে জানা, জেলার সীমান্ত ঘেষা সাপাহার উপজেলার সেবা কেন্দ্রগুলোতে গত ৪ বছর আগেও তেমন কোন সিজারিয়ান বা নরমাল অপারেশন হতো না। কারণ গ্রামীন এই জনপদের মানুষ মনে করতো বাড়িতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে সন্তান প্রসব সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। কিন্তু যখন এভাবে প্রসব করতে গিয়ে মায়েদের অকাল মৃত্যুসহ বিভিন্ন অসুবিধা দেখতে পেল তারা ঠিক তখন থেকেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রমুখি হতে শুরু করে এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। এখন এমনও দিন আছে যেখানে দিনে ৩টি পর্যন্তও অপারেশন হয়।
সাপাহার উপজেলা সদরের ১ সন্তানের মা সফুরা বেগম জানান, তাদের গ্রামের বেশির ভাগ নারীরই সন্তান প্রসব হয়েছে নিজ বাড়িতেই। এতে করে অনেক সন্তান জন্মের পর প্রতিবন্ধী হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় মা মৃত্যুরও নজির আছে অনেক। তবে স্থানীয় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ কর্মীদের কাছ থেকে জেনে তিনি তার প্রসব করেছিলেন স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রে। বর্তমানে তিনি সুস্থ্য আছেন।
শুধু সাপাহারই নয় জেলার ১১ টি উপজেলার চিত্র অনেকটাই একই রকম। বিশেষ করে স্থানীয় কমিউনিটি রেডিও ‘বরেন্দ রেডিও’ গর্ভ ও মাতৃত্বকালীন স্বচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যাপক ভ’মিকা রেখে চলেছে। বিভিন্ন রকম ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ও চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান বাড়িতে বসেই নারীরা শুনে সচেতন হচ্ছেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই গ্রামীণ গর্ভবতি নারীদের সচেতনতা সৃষ্টিতে রেডিও অনুষ্ঠানের বাহিরেও উঠান বৈঠক ও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এসব অনুষ্ঠানে আর্থিক সহযোগীতা দিচ্ছে ইউকে এইড ও সার্বিক সহযোগীতায় আইপাস বাংলাদেশ ও বিএনএনআরসি।
এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোসাম্মৎ আরিফিন ইসলাম জানান, এক ঝাঁক তরুন মাঠ কর্মী গ্রামীণ জনপদের নারী-পুুরুষদের পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কিত সচেতনা সৃষ্টিতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বেশ কিছু বছর আগে সেবা কেন্দ্রগুলোতে যন্ত্রপাতি ও ঔষধের সমস্যা ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেসব সমস্যা কাটিয়ে ওঠার কারণে এখন মানুষ স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোর প্রতি অনেক বেশি আস্থাশীল। আমরা নিয়মিতই সেবা দিয়ে যাচ্ছি। শুধু মাত্র অপারেশন নয়; সন্তান প্রসবের পর যাবতিয় পরামর্শ ও সহযোগীতাও করা হয় এসব সেবা কেন্দ্র থেকে।
নওগাঁ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কুস্তরী আমিনা কুইন জানান, সরকার তথা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি যাতে করে একটি মা বা শিশুর কোন ক্ষতি না হয় সুস্থ্য মা সুস্থ শিশু এই মন্ত্র ধারন করে আামাদের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে তবে যেহেতু মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন তাই এখন আমরা ওয়ান স্টোপ সার্ভিসের দিকে এগুচ্ছি। যেখানে এক যায়গা থেকে অনেক সেবা পাওয়া যাবে।