বুধবার ● ১১ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » খাগড়াছড়িতে শুরু হয়েছে বৈসাবি উৎসব
খাগড়াছড়িতে শুরু হয়েছে বৈসাবি উৎসব
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (২৮ চৈত্র ১৪২৪ বাঙলা বাংলাদেশ সময় রাত ১০.১৫মি.) পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব বৈসাবিকে ঘিরে পুরো খাগড়াছড়ি জেলায় আনন্দের রং ছড়িয়ে পড়েছে। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব বৈসাবিকে বরণ করতে আজ বুধবার ১১ এপ্রিল খাগড়াছড়িতে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের উদ্যোগে সকালে পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণিল পোশাকে তরুণ -তরুণী ছাড়াও বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর নারী-পুরষের অংশগ্রহণ করেন র্যালিতে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে খাগড়াছড়ি টাউন হল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয় র্যালি। এর আগে পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে উদ্বোধন করা হয় দিনব্যাপী বৈসাবি উৎসবের। বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং ফিতা কেটে উৎসবের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. নুরুল আমিন।
এ সময় পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আলী আহন্মেদ খান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমাসহ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
হাজার হাজার পাহাড়ি-বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে র্যালিটি হয়ে উঠে সর্বস্তরের মানুষের মিলনমেলায়। পাহাড়িরা নিজস্ব পোশাক, বাদ্যযন্ত্র ও বিলুপ্তপ্রায় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নিয়ে নেচে, গেয়ে অংশ নেন আয়োজনে। বিভিন্ন বয়সী মারমাদের রঙিন ছাতায় পুরো র্যালি ছিল রঙিন। ত্রিপুরা কিশোর-কিশোরীদের ‘গরয়া নৃত্য’ ছিল বিশেষ আকর্ষণ। দৃষ্টি কাড়ে চাকমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশ নেওয়া নারী-পুরুষের স্বতঃস্ফূর্তটাও। এছাড়া বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে খাগড়াছড়ি সড়ক টাউন হল প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে আয়োজন করা হয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পানি উৎসব ও গড়িয়া নৃত্য।
ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিজু নামে এ উৎসব পালন করে। এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে বৈসাবি নামকরণ করা হয়।
এদিকে আগামীকাল বুধবার (১২ এপ্রিল) নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়িতে শুরু হবে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি। ঐদিন সকালে চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসানো হবে। ১৩ এপ্রিল চাকমা সম্প্রদায়ের মূল বিঝু আর পহেলা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা। ঐদিন ঘরে ঘরে চলবে অতিথি আপ্যায়ন। সেই সাথে সব বয়সী মানুষ নদী খাল অথবা ঝরনায় গঙ্গা দেবীর পূজা আরাধনা করবেন। ১৪ এপ্রিল পালিত হবে মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই ও পানি উৎসব ও বাংলা নববর্ষের র্যালি।
উল্লেখ্য ১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে বৈসাবি নামের এ উৎসব পালিত হয়ে আসছে।