শনিবার ● ৩১ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » চিতলমারীতে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ
চিতলমারীতে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ
এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট অফিস :: (১৭ চৈত্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৩৬মি.) বাগেরহাটের চিতলমারীতে সাংবাদিক পরিচয়ে টিটব বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। বহু অপকর্মের হোতা এ কথিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার সাংবাদিকরা তদন্তপুর্বক ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলার শান্তিপুর গ্রামের সুব্রত বৈদ্য জানান, তিনি কবিরাজি পেশার সাথে জড়িত। এলাকায় বিভিন্ন রোগ-ব্যধিতে লোকজনকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এ অবস্থায় উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত নিতাই বিশ্বাসের পুত্র টিটব বিশ্বাস নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তার কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবিকৃত এ টাকা দিতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় ভূঁয়া কবিরাজ বলে রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলে ভয় দেখায়। এ পরিস্থিতিতে সুব্রত বৈদ্য নিজের মান-সম্মানের কথা ভেবে এক প্রতিবেশির কাছ থেকে গত ২৫ মার্চ ধার-কর্য করে ১০ হাজার টাকা টিটব বিশ্বাসের হাতে তুলে দেন। এর পর আবারও পূনরায় চাঁদা দাবি করলে বিষয়টি তিনি গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান। এ সংবাদ পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন। এ ব্যপারে টিটব বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
চরবানিয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়াল জানান, টিটব বিশ্বাস তার স্বাক্ষর জাল করে জন্মসনদ তৈরি করে প্রতারণা করেছে। বিষয়টি তিনি ধরে ফেলায় টিটবকে তার ইউনিয়ন পরিষদের ভেতর আটকে রাখলে কৌশলে সে পালিয়ে আসে। সাংবাদিক পরিচয়ে নানা ধরণের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
দূর্গাপুর গ্রামের মনোজ রায় জানান, টিটব বিশ্বাস নিজেকে অনেক বড় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নিজের সব ধরণের ক্ষমতা আছে জানিয়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। টিটব একজন ভংঙ্কর প্রতারক বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
কুড়ালতলা গ্রামের অপহৃত শিশু বিশ্বজিতের পিতা বিনয় মজুমদার জানান, তার ছেলেকে অপহরণ করা হলে অপহরণকারীদের দাবিকৃত টাকা দিয়েও ছেলেকে ফেরৎ পাইনি। এ সময় টিটব বিশ্বাস নিজেকে একজন দক্ষ সাংবাদিক পরিচয় দাবী করে বিনয়কে জানান, পুলিশের সাথে তার ভালো সখ্যতা রয়েছে- তার ছেলেকে উদ্ধার করতে হলে পুলিশকে টাকা না দিলে উদ্ধার করা সম্ভব নয়। ছেলেকে ফিরে পেতে তিনি সুদে-কর্যে ২০ হাজার টাকা টিটবের হাতে তুলে দেন। পরে জানতে পারেন টিটব বিশ্বাস পুলিশকে এক পয়সাও না দিয়ে সে টাকা আত্মসাৎ করেছে সে।
স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ জানান, টিটব বিশ্বাস স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিসে ঝাড়–দার হিসেবে কাজ করত। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ পাওয়ায় তাকে ওই পত্রিকা অফিসের কাজ থেকে ইস্তফা দেয়া হয়। সাংবাদিকদের নাম ভাঙিয়ে তার বিরুদ্ধে যে চাঁদাবজির যে অভিযোগ পাওয়া গেছে, তা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সাংবাদিকবৃন্দ এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ বিষয়ে টিটব বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সুব্রত বৈদ্যের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার বাবদ নিয়ে ছিলেন, সে টাকা তিনি পরিশোধ করে দিয়েছেন। তারপরেও অযথা তার নামে সুব্রত বৈদ্য অভিযোগ করেছে- যা ভিত্তিহীন