শুক্রবার ● ২০ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » সুন্দরবনে ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু
সুন্দরবনে ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু
বাগেরহাট অফিস :: (৭ বৈশাখ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.২৫মি.) দুর্ঘটনার পাঁচদিন পর সুন্দরবনের মংলা বন্দরের পশুর নদীতে ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু করেছে মালিকপক্ষ।
আজ শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে স্থানীয় হোসেন স্যালভেজ নামক একটি প্রতিষ্ঠান ১৫ জন ডুবুরী দিয়ে ড্রেজারের মাধ্যমে পাম্প করে এ কয়লা উত্তোলন শুরু করে।প্রথমে পানির তোর বেশি থাকায় উত্তোলনের কাজ বন্ধ হয়ে যায় পরে পানির তোর কমলে কয়লা উত্তোলন শুরু হয় ।কয়লা উত্তোলন শেষ হলে শুরু হবে ডুবে যাওয়া লাইটারটির উত্তোলন কাজ।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার ওলিউল্লাহ জানান, স্থানীয় ডুবুরি প্রতিষ্ঠান ‘হোসেন স্যালভেজ’ এর ১৫ জন ডুবুরি দিয়ে ড্রেজারের মাধ্যমে পাম্প করে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয়েছে। কয়লা উত্তোলন শেষে ডুবুরিরা ভাটার সময় কার্গো জাহাজটির তলদেশে দুই পাশ থেকে ওয়্যার (মোটা তার) টেনে দেবেন। এরপর জোয়ার শুরু হলে দুই পাশে টাগবোট দিয়ে ডুবন্ত জাহাজ এমভি বিলাসকে টেনে নদীর কিনারে নিয়ে আসবেন।
ডুবুরি দলের প্রধান মো. সোহরাব হোসেন জানান,কয়লা উত্তোলনের কাজ শেষ করতে দুই থেকে তিন দিন লেগে যাবে । তিনি বলেন, ‘জাহাজটির অধিকাংশ কয়লা পাম্প করে বাল্কহেড রাখা হবে। কয়লা উত্তোলনের পর ডুবন্ত এম ভি বিলাস জাহাজটি উদ্ধার করা হবে।’
এদিকে ডুবে থাকা জাহাজটিতে থাকা কয়লা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সাহারা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক (অপারেশনস) লালন হাওলাদার জানান, উদ্ধার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে মালিক পক্ষের ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে ডুবে যায় তেলবাহী ট্যাংকার এম ভি ওটি সাউদার্ন স্টার সেভেন। ওই ট্যাংকারটি যেভাবে উত্তোলন করা হয়েছে ঠিক সেভাবেই উত্তোলন করা হবে কয়লাবাহী ডুবন্ত এই জাহাজটিকে।
সুন্দরবনের হারবাড়িয়া এলাকার ৬ নম্বর অ্যাংকোরেজে থাকা লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি অবজারভার’ ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিয়ে মংলা বন্দরে আসে। জাহাজটি থেকে রোববার (১৫ এমিল) ভোরে কয়লা নেওয়া হয় ঢাকার ইস্টার্ন ক্যারিয়ার ন্যাভিগেশনের মো. সোহেল আহম্মদের ‘এমভি বিলাস’ কার্গো জাহাজে। খুলনার দুলাল এন্টারপ্রাইজের জন্য ইট ভাটা ও সিরামিক কারখানাগুলোর জন্য আমদানি করা কয়লা নিয়ে তা রাজধানীর উদ্দেশে রওনা দেয়। কিছু দূর এগোলেই ডুবোচরে ধাক্কা লেগে তলা ফেটে এটি ডুবে যায়। এ সময় কার্গোতে থাকা সাত কর্মচারী সাঁতরে তীরে উঠে আসেন। ৭৭৫ টন কয়লা নিয়ে ডুবে যায় জাহাজটি।
সুন্দরবনের মধ্যে পশুর নদীতে লাইটার জাহাজ ডুবির ঘটনায় সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হবে তা নিরূপণ করতে এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বনবিভাগ।
অপরদিকে রবিবার দুপুরে কয়লার মালিকপক্ষে চট্টগ্রামের সাহারা এন্টারপ্রাইজের অপারেশন ম্যানেজার লালন হাওলাদার মংলা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডিতে তিনি দাবি করেছেন, দুর্ঘটনায় কোম্পানির ১ কোটি ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। একই সঙ্গে ডুবে যাওয়া লাইটার কার্গোর মাস্টার ফরিদ মিয়া দুর্ঘটনার কারণ উল্লেখ্ করে মংলা থানায় অপর একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।