বুধবার ● ১১ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » স্ত্রীকে ফাঁসাতে পাষন্ড বাবা নির্মমভাবে হত্যা করে ছেলেকে
স্ত্রীকে ফাঁসাতে পাষন্ড বাবা নির্মমভাবে হত্যা করে ছেলেকে
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :: (২৮ চৈত্র ১৪২৪ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১২.০৯মি.) ময়মনসিংহের নান্দাইলে স্ত্রীকে ফাঁসাতে এক পাষন্ড বাবা তার নিজের ছেলেকে প্রথমে বিলের পানিতে চুবিয়ে অজ্ঞান করে শেষে গলায় ছুরি চালিয়ে জবাই করে হত্যা করে। নিজের ছেলেকে নির্মম,নিষ্ঠুর ভাবে হত্যার প্রায় ৬ মাস পর ময়মনসিংহের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নয়ন চন্দ্র মোদকের আদালতে গতকাল সোমবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন দুলাল মিয়া (৩৮) নামে এক পাষন্ড বাবা। এরআগে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে নিজের ছেলেকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি।
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ও এই হত্যা মামলার রহস্য উৎঘাটনকারী তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) পরিমল চন্দ্র দাস ওই আসামির বরাত দিয়ে জানান, ২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবর তৃতীয় স্ত্রী ও তার স্বজনদের ফাঁসাতে নিজের ছেলে আব্দুল্লাহ সংগ্রাম (১৪)কে হত্যা করেন নান্দাইল উপজেলার সুন্দাইল গ্রামের দুলাল মিয়া।
ঘটনার সময় আসামি নিজের ছেলেকে বাড়ির পাশে বিলে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর বিলে নামিয়ে ছেলের ঘাড় ধরে পানির নিচে চেপে ধরে রাখে। মৃত্যু যন্ত্রণায় ধস্তাধস্তি সেইসাথে বাঁচার আকুতি জানালেও পাষন্ড বাবা ছাড়েনি তাকে। দেহ নিথর হওয়ার পর পানি থেকে তুলে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মৃতপ্রায় ছেলের গলায় ছুরি চালিয়ে জবাই করা হয়। পরে মরদেহ বিলে ফেলে রেখে পাষন্ড বাবা দুলাল মিয়া বাড়ি চলে যায়। এ ঘটনায় তৃতীয় স্ত্রী সুফিয়া, শ্যালক শহীদুল ও শহীদুলের ভগ্নিপতি মোকসেদকে আসামি করে নান্দাইল মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পরের দিন বিল থেকে সংগ্রামের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ডিবি এসআই পরিমল চন্দ্র দাস আরও জানান, রবিবার (৮ এপ্রিল ) বিকেলে দুলালকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গোয়েন্দা অফিসে রাতভর দুলালকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তিনি। একপর্যায়ে তৃতীয় স্ত্রী সুফিয়া ও তার স্বজনদের ফাঁসাতে নিজের ছেলেকে হত্যার বর্ণনা দেন দুলাল। দুলাল মিয়া তিনটি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। নিহত আব্দুল্লাহ সংগ্রাম (১৪) তার প্রথম স্ত্রী রেহেনার সন্তান এবং সে তার বাবা দুলাল মিয়ার সাথেই থাকতো। দুলাল মিয়া ও তার তৃতীয় স্ত্রী সুখিয়া আক্তারের বনিবানা হচ্ছিল না। ছেলেকে হত্যা করে স্ত্রী ও তার স্বজনদের এই মামলায় ফাঁসাতে চেয়েছিলো ধূর্ত দুলাল মিয়া।