শনিবার ● ২১ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » ইউপিডিএফের হুমকিতে নারী ও শিশুসহ শতশত মানুষ বাড়ি ছাড়া
ইউপিডিএফের হুমকিতে নারী ও শিশুসহ শতশত মানুষ বাড়ি ছাড়া
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (৮ বৈশাখ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সকাল ১০.৩০মি.) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বিভিন্ন ইউপিডিএফ (প্রসীত) গ্রুপের নির্যাতন, হামলা ও হুমকিতে জেএসএস (এমএন লারমা) গ্রুপের নেতকর্মী-সমর্থক,নারী ও শিশুসহ শতশত মানুষ বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
জানাযায়, ৫২ পরিবারের ১৩৩ জনকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে বাঘাইছড়ি সদরে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানাগেছে। আশ্রিতরা জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় বাসিন্দা। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রয়েছে। সন্ত্রাসীরা শুধু নিপীড়ন ও নির্যাতন করে ক্ষান্ত হয়নি, কেড়ে নিয়েছে মোবাইল ফোন ও টাকা পয়সা। পালিয়ে আসা উদ্বাস্ত পরিবারের সদস্যরা সন্ত্রাসী হামলা থেকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছে। গতকাল শুক্রবার (২০এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পালিয়ে আসা লোকজন জীবঙ্গছড়া কমিউনিটি সেন্টার এ সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন।
বাঘাইছড়ির বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে মোট ৫২ পরিবারের ১৩৩ জন সদস্য ভিটেছাড়া হয়ে মারিস্যাতে আশ্রয় নিয়েছেন উল্লেখ করে জেএসএস (এমএন লারমা) পন্থী বাঘাইছড়ি থানা কমিটির সভাপতি সুরেশ কান্তি চাকমা বলেন, ৩৬ পরিবার জীবঙ্গতলী কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে। বাকিরা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ইউপিডিএফের প্রাণনাশের হুমকির মুখে তিনি এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ভিটেমাটি ছাড়া জনগণ এখানে এসে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যারা আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে আছেন, দরিদ্র আত্মীয়রা দীর্ঘদিন তাদের ভরণপোষণ করতে পারছে না। যারা কমিউনিটি সেন্টারে আছেন তারা স্থানীয়দের সাহায্য সহযোগিতার কোনো মতে টিকে আছেন। বেশী সমস্যা হচ্ছে, নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে। তিনি অতিশীঘ্র এই অবস্থার নিরসনে প্রশাসনের সহায়তা চান।
এছাড়াও আরো জানা গেছে, পিসিজেএসএস সমর্থন করায় খাগড়াছড়ির মহালছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, মাটিরাঙা, গুইমারা ও রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার ২৫টির বেশী গ্রামের ৪৪ পরিবারকে বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। প্রাণনাশের ভয়ে গত ১৫ এপ্রিল পরিবার পরিজন নিয়ে উদ্বাস্তুর খাতায় নাম লিখাতে হয়েছে অনেককে।
দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় উদ্বাস্তু পরিবারের সদস্যদের মাঝে ত্রাণ ও মশারী বিতরণ করা হয়েছে।
ত্রাণ নিতে আসা আদর্শী তালুকদার বলেন, নিজেদের ঘর বাড়ি রেখে এখন পরিত্যক্ত ভবনের একটি কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাবারের সঙ্কটের পাশাপাশি গরমে অতিষ্ট হয়ে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সুনয়ন চাকমা নামে আরেকজন বলেন, জেএসএস সমর্থিত যুব সমিতির সাথে কাজ করায় আমাকে ও পরিবারের সদস্যদের জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে ইউপিডিএফর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এখন এলাকায় গেলে প্রাণনাশের ভয় আছে।
ইউপিডিএফ এই অভিযোগ অস্বিকার করেছে।
প্রসঙ্গত, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলো চলতি মাসের শুরু থেকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। একজন সমাজকর্মীসহ ৬ জনের প্রাণ গিয়েছে পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের হাতে।