সোমবার ● ২ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » গাজিপুর » গাজীপুরে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তালাবদ্ধ করে অধ্যক্ষ উধাও
গাজীপুরে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তালাবদ্ধ করে অধ্যক্ষ উধাও
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (১৯ চৈত্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৫৫মি.) গাজীপুর কিংস স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রবেশপত্র দেয়ার কথা বলে কর্তৃপক্ষ মোটা অংকের টাকা নিয়ে দুইদিন ধরে লাপাত্তা থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে স্কুল শাখার ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের তালাবদ্ধ রেখে কলেজ অধ্যক্ষ গতকাল ১ এপ্রিল রবিবার রাত থেকে উধাও হয়েছেন।
অভিভাবক রাশিদুল ইসলাম জানান, তার শ্যালিকা জেমি আক্তারসহ চারজন এবার কিংস কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা। তাদের মধ্যে একজন কসমিক কলেজ থেকে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে প্রবেশপত্র সরবরাহ করলেও অন্যদের কোনো প্রবেশপত্র দেয়নি। ফলে তারা আজ সোমবার শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি।
একই কথা বলেন স্থানীয় বাড়িয়া ইউপি মেম্বার মো. রাসেল ভূইয়া। তিনি জানান, দুইদিন আগে তার শ্যালক ওই কলেজের ছাত্র আবু বকর এবারই তার রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ। আবু বকর ও তার এক সহপাঠীর কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্র দেয়ার কথা বলে এক লাখ টাকা নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র আনার জন্য সর্বশেষ রবিবার রাতে তাদের দুইজনের কাছ থেকে পাঁচ হাজার করে ১০ হাজার টাকা নিয়ে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে উধাও হয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ দেওয়ান মাহমুদুল হাসান রাজন।
তাকে মোবাইল ফোন করলেও রিসিভ করছেন না। অনেক সময় মোবাইলটি বন্ধ করে রেখেছেন তিনি। সোমবার প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে অফিসে ও ক্লাসরুমে তালাবদ্ধ দেখতে পাই।
বাইরের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও অফিস বন্ধ দেখতে পেয়ে ফিরে গেছেন। হোস্টেলটির সুপার মোঃ ফরিদও চা পানের কথা বলে রবিবার রাতে উধাও হয়েছেন। সোমবার বিকেল পর্যন্ত তাদের কারও খোঁজ মিলেনি।
এ বিষয়ে হোস্টেল সুপার ফরিদুল ইসলাম জানান, তার এক আত্মীয়ের অসুখ থাকায় তিনি রাতে তালা আটকে চাবিটা তার বিছানার নিচে লুকিয়ে রেখে গেছেন। কিন্তু হোস্টেলে অবস্থানরত দুই পরীক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পেয়ে রাতে হোস্টেলের গেটে তালা দিয়ে চলে যায়। সোমবার সকালে কাজের বুয়া ওই তালা খুলে রান্না করে গেছেন।
ওই কলেজের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী অবনী সাহা জানায়, স্কুলে গিয়ে ক্লাসরুম ও অফিসে তালাবদ্ধ দেখে বাসায় ফিরে যাচ্ছি। সোমবার ক্লাস বন্ধ থাকার ব্যাপারে আমাদের আগে কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি।
অবনী সাহা আরও জানায়, তার মামা সঞ্জয় দাসেরও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হিসেবে সোমবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। তার কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্র সরবরাহের কথা বলে মোটা অংকের টাকা নিলেও তাকে প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি।
এদিকে, একাধিকবার অধ্যক্ষের ফোনে কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বিকেলে কল দিয়ে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ডঃ দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথা বলেন। পরে তদন্ত করে ঘটনা সঠিক হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।