রবিবার ● ২২ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » নিজের বাল্য বিবাহ নিজেই প্রতিরোধ করলো আখিঁ
নিজের বাল্য বিবাহ নিজেই প্রতিরোধ করলো আখিঁ
রাউজান প্রতিনিধি :: (১০ বৈশাখ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.০৯মি.) চট্টগ্রামের রাউজানে এক কিশোরীর বাল্য বিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। কদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল করিম ও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এ বিয়ে বন্ধ করা হয়।
বাল্য বিবাহের শিকার কিশোরীর নাম আয়েশা ছিদ্দিকা আখিঁ। বয়স ১৩ বছর ৬ মাস। সে উপজেলার ৮নং কদলপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের হরনাথ ছড়া এলাকার মো. বাবুলের মেয়ে। আয়েশা কদলপুর হামিদিয়া মাদরাসার নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
এবিষয়ে কদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল করিম মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আজ ২২ এপ্রিল রবিবার সকালে গোপনসুত্রে খবর পাই ৬নং ওয়ার্ডে একটি বাল্যবিবাহ হচ্ছে। তখন আমি সাথে সাথে ছুটে যায় মেয়েটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হামিদিয়া মাদরাসায়। সেখানে রেজিঃ খাতা দেখে দেখা যায় মেয়েটির বয়স মাত্র ১৩ বছর ৬মাস। তারপর মাদরাসা থেকে মেয়েটির লিখিত জন্ম তারিখ নিয়ে ওর বাড়িতে যায়। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বিয়ের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। সেখানে ওর মা-বাবার সাথে কথা বলি জানতে সে বাড়িতে নেই হাসপাতালে গেছে। আসার সময় মেয়েটির দেখা পায়। সেখান থেকে আমরা ওকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে এসে জানতে পারি তার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে তার মা-বাবা তাকে বাল্য বিয়ে দিচ্ছে। তারপর মেয়েটির থেকে জোড় করে বিয়ে দেয়ার হলফ নামা নিই।
তিনি আরো জানান, বাল্যবিবাহের শিকার মেয়েটি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল করিমকে অনুরোধ করেছে যেন উপজেলার প্রশাসনের সহায়তায় তার বিয়ে বন্ধ করে, সে যেন পুনরায় পড়াশোনার সুযোগ পায়। আয়েশা ছিদ্দিকা আখিঁ চেয়ারম্যান’কে অারো বলেন, আমার বিয়ের বয়স হয়নি। আমার পরিবারের লোকজন জোর করে আমাকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। আমি বিয়ে করতে চাই না আমি পড়া শোনা করতে চাই। আমার বাল্য বিবাহ আপনি ঠেকান।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম হোসেন রেজাকে অবহিত করা হলে তিনি মেয়েটির মা-বাবা’র কাছ থেকে ১৮ বছর আগে বিয়ে না দেয়ার মুচলেকা নিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেন। এবং উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় সে পড়াশোনা আবার শুরু করার তাগিদ দেন।
এ প্রসঙ্গে নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, রাউজান উপজেলা একটি বাল্যবিবাহ মুক্ত উপজেলা। এখানে আমরা কোন মেয়েকে বাল্যবিবাহের শিকার হতে দেব না। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা এই বিয়েটি বন্ধ করে দিই।
উল্লেখ্য, মেয়েটির সাথে বিয়ে ঠিক হয় পৌরসভার ৭ ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুরুল আমিনের ছেলে সাইফুল ইসলামের সাথে।