সোমবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে ভাইস চেয়ারম্যান ও সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবীতে স্বারকলিপি
বিশ্বনাথে ভাইস চেয়ারম্যান ও সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবীতে স্বারকলিপি
বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীর ওপর বহিরাগত নিয়ে পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ নুর উদ্দিন কর্তৃক ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে ও হামলার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে রবিবার বেলা ১টায় উপজেলার সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার ব্যানারে মৌন মিছিল নিয়ে সহস্রাধিক মানুষ উপজেলা নির্বাহী অফিসারে মাধ্যমে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করেছেন৷
স্বারকলিপি প্রদানকালে বিভিন্ন ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধি ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণী বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন৷
স্বারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২৬শে নভেম্বর বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীর বক্তব্যের সময় একই পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ নুর উদ্দিন বাধা প্রদান করেন৷ এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান তার বক্তব্যকালে বাধা না দেওয়ার জন্য ভাইস চেয়ারম্যানকে আহবান জানান৷ ঠিক সেই মূহূর্তে ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ নুর উদ্দিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীর উপর আক্রমণ করে বসেন৷ এ সময় মূহূর্তের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যানের পক্ষে কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে চেয়ারম্যানের উপর ঝাপিয়ে পড়ে৷ তখন সমন্বয় সভার অনেকেই চেয়ারম্যানকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে তাদের অনেকেই আহত হন৷ এর মধ্যে অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিলু মিয়া অন্যতম৷ সেদিন হামলার ঘটনার সময় তাত্ক্ষণিকভাবে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এসে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের উপর হামলার ঘটনা এটা কারো বুঝতে বাকী নেই যে, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ নুর উদ্দিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনাটি ঘটিয়েছেন৷ ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী আক্রমণ করে বিশ্বনাথকে কলংকিত করেছে৷
স্বারকলিপিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, দেশের কোন উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় পরিষদের চেয়ারম্যানের উপর ভাইস চেয়ারম্যান ও তার পক্ষে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এমন ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা কোথাও ঘটেনি৷ আর তাই এই ঘটনা দেশবাসীর কাছে ও প্রবাসীদের কাছে ঐতিহ্যবাহী এই উপজেলাকে কলংকিত করেছে৷
স্বারকলিপিতে তারা দাবি করেন, এই ঘটনা উপজেলার মানুষের হৃদয়কে ব্যাথিত করেছে ব্যাপকভাবে এবং সেদিনকার সেই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ভবিষ্যতে বিশ্বনাথের ইতিহাসের কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে৷
সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত স্বারকলিপিতে বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীর পক্ষে প্রত্যাশা করে বলা হয়, সিলেটের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মহোদয় সরকারী বিধি মোতাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ নুর উদ্দিন ও তার পক্ষের বহিরাগতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করে নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন, যাহাতে ভবিষ্যতে দেশের কোথাও এভাবে কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে তার সহকর্মী নির্বাচিত প্রতিনিধির উপর উপজেলা পরিষদের কোন সভায় তারা সন্ত্রাসীদেরকে আইনের কাঠগড়ায় দাড় করিয়ে এমন প্রশাসনিক কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা প্রদান করতে হবে, যাহাতে আর কোন দূর্বর্ত্ত প্রশাসনের ভিতরে কোন সভায় কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটনোর দুঃসাহস না পায়৷ স্বারকলিপি প্রদান উপলক্ষে সকাল থেকেই বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে লোকজন মৌন মিছিল সহকারে আসতে থাকেন বিশ্বনাথের ঐতিহ্যবাহী রামসুন্দর অগ্রগামী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের ডাক বাংলো প্রাঙ্গনে৷ দুপুর পৌনে ১টায় তারা ব্যানার নিয়ে বিশাল একটি মৌন মিছিল সহকারে বিশ্বনাথ পুরান বাজার ও নতুন বাজার হয়ে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে এসে পৌছেন৷
এসময় উপজেলার কয়েকজন মুরব্বী দু’তলায় অবস্থিত বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আসাদুল হকের কার্যালয়ে গিয়ে তার মাধ্যমে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বারকলিপিটি প্রদান করেন৷ স্বারকলিপিটি প্রদানকালে ও মৌন মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ লিলু মিয়া, এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বী হাজী আবদুল বারী, আবুল কালাম কছির, আবদুল মন্নান, সিরাজ আলী, রজব আলী চেয়ারম্যান, আবদুল হাই, আবারক আলী মেম্বার, সৈয়দ আবদুর রাজ্জাক, তসিল খান, কলমদর আলী, চেরাগ আলী মেম্বার, এটি এম নূর উদ্দিন, আশিক আলী, আরব খান, মাহতাব উদ্দিন প্রমূখ৷ এসময় এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন৷
আপলোড : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : রাত : ১১.৪০মিঃ